জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) বাসভবন সংলগ্ন আনসার ব্যারাকের দুই বছরের বিদ্যুৎ বিল বকেয়া থাকায় সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে গেলে পল্লী বিদ্যুৎকর্মীকে বাঁশের খুঁটির সঙ্গে বেঁধে রাখার অভিযোগ উঠেছে। ইউএনও শেখ জাহিদ হাসান প্রিন্সের নির্দেশে গতকাল বৃহ্স্পতিবার দুপুরে ভুক্তভোগী কর্মচারীকে আনসার সদস্যরা বেঁধে রাখেন বলে অভিযোগ করেন তিনি।
তবে এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ইউএনও শেখ জাহিদ হাসান প্রিন্স। তার ভাষ্য, তিনি ছুটিতে রয়েছেন। এসবের কিছুই তিনি জানেন না।
ভুক্তভোগী ইকবাল হোসেন দেওয়ানগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের লাইন টেকনিশিয়ান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি বলেন, দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চত্বরের আবাসিক কোয়াটার বেলী-১, হাসনা হেনা-১ ও আনসার ব্যারাকের বিদ্যুৎ বিল গত দুই বছর ধরে বকেয়া রয়েছে। পল্লী বিদ্যুতের দেওয়ানগঞ্জ জোনাল অফিসের এজিএম মো. শেখ ফরিদের নির্দেশে আমিসহ দুইজন বকেয়া বিলের জন্য ঘটনাস্থলে যাই।
এ সময় দায়িত্বশীল কাউকে না পেয়ে এজিএম স্যারকে বিষয়টি জানাই। পরে তিনি সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার নির্দেশ দেন। আমরা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করার বিষয়টি উপস্থিত আনসার সদস্যদের জানালে তারা ইউএনওকে ফোন করে জানান। এরপর ইউএনও স্যার আমার সঙ্গে কথা বলেন।
তিনি জানতে চান কার নির্দেশে আমরা ওখানে গিয়েছি। এরপর আমাদের এজিএম স্যারের কথা জানিয়ে আনসার সদস্যদের মোবাইলটি দিয়ে দেই। তখন আনসার সদস্যরা আমাকে বারান্দার বাঁশের খুঁটির সঙ্গে বেঁধে রাখেন। পরে ১৫/২০ মিনিট পর আমাকে ছেড়ে দেয়। তিনি আরো বলেন, এ ঘটনার প্রতিবাদে রাতে কয়েক ঘণ্টা তিন উপজেলার বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ রাখা হয়।
দেওয়ানগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ জোনাল অফিসের এজিএম মো. শেখ ফরিদ মোবাইল ফোনে বলেন, ‘বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। কর্তৃপক্ষ জেলা প্রশাসকের সঙ্গে কথা বলেছেন। তিনি বিষয়টি সমঝোতার জন্য আগামী রবিবার পর্যন্ত সময় নিয়েছেন। তাই আমরা আপাতত কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছি না। তবে পল্লী বিদ্যুতের ডিজিএম ইয়াহিয়া সিদ্দিক বলেন, বেঁধে রাখার বিষয়টি দুঃখজনক। তবে বিষয়টি সমঝোতা হয়ে গেছে, আমাদের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ নেই।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ জাহিদ হাসান প্রিন্স বলেন, আমি ছুটিতে ছিলাম। সেখানে কী ঘটেছে আমি জানি না। তবে শুনেছি তারা এসে আমাকে গালাগালি করেছে। তারা বলেছে ইউএনও হয়েছে তো কী হয়েছে, তার লাইন কাটা যাবে না? এ নিয়ে সেখানকার কর্তব্যরত আনসারদের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয় এবং এক পর্যায়ে তারা উত্তেজিত হয়ে কিছুক্ষণ আটকে রাখে। এ ঘটনায় আমার কোনো হাত নেই। পল্লী বিদ্যুতের ওই কর্মচারী পরিকল্পিতভাবে আমাকে ঘটনার সঙ্গে জড়াচ্ছে।