নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার বাবুরাইল বউবাজার এলাকায় হাবিবুল্লাহ শিপলু (৪২) নামে এক ব্যক্তি, তার স্ত্রী ও শিশু সন্তানের মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনা চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, শিপলু প্রথমে তার স্ত্রী ও সন্তানকে শ্বাসরোধে হত্যা করে পরে নিজেই আত্মহত্যা করেন।
নিহতরা হলেন— হাবিবুল্লাহ শিপলু’র স্ত্রী মোহিনী আক্তার মীম (২৫) এবং তাদের চার বছরের ছেলে আফরান। নিহত হাবিবুল্লাহ শিপলুর গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার দাবিরন গ্রামে। পরিবারটি নারায়ণগঞ্জের বাবুরাইল বউবাজার এলাকার একটি সাততলা ভবনের চতুর্থ তলায় ভাড়া থাকে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সোমবার বিকেলে স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পেয়ে নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাছির উদ্দিন এবং পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. জামাল উদ্দিন ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে যান। সেখানে গিয়ে দেখা যায় ভাড়া বাসার দরজা ভেতর থেকে লক করা। পরে নিহতদের স্বজন এবং স্থানীয়দের উপস্থিতিতে দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে পুলিশ। ভেতরে প্রবেশের পর শিপলুকে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে গলায় ওড়না পেঁচানো অবস্থায় ঝুলতে দেখা যায়। অন্য একটি কক্ষে তার স্ত্রী মোহিনী আক্তার মীম এবং ছেলে আফরানকে বিছানায় অচেতন অবস্থায় পাওয়া যায়। তাদের দুজনের মুখের ওপর বালিশ চাপা দেওয়া ছিল।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও অপারেশন) তারেক আল মেহেদী জানান, নিহত শিপলু 'রমজান সমিতি' নামে একটি ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার ছিলেন। করোনা মহামারির সময় প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ হয়ে গেলে মালিক গ্রাহকদের অর্থ আত্মসাৎ করে গা ঢাকা দেন। এরপর ক্ষুব্ধ গ্রাহকরা শিপলুর বিরুদ্ধে মামলা করে এবং তাকে চাপ দিতে থাকেন। মানসিক চাপে ভুগে শিপলু হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েন।
নিহতের বড় ভাই অলিউল্লাহ লাভলু জানান, রোববার রাত থেকে শিপলু ও তার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন ছিল। সোমবার বিকেলে দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে দেখা যায় শিপলু সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ঝুলছেন এবং তার স্ত্রী ও সন্তানের মুখে বালিশ চাপা দেওয়া অবস্থায় রয়েছে।
নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাছির উদ্দিন বলেন, আমরা ঘটনাটি গুরুত্ব সহকারে দেখছি। এটি আত্মহত্যা নাকি পরিকল্পিত হত্যা— সবকিছু খতিয়ে দেখা হবে।