ঢাকা
খ্রিস্টাব্দ

অনিরাপদ অপারেশন থিয়েটার ঝুঁকি বাড়াচ্ছে

দৈনিক লাল সবুজ বাংলাদেশ

নিজস্ব সংবাদদাতা | দৈনিক লাল সবুজ বাংলাদেশ
চট্টগ্রাম
সোমবার, ২১ জুলাই ২০২৫, ১.২৫ পূর্বাহ্ন

আপডেট : সোমবার, ২১ জুলাই ২০২৫, ১.২৫ পূর্বাহ্ন


নিউজটি দেখেছেনঃ 434008 জন

  • নিউজটি দেখেছেনঃ 434008 জন
অনিরাপদ অপারেশন থিয়েটার ঝুঁকি বাড়াচ্ছে

চট্টগ্রামে পটিয়া উপজেলার কোলাগাঁও ইউনিয়নের বাসিন্দা বিবি জয়নাব। জরায়ু টিউমার হলে বিশেষজ্ঞ গাইনির পরামর্শে তাকে অপারেশন করা হয়। কিন্তু অপারেশনের ১০ দিন পর ক্ষতস্থান থেকে পানি ও পুঁজ বের হয়। পরে চিকিৎসকের কাছে গেলে দেখা যায়, অপারেশনের স্থানে ইনফেকশন হয়েছে। ফলে তাকে আবারও অপারেশন করাতে হয়। এভাবে জীবাণুযুক্ত অপারেশন থিয়েটার (ওটি) থেকে রোগীদের নানানভাবে ইনফেকশন হচ্ছে।

নিজেদের অজান্তেই অনেক রোগী ইনফেকশন হয়ে আবারও নানা জটিলতার মুখোমুখি হতে হয়। ক্ষেত্রবিশেষ দ্বিতীয়বার অপারেশনেরও প্রয়োজন দেখা দিচ্ছে। ফলে অনিরাপদ অপারেশন থিয়েটার রোগীর ঝুঁকি বাড়াচ্ছে। চট্টগ্রামে প্রায় ৯৪টি বেসরকারি হাসপাতাল থাকলেও সবটিতে ওটি নেই। বিবি জয়নাবের স্বামী মো. নুরুল আবছার বলেন, ‘প্রথম অপারেশনের পর পুঁজ বের হলে আমরা চিকিৎসকের কাছে যাই। চিকিৎসক বললেন অপারেশন থিয়েটার থেকে এমন ইনফেকশন হতে পারে। তাই আবারও অপারেশন করাতে হয়। অপারেশন থিয়েটারটা যদি মানসম্মত রাখা হতো, তাহলে হয়তো আমাকে দ্বিতীয়বার অপারেশন করাতে হতো না।’


অভিযোগ আছে, নগরের বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে নিয়মিতই অপারেশন হয়। কিন্তু মানসম্মত ওটি আছে হাতে  গোনা কিছু হাসপাতালে। অধিকাংশ হাসপাতালের ওটিতেই প্রয়োজনীয় মান রক্ষা করা হয়নি। এগুলো চলছে যেনতেনভাবে। ফলে রোগীরা ইনফেকশনের শিকার হন। চমেক হাসপাতালের অ্যানেসথেসিয়া বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. হারুন উর রশিদ বলেন, ‘৫ দশমিক ১৩ থেকে ১৪ দশমিক ১৩ শতাংশের বেশি রোগীর অপারেশনের পর ইনফেকশন হলে তখন ওটির মান নিয়ে প্রশ্ন তোলা যায়। তবে এটি গবেষণার বিষয়। তাই একটি আদর্শ ওটির জন্য প্রায় ২০০ বর্গফুটের আয়তন, ভেন্টিলেশন ব্যবস্থা, কার্যকর অ্যানেসথেসিয়া মেশিন ও ওষুধ থাকা জরুরি। কিন্তু রোগী যদি আগে থেকেই জটিল রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকে, তখনো ইনফেকশন হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।’


মা ও শিশু হাসপাতালের আইসিইউ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মেহেদী হাসান বলেন, ‘অপারেশন থিয়েটার একটি সম্পূর্ণ নিরাপত্তাবেষ্টিত এরিয়া। এখানে সার্জন-নার্স ছাড়া অন্য কেউ ঢোকা উচিত নয়। বর্তমানে ওটি থেকেই রোগীদের নানা কারণে ইনফেকশন হচ্ছে। তাই প্রতিটি ওটিতে যন্ত্রপাতি জীবাণুমুক্ত করতে উন্নত অটোক্লেভ মেশিন এবং প্রয়োজনীয় বাতাস আসা-যাওয়া করতে হেফা ফিল্টার ব্যবস্থা থাকা উচিত। একই সঙ্গে ওটির সব ধরনের যন্ত্রপাতি নিয়মিতই চেকআপে রাখা, পর্যাপ্ত সময় পোস্ট অপারেটিভ রুমে রাখা, প্রয়োজনীয় সময়ের পরই স্বজনদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে দেওয়া এবং দেখা করার সময় জীবাণুমুক্ত পোশাক পরিধান করা।’


বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) একটি আদর্শিক অপারেশন থিয়েটারের জন্য কিছু মানদন্ড নির্ধারণ করেছে। এর মধ্যে আছে অপারেশন থিয়েটারের সঠিক নকশা ও নির্মাণ, শতভাগ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও জীবাণুমুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করা, কার্যকর জীবাণুনাশক ব্যবস্থা থাকা, সঠিক বায়ু পরিশ্রাবণ ব্যবস্থা ও নিয়মিত জীবাণুনাশক স্প্রে করা, পর্যাপ্ত আলো, বায়ু চলাচল ও তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ, প্রয়োজনীয়-কার্যকর যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জাম- যেমন অ্যানেসথেসিয়া মেশিন, মনিটরিং ডিভাইস, সার্জিক্যাল ইনস্ট্রুমেন্ট সঠিক ও কার্যকর অবস্থায় রাখা, এসব উপকরণ নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ ও পরীক্ষা করা, দক্ষ সার্জন ইত্যাদি।


নিউজটি পোস্ট করেছেনঃ এলএসবিডি/হেনা

কমেন্ট বক্স
বাংলাদেশ | জাতীয়
দৈনিক লাল সবুজ বাংলাদেশ

নিজস্ব সংবাদদাতা | দৈনিক লাল সবুজ বাংলাদেশ
চট্টগ্রাম
সোমবার, ২১ জুলাই ২০২৫, ১.২৫ পূর্বাহ্ন
আপডেট : সোমবার, ২১ জুলাই ২০২৫, ১.২৫ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ সংবাদ