ঢাকা
খ্রিস্টাব্দ

বিশ্ব নারী দিবস

নারী জেগে উঠুক নিজের শক্তিতে

দৈনিক লাল সবুজ বাংলাদেশ

স্টাফ রিপোর্টার | দৈনিক লাল সবুজ বাংলাদেশ
ঢাকা
রবিবার, ০৯ মার্চ ২০২৫, ১.১৪ পূর্বাহ্ন

আপডেট : রবিবার, ০৯ মার্চ ২০২৫, ১.১৪ পূর্বাহ্ন


নিউজটি দেখেছেনঃ 966942 জন

  • নিউজটি দেখেছেনঃ 966942 জন
নারী জেগে উঠুক নিজের শক্তিতে

নারীরা যুগে যুগে লাঞ্ছনা ও বঞ্চনার শিকার হয়ে এসেছে এবং এখনো হচ্ছে। অতীতে নারীরা বহু বছর ধরে পুরুষতান্ত্রিক সমাজের শৃঙ্খলে আবদ্ধ ছিল, নিজেদের স্বতন্ত্র সত্তার গুরুত্ব বুঝতেও তাদের দীর্ঘ সময় লেগেছে। অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য নারীদের এক দীর্ঘ সংগ্রামের মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে।


পৃথিবীর ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, মাত্র একশ বছর আগেও বাঙালি নারীদের অবস্থা অত্যন্ত শোচনীয় ছিল। শুধু বাংলাদেশেই নয়, বিশ্বের বহু দেশেই নারীরা অধিকারবঞ্চিত ছিল এবং এখনো নানা প্রতিকূলতার সম্মুখীন হচ্ছে। যদিও একবিংশ শতাব্দীতে এসে নারীরা সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে অংশগ্রহণের সুযোগ পাচ্ছে, তথাপি তারা আজও বৈষম্য, নির্যাতন ও শোষণের শিকার।



 

এভাবে শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে বঞ্চিত ও নিপীড়িতরা তাদের ন্যায্য অধিকার অর্জনের জন্য লড়াই করে এসেছে। বিংশ শতাব্দীতে এসে নারীরা তাদের দীর্ঘ নীরবতা ভেঙে অধিকার আদায়ের জন্য সোচ্চার হয়ে ওঠে, যার ফলে নারী দিবস পালনের ধারণার জন্ম হয়।


গত শতকের প্রথম ভাগে শ্রমজীবী মেহনতি নারীদের অধিকার আদায়ের আন্দোলন থেকেই নারী দিবসের সূচনা হয়। যা পরবর্তীতে জাতিসংঘ স্বীকৃত বাৎসরিক দিবস হিসাবে স্বীকৃতি লাভ করে। ঘটনাটি ১৯০৮ সালের। প্রায় ১৫ হাজার নারী নিউইয়র্কের রাস্তায় নেমে আসে, তারা কর্মঘণ্টা হ্রাস, মজুরি বৃদ্ধি ও ভোটাধিকার প্রদানের দাবিতে। যা ছিল এক অবিস্মরণীয় ঘটনা। মূলত এই আন্দোলনের মধ্যেই নারী দিবস পালনের বীজ নিহিত ছিল। এর পরের বছর অর্থাৎ ১৯০৯ সালে, সোশ্যালিস্ট পার্টি অব আমেরিকা প্রথমবারের মতো জাতীয় নারী দিবস পালনের ঘোষণা দেয়।


