চট্টগ্রাম ওয়াসার প্রায় দুই হাজার কোটি টাকার ভাণ্ডালজুড়ি পানি সরবরাহ প্রকল্প থেকে চিটাগাং ইউরিয়া ফার্টিলাইজার লিমিটেডকে (সিইউএফএল) পানি সরবরাহ দিয়ে প্রকল্পটির আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়েছে। একই সাথে নতুন প্রকল্প থেকে সিইউএফএল’র অভ্যন্তরে আরো একটি শিল্প কারখানাকে পানি সরবরাহ দিচ্ছে চট্টগ্রাম ওয়াসা। এছাড়া আরো বেশ কিছু শিল্প কারখানা কর্তৃপক্ষের সাথে পানি সরবরাহ দেয়ার জন্য ওয়াসার আলোচনা চলছে। একইসাথে সংযোগ প্রদান করা এক হাজার আবাসিক গ্রাহককে পানি সরবরাহ দেওয়া হবে বলে জানা গেছে।
জানা গেছে, বোয়ালখালীর শ্রীপুর-খরণদ্বীপ ইউনিয়নের জৈষ্ঠপুরা গ্রামে কর্ণফুলী নদীর পাড়ে এই প্রকল্পের জন্য পানি শোধনাগার তৈরি করা হয়। নদী থেকে পানি উত্তোলনের পর কর্ণফুলী নদীর বাম তীরে অবস্থিত শিল্পকারখানা ও আবাসিক এলাকায় পানি সরবরাহ করা হচ্ছে। দক্ষিণ কোরিয়ার ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান তাইইয়ং ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেড এ প্রকল্পের কাজ করেছে। প্রায় এক হাজার ৯৯৫ কোটি টাকা ব্যয়ে বাস্তবায়ন করা প্রকল্পটিতে দক্ষিণ কোরিয়ার এক্সিম ব্যাংক ও বাংলাদেশ সরকার যৌথ অর্থায়ন করেছে।
সূত্র জানায়, ওয়াসার সর্বশেষ বাস্তবায়নকৃত এই ভাণ্ডালজুড়ি পানি সরবরাহ প্রকল্পটি প্রায় তিনমাস আগে থেকে পানি সরবরাহ দিতে পুরোপুরি তৈরি হয়। কিন্তু চাহিদা অনুযায়ী গ্রাহক না পাওয়ায় এতদিন ধরে প্রকল্পটি চালু করা যায়নি। এরমধ্যে পানি সংযোগ নিতে কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ পাড়ে কর্ণফুলী ও আনোয়ারা উপজেলার শিল্পাঞ্চলে ম্যাজিস্ট্রেসি অভিযান চালায় ওয়াসা। সেখানে গভীর নলকূপের পরিবর্তে ওয়াসার পানি ব্যবহারের কথা বলে শিল্প কর্তৃপক্ষকে।
জানতে চাইলে প্রকল্প পরিচালক ও ওয়াসার তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মুহম্মদ মাহবুবুল আলম বলেন, জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে প্রকল্পটি পরীক্ষামূলকভাবে চালু করা হলেও চাহিদা কম থাকায় এক পর্যায়ে বন্ধ করে দিতে হয় উৎপাদন। চিটাগাং ইউরিয়া ফার্টিলাইজার লিমিটেডকে (সিইউএফএল) পানি সরবরাহ দিয়ে বাণিজ্যিকভাবে পানি সরবরাহ শুরু হয়। এছাড়া আরো বেশ কিছু শিল্প কারখানা কর্তৃপক্ষের সাথে পানি সরবরাহ দেয়ার জন্য আলোচনা চলছে। একইসাথে সংযোগ প্রদান করা এক হাজার আবাসিক গ্রাহককে পানি সরবরাহ দেওয়া হবে।
ওয়াসা সূত্র জানায়, কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ পাড়ের শিল্পকারখানা ও আবাসিক এলাকায় পানি সরবরাহ দিতে ২০১৯ সালে ভাণ্ডালজুড়ি পানি সরবরাহ প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। ২০২৪ সালের শেষের দিকে প্রকল্পের কাজ শেষ হয়েছে। এটির দৈনিক উৎপাদন ক্ষমতা ৬ কোটি লিটার। বোয়ালখালী, পটিয়া, কর্ণফুলী ও আনোয়ারায় গড়ে ওঠা বিভিন্ন আবাসিক এলাকা, সরকারি ও বেসরকারি শিল্পপ্রতিষ্ঠান, কোরিয়ান ইপিজেডসহ বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় পানি সরবরাহের জন্য ভাণ্ডালজুড়ি পানি সরবরাহ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হয়েছে।