মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, গাজায় যুদ্ধবিরতি ‘সম্ভব’। ট্রাম্পের স্কটিশ গলফ রিসোর্টগুলোর একটিতে সোমবার যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের সঙ্গে দেখা করার সময় তিনি এ কথা বলেন। সেখানে তিনি দুই দিন গলফও খেলেছেন।
ডাউনিং স্ট্রিট জানিয়েছে, স্টারমার ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাতে গাজায় ‘অবর্ণনীয় দুর্ভোগ’ বন্ধের বিষয়ে চাপ প্রয়োগ করবেন ও অবরুদ্ধ ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে খাদ্যসংকট আরো তীব্র হওয়ায় ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে স্থগিত হওয়া যুদ্ধবিরতির আলোচনা ফের শুরু করার আহ্বান জানাবেন।
গাজায় কোনো দুর্ভিক্ষ অবস্থা নেই’—ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর এমন বক্তব্য সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে ট্রাম্প বলেন, ‘আমি জানি না। টেলিভিশনে যা দেখেছি তার ভিত্তিতে বলব, আমার তেমনটা মনে হয় না, কারণ ওই শিশুগুলোকে খুবই ক্ষুধার্ত দেখাচ্ছে।’
যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন পূর্ণাঙ্গ বাণিজ্য যুদ্ধ এড়ানোর এক ঐতিহাসিক চুক্তিতে পৌঁছানোর সময় ট্রাম্পের স্কটল্যান্ড সফরের তৃতীয় দিনে এ বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়।
স্টারমার ও ট্রাম্পের মধ্যে সম্প্রতি স্বাক্ষরিত যুক্তরাজ্য-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য চুক্তি কার্যকর করা নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা ছিল।
তবে ইউরোপজুড়ে গাজা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ ক্রমেই বাড়ছে, ফলে এটি আলোচনার কেন্দ্রে থাকার কথা ছিল। একই সঙ্গে ফ্রান্সের মতো স্টারমারও ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য ঘরোয়া চাপের মুখে পড়েছেন।
ট্রাম্প রবিবার জানান, যুক্তরাষ্ট্র গাজায় আরো সহায়তা পাঠাবে। তবে তিনি চান, অন্য দেশগুলোও এগিয়ে আসুক।
ইউরোপীয় কমিশনের প্রধান উরসুলা ভন ডার লায়েনের সঙ্গে বাণিজ্য আলোচনা শুরুর আগে তিনি বলেন, ‘এটি শুধু যুক্তরাষ্ট্রের সমস্যা নয়, এটি একটি আন্তর্জাতিক সংকট।’
তিনি হামাসের ওপর ত্রাণ আটকে দেওয়া ও আত্মসাৎ করার অভিযোগ এনে বলেন, ‘তারা খাবার চুরি করছে, অনেক কিছুই চুরি করছে। ত্রাণ পাঠানো হয়, তারা সেটা চুরি করে, তারপর বিক্রি করে দেয়।’
এরই মধ্যে সোমবার ইসরায়েল গাজার কিছু এলাকায় সাময়িক যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দেয় ও নিরাপদ ত্রাণপথ খুলে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পর খাদ্যবাহী ট্রাকগুলো ক্ষুধার্ত গাজাবাসীর কাছে পৌঁছাতে শুরু করে। তবে মানবিক সংস্থাগুলো সতর্ক করেছে, দুর্ভিক্ষ মোকাবেলায় এই সহায়তা যথেষ্ট নয়।
আরো অনেক বেশি ত্রাণ প্রয়োজন।
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস এই পরিস্থিতি মোকাবেলায় আন্তর্জাতিক উদ্যোগের আহ্বান জানান। তিনি জাতিসংঘের এক সম্মেলনে বলেন, ‘ক্ষুধা অস্থিরতা ডেকে আনে ও শান্তিকে দুর্বল করে। আমরা কখনোই ক্ষুধাকে যুদ্ধের অস্ত্র হিসেবে মেনে নিতে পারি না।’