ঢাকা
খ্রিস্টাব্দ

অর্থনৈতিক অঞ্চল, কারখানায় সন্ত্রাসী হামলায় জিরো টলারেন্স

অপরাধ দমন এবং প্রতিরোধে সরকার সর্বোচ্চ আন্তরিক

-বেজা ও বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী
দৈনিক লাল সবুজ বাংলাদেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক | দৈনিক লাল সবুজ বাংলাদেশ
ঢাকা
বুধবার, ২১ মে ২০২৫, ২.৩৫ পূর্বাহ্ন

আপডেট : বুধবার, ২১ মে ২০২৫, ৩.০৯ পূর্বাহ্ন


নিউজটি দেখেছেনঃ 644166 জন

  • নিউজটি দেখেছেনঃ 644166 জন
অপরাধ দমন এবং প্রতিরোধে সরকার সর্বোচ্চ আন্তরিক
ছবি- ইন্টারনেট।


চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে অবস্থিত জাতীয় বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে সোমবার (১৯ মে) একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ও উদ্বেগজনক ঘটনা ঘটেছে। সেখানে একটি রাজনৈতিক দলের পরিচয়ে কতিপয় স্থানীয় সন্ত্রাসী একটি কারখানায় জোরপূর্বক প্রবেশ করে চাঁদা দাবি করে এবং পরবর্তীতে কারখানার কর্মকর্তাদের মারধর করে। ঘটনার পরপরই সংশ্লিষ্ট কারখানার পক্ষ থেকে থানায় মামলা দায়ের করা হয়। মামলার ভিত্তিতে মঙ্গলবার (২০ মে) পুলিশ ইতোমধ্যে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে এবং বাকি আসামিদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রেখেছে।
সরকার এই ঘটনাকে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছে এবং স্পষ্টভাবে জানিয়েছে যে, দেশের অর্থনৈতিক অঞ্চল ও শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করা হবে। অপরাধ সংঘটনের সঙ্গে সঙ্গেই দোষীদের চিহ্নিত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে সরকার তার প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে তৎপরতার প্রমাণ দিয়েছে।


সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সন্ত্রাস দমন এবং বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ বজায় রাখতে বাংলাদেশ পুলিশসহ অন্যান্য নিরাপত্তা বাহিনীর সাথে সমন্বিতভাবে কাজ করা হচ্ছে। শিল্পাঞ্চল ও অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোতে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।


এ বিষয়ে বেজা ও বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী বলেন, “সন্ত্রাসীদের কোনো দল নেই। তারা কেবলই সমাজ ও অর্থনীতির শত্রু। দেশের সব রাজনৈতিক দলকে এ বিষয়ে দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখতে হবে এবং সহযোগিতা করতে হবে। আমরা বিশ্বাস করি, রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতৃত্ব এসব কার্যকলাপ সমর্থন করেন না। তাঁদের ইতিবাচক ভূমিকা ছাড়া দেশে টেকসই বিনিয়োগ পরিবেশ নিশ্চিত করা সম্ভব নয়।”


তিনি আরও বলেন, “আমরা বিনিয়োগকারীদের আশ্বস্ত করতে চাই যে, এই ধরনের অপরাধ দমন এবং ভবিষ্যতে প্রতিরোধে সরকার সর্বোচ্চ আন্তরিক ও প্রস্তুত।”


উল্লেখ্য, দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির চালিকাশক্তি হিসেবে অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোতে বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান বাড়ছে। এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা শুধু বিনিয়োগের পরিবেশ নষ্ট করে না, বরং দেশের ভাবমূর্তিকেও ক্ষতিগ্রস্ত করে।