তবে এই দিবসকে আন্তর্জাতিক রূপ দেওয়ার চিন্তা প্রথম করেন জার্মান আইনজীবী ও সমাজকর্মী ক্লারা জেটকিন। ১৯১০ সালে কোপেনহেগেনে এক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে তিনি নারী দিবস পালনের প্রস্তাব রাখেন। ১৭টি দেশের ১০০ জন নারী তার এই প্রস্তাবে সম্মতি দেন। তবে সে সময় দিন তারিখ নির্দিষ্ট করা হয়নি। এরপরের ঘটিনাটি ১৯১৭ সালের। ঐতিহাসিক রুশ বিপ্লব। প্রথম বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন, রাশিয়ান নারীরা ‘রুটি ও শান্তি’র দাবিতে রাজপথে নেমে আসে, যা চলে চার দিন ধরে। এর ফলে রাশিয়ায় জার শাসনের অবসান ঘটে ও অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নারীদের ভোটের অধিকার মেনে নেন। ৮ মার্চ এই আন্দোলন শুরুর দিন ছিল, যা গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার অনুযায়ী চিহ্নিত হয়। পরবর্তীতে এই তারিখটিই আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসেবে স্বীকৃত হয়।


১৯১১ সালে প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালিত হয়েছিল অস্ট্রিয়া, ডেনমার্ক, জার্মানি ও সুইজারল্যান্ডে। তবে জাতিসংঘ ১৯৭৫ সালে এই দিবসকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেয় এবং উদযাপন শুরু করে। ১৯৯৬ সালে প্রথমবারের মতো নারী দিবসের জন্য একটি প্রতিপাদ্য নির্ধারিত হয়। ২০১১ সালে আন্তর্জাতিক নারী দিবসের শতবার্ষিকী পালিত হয়, যেখানে জাতিসংঘের প্রতিপাদ্য ছিল ‘অতীতের উদযাপন, ভবিষ্যৎ ঘিরে পরিকল্পনা।’


নারী দিবসের প্রতীকী রং হিসেবে বেগুনি বেছে নেওয়া হয়েছে, যা ন্যায়বিচার ও মর্যাদার প্রতীক। আন্তর্জাতিক নারী দিবসের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট অনুযায়ী, এই দিবসের তিনটি রং হল বেগুনি, সাদা ও সবুজ। এর মধ্যে বেগুনি ন্যায়বিচার ও মর্যাদা, সাদা পবিত্রতা এবং সবুজ আশা প্রকাশ করে।


 

দেশে দেশে নানা আয়োজনে পালিত হয় আন্তর্জাতিক নারী দিবস


বিশ্বব্যাপী নারী দিবস নানাভাবে উদযাপিত হয়। কিছু দেশে এই দিনে সরকারি ছুটিও দেওয়া হয়। রাশিয়ায় নারী দিবস উপলক্ষে ফুলের চাহিদা বেড়ে যায়। নারীদেরকে ‘লজ্জাবতী’ ফুল উপহার দেওয়ার রীতি রয়েছে ইতালিতে। চীনে নারীদের জন্য অর্ধ-দিবস ছুটি থাকে।  অন্যদিকে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে, পুরো মার্চ মাসটিকেই নারী ইতিহাস মাস হিসেবে পালন করা হয়, যেখানে নারীদের অবদান এবং অর্জনগুলোকে স্মরণ করা হয়।


নারী দিবস কেবলমাত্র একটি আনুষ্ঠানিক উদযাপনের দিন নয়, এটি নারীদের অধিকার ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠার সংগ্রামের প্রতীক। নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সকলেরই উচিত নারীদের প্রাপ্য সম্মান ও অধিকার নিশ্চিত করা। নারীদের নারী হিসেবে নয়, বরং একজন পূর্ণাঙ্গ মানুষ হিসেবে গণ্য করাই কাম্য।


নিউজটি পোস্ট করেছেনঃ এলএসবিডি/হেনা

কমেন্ট বক্স
বাংলাদেশ | জাতীয়
দৈনিক লাল সবুজ বাংলাদেশ

স্টাফ রিপোর্টার | দৈনিক লাল সবুজ বাংলাদেশ
ঢাকা
রবিবার, ০৯ মার্চ ২০২৫, ১.১৪ পূর্বাহ্ন
আপডেট : রবিবার, ০৯ মার্চ ২০২৫, ১.১৪ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ সংবাদ