রাষ্ট্রদ্রোহ 'মামলা কাণ্ডে'র সেই ফিরোজ খানকে বিএনপি থেকে অব্যহতি
জাতীয় পতাকা অবমাননায় ইসকনের সংগঠক চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী এবং চট্টগ্রামের হিন্দু জাগরণ মঞ্চের সমন্বয়ক অজয় দত্তসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা ফিরোজ খানকে পদ থেকে অব্যাহতি দিয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। তিনি দলটির ৫নং মোহরা ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলেন। শুক্রবার (১ নভেম্বর) দলটির চান্দগাঁও থানা কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ আজম এবং ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মো. গিয়াস উদ্দিন ভূঁইয়ার স্বাক্ষরিত একটি পত্রে তথ্যটি নিশ্চিত করা হয়েছে।
ফিরোজ খানকে পাঠানো চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘আপনার বিরুদ্ধে দলের নীতি ও আদর্শ পরিপন্থী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে আপনাকে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল ৫নং মোহরা ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে অব্যাহতি প্রদান করা হল।’ চিঠিটির অনুলিপি চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহ ও সদস্য সচিব মো. নাজিমুর রহমানকেও পাঠানো হয়েছে।
সনাতন জাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র, ইসকনের সংগঠক ও চট্টগ্রামের পুণ্ডরীক ধামের অধ্যক্ষ চিন্ময় কৃষ্ণ দাশ ব্রহ্মচারীসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা হয়েছে। বুধবার রাতে চান্দগাঁওয়ের মোহরা এলাকার ফিরোজ খান নামে এক ব্যক্তি চট্টগ্রামের কোতোয়ালি থানায় এ মামলা করেন। মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে জাতীয় পতাকা অবমাননার মাধ্যমে রাষ্ট্রদোহের অভিযোগ এনেছেন ফিরোজ খান। চট্টগ্রামে নানা আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দিয়েছে এ মামলা। প্রশ্ন উঠেছে, কে এই ফিরোজ খান। মামলার নেপথ্যেই বা কী আছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ফিরোজ খান চট্টগ্রাম নগরের মোহরা ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক। তিনি উত্তর মোহরা সড়কের স্বরূপ খান চৌধুরী বাড়ির আব্দুল হালিমের ছেলে।
ফিরোজ বিএনপি নেতা বলে নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সচিব গণমাধ্যমকে বলেন নাজিমুর রহমান। তিনি বলেন, ফিরোজ ব্যক্তিগতভাবে মামলাটি করেছেন। মামলার বিষয়ে দলের সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে কোনো আলাপ করেননি। আমরা আজ (গতকাল বৃহস্পতিবার) সন্ধ্যায় বিষয়টি জানতে পেরেছি। এ বিষয়ে সিনিয়রদের সঙ্গে কথা বলে পরবর্তী করণীয় ঠিক করা হবে।
এর পরপরই শুক্রবার ফিরোজ খানকে পদ থেকে অব্যাহতি দিয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার কাজী মো. তারেক আজিজ সাংবাদিকদের জানান, দণ্ডবিধির ১২০(খ), ১২৪(ক), ১৫৩(ক), ১০৯ ও ৩৪ ধারায় মামলাটি করা হয়েছে। এরই মধ্যে দুই আসামি রাজেশ চৌধুরী ও হৃদয় দাশকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বুধবার সন্ধ্যায় নগরের সদরঘাট এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন হিন্দু জাগরণ মঞ্চ চট্টগ্রামের সমন্বয়ক অজয় দত্ত, ইসকন প্রবর্তকের অধ্যক্ষ লীলা রাজ ব্রক্ষচারী, গোপাল দাশ টিপু, ডা. কথক দাশ, প্রকৌশলী অমিত ধর, রনি দাশ, রাজীব দাশ, কৃঞ্চ কুমার দত্ত, জিকু চৌধুরী, নিউটন দে ববি, তুষার চক্রবর্তী রাজীব, মিথুন দে, রুপন ধর, রিমন দত্ত, সুকান্ত দাশ, বিশ্বজিৎ গুপ্ত, রাজেশ চৌধুরী ও হৃদয় দাস। এ ছাড়া অজ্ঞাতপরিচয় আসামি করা হয়েছে ১৫ থেকে ২০ জনকে।
এদিকে, মামলার বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত জানতে ফিরোজ খানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। তবে তার মোবাইল নম্বরে একাধিবার কল দিলেও সংযোগ পাওয়া যায়নি। হোয়াটসঅ্যাপে চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি।
নিউজটি পোস্ট করেছেনঃ এলএসবিডি/এনকেডি