বিএনপি চেয়ারপার্সন এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সর্বশেষ শারীরিক অবস্থার বিষয়ে খোঁজ নিতে বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) রাত সাড়ে ৮টার দিকে রাজধানীর গুলশান এলাকার তার বাসভবন ‘ফিরোজায়’ যান বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান।
সেনাপ্রধান তাঁর সহধর্মিণীসহ সেখানে উপস্থিত হলে, চেয়ারপার্সনের নিরাপত্তা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) ফজলে এলাহি আকবর তাদের স্বাগত জানান।
ফিরোজায় প্রায় ৪০ মিনিট অবস্থানকালে সেনাপ্রধান বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে তথ্য নেন এবং তার সুস্থতার জন্য দোয়া করেন।
বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান বলেন, ‘বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের খোঁজ নিতে এসেছিলেন তিনি। সেনাপ্রধানের সঙ্গে ওনার সহধর্মিণী বেগম সারাহনাজ কামালিকা রহমান ছিলেন। তারা প্রায় ৪০ মিনিট ছিলেন।’ শায়রুল কবির খান জানান, সেনাপ্রধান বাসভবনে পৌঁছালে মেজর জেনারেল (অব.) ফজলে এলাহি আকবর তাকে স্বাগত জানান।
ফজলে এলাহি আকবরকে উদ্ধৃত করে শায়রুল কবির জানান, ‘সেনাপ্রধান বলেছেন, বিএনপি চেয়ারপারসন সাবেক প্রধানমন্ত্রী যেন দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠেন, সেজন্য তিনি দোয়া করেছেন।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার সঙ্গে সেনাপ্রধানের সাক্ষাতের বিষয়টি রাজনীতিতে আগ্রহ সৃষ্টি করেছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা বিষয়টিকে ‘রাজনীতির ইতিহাসে বিরল ঘটনা’ ও ‘এই সময়ের জন্য ইতিবাচক’ বলে মনে করছেন। কোনও রাজনীতিকই উদ্ধৃত হতে সম্মতি দেননি, তাদের ভাষ্য— প্রাতিষ্ঠানিক কারণে বিষয়টি স্পর্শকাতর।
একাধিক দলের শীর্ষনেতা বলেছেন, রাজনীতির নিকট অতীতে সাবেক কোনও প্রধানমন্ত্রীর বাসায় সেনাপ্রধানের আগমনের বিষয়টি এই প্রথম। বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ে আলাপ করে জানা গেছে, সেনাপ্রধান বিএনপির চেয়ারপারসনের সুস্বাস্থ্য কামনা করেছেন।
গণতন্ত্র মঞ্চের প্রভাবশালী একজন নেতা বলেন, ‘এই ঘটনা ইতিবাচক বার্তা দেয়। দেশের রাজনীতিতে এ ধরনের ঘটনা বিরল।’ মূলত বৃহস্পতিবার সকালের দিকে সেনাপ্রধানের গুলশানে আসার বিষয়টি নিশ্চিত হয়। যদিও খালেদা জিয়ার সঙ্গে সেনাপ্রধানের চল্লিশ মিনিটের পুরো আলাপের বিষয়ে কিছু জানা যায়নি।
বিএনপির উচ্চপর্যায়ের সূত্র বলছে, আগামী কয়েকদিনের মধ্যে খালেদা জিয়া লন্ডনের উদ্দেশ্যে ঢাকা ত্যাগ করবেন যদিও দিনক্ষন চুড়ান্ত হয়নি এখনো। শারীরিক সুস্থতা থাকা সাপেক্ষে এই বিমানসফর শুরু করবেন তিনি। লন্ডন থেকে বেগম জিয়া আমেরিকায় যাবেন। চিকিৎসক, সহকারীসহ অন্তত ১৭-১৮ জনের একটি টিম খালেদা জিয়ার লন্ডন-সফরসঙ্গী হবেন।
বিদেশ যাওয়ার প্রাক্কালে খালেদা জিয়ার সঙ্গে সেনাপ্রধানের সাক্ষাৎটিকে ‘তাৎপর্যপূর্ণ’ বলে মন্তব্য করেন একাধিক রাজনীতিক।