আরো উল্লেখ থাকে যে, চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ের জাতীয় অর্থনৈতিক অঞ্চলের একটি শিল্প প্রতিষ্ঠান ‘বাংলাদেশ অটো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড কারখানা’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক বাদী হয়ে জোরারগঞ্জ থানায় চাঁদাবাজি ও হামলার ঘটনায় মামলা দায়ের করেন। উক্ত মামলায়- চট্টগ্রাম উত্তর জেলা যুবদলের যুগ্ম সম্পাদক মোঃ শওকত আকবর সোহাগকে মঙ্গলবার ( ২০ মে) গ্রেফতার করে জোরারগঞ্জ থানা পুলিশ। এছাড়া এই মামলায় তার সহযোগী ১১ জনের নাম উল্লেখ করে আরও অজ্ঞাতনামা ৮-১০ জনকে আসামি করে পেনাল কোড অনুযায়ী-১৪৩/৪৪৭/৪৪৮/৩২৩/৩২৪/৩২৫/৩০৭/৩৭৯/৩৮৫/৫০৬(২)/৩৪/১১৪ ধারাসমূহে জোরারগঞ্জ থানায় মামলা নম্বর- ৯, এবং তারিখ- ২০ মে ২০২৫ইং দায়ের করেন। মামলার অভিযোগ সূত্রে আরো জানা যায়, ঘটনা ঘটে গত ১৯ মে ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, বিকেল অনুমান ৫টার দিকে। জোরারগঞ্জ থানাধীন ৬নং ইছাখালী ইউনিয়নের মিরসরাই শিল্প জোনে অবস্থিত বাংলাদেশ অটো ইন্ডাস্ট্রিস লিমিটেড কারখানায় শওকত আকবর সোহাগের নেতৃত্বে ৮-১০টি মোটরসাইকেলযোগে প্রায় ২০ জন দুর্বৃত্ত প্রবেশ করে। তারা কারখানার জেনারেল ম্যানেজার হাসিবুল হাসান এর কাছে ২০ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করে। জেনারেল ম্যানেজার চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে অভিযুক্তরা তাকে, প্রজেক্ট ম্যানেজার আব্দুস সামাদ ও অন্যান্য কর্মচারীদের মারধর করে সাধারণ ও গুরুতর জখম করে। এ সময় হাসিবুল হাসানের পকেট থেকে ৫০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেওয়া হয় এবং চাঁদা না দিলে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়- বলে অভিযোগে উল্লেখ করেন।

তবে এই ঘটনায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে: সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দিনভর অনেকে গ্রেপ্তার হওয়া উত্তর জেলা যুবদলের যুগ্ম সম্পাদক শওকত আকবর সোহাগকে নির্দোষ দাবি করেন। তাদের মতে ঘটনার সূত্রপাত- চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ের শিল্পাঞ্চলে বেগম খালেদাজিয়া, তারেক রহমান ও বিএনপি কে নিয়ে বিরুপ মন্তব্য করায় সোহাগের সঙ্গে থাকা তার অনুসারীদের মধ্যে কারখানার লোকজনের সাথে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। বিএনপি আপাদমস্তক একটি মুর্খের দল এমন মন্তব্য করেন বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ অটো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড’র এক কর্মকর্তা। এমন মন্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ করে সংঘাতে জড়ান সোহাগ ও তার লোকজন। সংঘাতের ঘটনায় প্রতিষ্ঠানের ৩ উদ্ধত কর্মকর্তা আহত হন। ইন্ড্রাষ্ট্রি-তে ব্যবসায়িক কাজে মামলায় অভিযুক্তরা যায় বলেও অনেকে উল্লেখ করে এই ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করেন।


এনিয়ে একদিকে যেমন মামলার অভিযোগের আলোকে তদন্ত চলছে অপরদিকে অভিযুক্ত আসামীদের ধরতে পুলিশি অভিযান অব্যাহত আছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা যায়। বেজা তাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে- শিল্পাঞ্চল ও অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোতে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে উল্লেখ করেন।

জাতীয় বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল এলাকার তথা জোরারগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাব্বির মোহাম্মদ সেলিম গ্রেপ্তারের বিষয়ে জানিয়েছিল, “মিরসরাই শিল্প এলাকায় একটি প্রতিষ্ঠানে চাঁদাবাজি ও হামলা ঘটনার মামলায় সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে শওকত আকবর সোহাগকে গ্রেফতার করা হয়েছে।


নিউজটি পোস্ট করেছেনঃ এলএসবিডি/এনকেডি

কমেন্ট বক্স
বাংলাদেশ | জাতীয়
দৈনিক লাল সবুজ বাংলাদেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক | দৈনিক লাল সবুজ বাংলাদেশ
ঢাকা
বুধবার, ২১ মে ২০২৫, ২.৩৫ পূর্বাহ্ন
আপডেট : বুধবার, ২১ মে ২০২৫, ৩.০৯ পূর্বাহ্ন