ঢাকা
খ্রিস্টাব্দ

অসাধু সিন্ডিকেটের বেপরোয়া দাম: সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে বিদেশি ফল

দৈনিক লাল সবুজ বাংলাদেশ

স্টাফ রিপোর্টার :

আপডেট : বুধবার, ০৯ অক্টোবর ২০২৪, ১১.১১ পূর্বাহ্ন


নিউজটি দেখেছেনঃ 1714241 জন

  • নিউজটি দেখেছেনঃ 1714241 জন
অসাধু সিন্ডিকেটের বেপরোয়া দাম: সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে বিদেশি ফল
ছবি : সংগৃহীত

দুই বছর ধরে বিদেশি ফলের দাম বেড়ে যাওয়ার ফলে সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। রাজধানীর কাফরুলের বাসিন্দা মারুফ ইসলাম বলেন, “আগে আমাদের সকালে ও রাতে বিদেশি ফল খাওয়ার অভ্যাস ছিল, এখন তা খুব কমই হয়ে থাকে।”


এটি শুধু মারুফের সমস্যা নয়; দেশের প্রায় সব নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত পরিবারের অবস্থা একই। আপেল, আঙুর, খেজুর ও কমলার মতো ফলের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় ক্রেতারা এসব ফলের খাওয়ার পরিমাণ কমিয়ে দিয়েছেন, যার ফলে বিদেশি ফলের আমদানিও কমে গেছে।


খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন এবং মৃত্যুঝুঁকি

সাম্প্রতিক একটি গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফল কম খাওয়ার ফলে বাংলাদেশের মানুষের মৃত্যুঝুঁকি বাড়ছে। এনবিআর বিদেশি ফল আমদানির ওপর উচ্চ শুল্ক আরোপ করেছে, যার ফলে ফলের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। বিভিন্ন ধরনের ফলের শুল্কহার ১১৩.৮০ শতাংশ পর্যন্ত রয়েছে, এতে ভ্যাট, আয়কর এবং অন্যান্য শুল্ক অন্তর্ভুক্ত।


বর্তমানে কমলার দাম ২৮০ থেকে ৩৫০ টাকা, আঙুর ৩৯০ থেকে ৫৬০ টাকা, এবং খেজুরের দাম ৪৫০ থেকে এক হাজার ৮০০ টাকার মধ্যে রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, আপেলের প্রতি কেজির দাম ১৫৬ টাকা, কমলার ১৫১ টাকা, আঙুরের ১৮৮ টাকা, এবং খেজুরের ২৯০ টাকা।


অসাধু সিন্ডিকেটের কারসাজি

ব্যবসায়ীরা ডলারের দাম এবং উচ্চ শুল্ককে দায়ী করলেও, আসলে অসাধু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের কারসাজিই এই দাম বৃদ্ধির পেছনে রয়েছে। ফলের আমদানি ২৮ হাজার মেট্রিক টন কমেছে, যার মধ্যে আপেল, কমলা এবং খেজুরের আমদানি উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে।


পুষ্টির অভাব

ফল খেতে না পারার কারণে দেশের মানুষ পর্যাপ্ত পুষ্টি, ভিটামিন ও মিনারেল থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। আগারগাঁওয়ের বাসিন্দা মনির বলেন, “আমার পরিবারে বৃদ্ধ মা-বাবা ও ছোট শিশু রয়েছে, কিন্তু দাম শুনে কেনার সাহস করি না।”


পুষ্টিবিজ্ঞানীর উদ্বেগ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টি ও খাদ্যবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. খালেদা ইসলাম বলেন, “ফলে খাদ্যশক্তি ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা রয়েছে, যা শরীরের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”


ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণে পদক্ষেপ

ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের পরিচালক আব্দুল জলিল জানিয়েছেন, ফলের বাজার নিয়ন্ত্রণে দ্রুত অভিযান চালানো হবে। “ঢাকা শহরে প্রতিদিন আমাদের পাঁচ-ছয়টি টিম কাজ করছে,” বলেন তিনি।


সুতরাং, দেশে ফলের বাজারে স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরিয়ে আনার জন্য দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের প্রয়োজন রয়েছে।


নিউজটি পোস্ট করেছেনঃ এলএসবিডি/হেনা

কমেন্ট বক্স
দৈনিক লাল সবুজ বাংলাদেশ

স্টাফ রিপোর্টার :

আপডেট : বুধবার, ০৯ অক্টোবর ২০২৪, ১১.১১ পূর্বাহ্ন