ঢাকা
খ্রিস্টাব্দ

পাহাড়ি তরুণী চীনে পাচার: চক্রের হোতা চাকমা নারীর বিরুদ্ধে মামলা

দৈনিক লাল সবুজ বাংলাদেশ


আপডেট : বুধবার, ০৯ অক্টোবর ২০২৪, ১১.১১ পূর্বাহ্ন


নিউজটি দেখেছেনঃ 1896540 জন

  • নিউজটি দেখেছেনঃ 1896540 জন
পাহাড়ি তরুণী চীনে পাচার: চক্রের হোতা চাকমা নারীর বিরুদ্ধে মামলা
ছবি : সংগৃহীত

চীনে পাহাড়ি তরুণী পাচারের অভিযোগে রাঙামাটিতে মানব পাচার দমন আইনে মামলা হয়েছে। পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে বিয়ের নামে চীনে পাহাড়ি তরুণী পাচারের অভিযোগ বেশ কয়েক বছর ধরে শোনা যাচ্ছিল। বিভিন্ন অভিযোগের তথ্য অনুযায়ী এ পর্যন্ত পাঁচ হাজারের বেশি পাহাড়ি নারীকে দেশটিতে পাচার করা হয়েছে।


একাধিক সূত্রে পাওয়া তথ্যমতে, বাংলাদেশি ৩-৫ লাখ টাকার বিনিময়ে চীনা নাগরিকের সঙ্গে বিয়ের নামে তাদের পাচার করা হলেও বেশিরভাগ তরুণীকে পতিতালয়ে বিক্রি করা হয়। চীনে যাওয়ার পর নির্যাতনের শিকার হলেও অনেকে ইচ্ছা করলেও দেশে ফিরতে পারছেন না। এমন তথ্য জানা গেলেও এতদিন কোথাও মামলা বা লিখিত অভিযোগের তেমন তথ্য পাওয়া যায়নি।


এবারই প্রথম এমন অভিযোগে রাঙামাটির নানিয়ারচর থানায় ভুক্তভোগী পরিবার মামলা করেছে।


পুলিশ জানায়, ১ মে নানিয়ারচর থানায় মানব পাচার দমন আইনে ওই মামলায় ৭ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও কয়েকজনকে আসামি করা হয়েছে। অভিযুক্ত ৭ জনের মধ্যে ৬ জনই পাহাড়ি নারী ও পুরুষ অপর আসামি বাঙালি। প্রধান আসামি রিকা চাকমা খাগড়াছড়ির দীঘিনালা সদর ইউনিয়নের রাঙাপানিছড়ার চন্দ্রজিৎ চাকমার মেয়ে। ইতোমধ্যে মামলার তদন্ত শুরু হয়েছে এবং আসামিদের গ্রেফতারসহ ভুক্তভোগী তরুণীকে উদ্ধারে অভিযান চলছে বলে জানান নানিয়ারচর থানার ওসি ও তদন্ত কর্মকর্তা আজম উদ্দিন মাহমুদ।


মামলা সূত্রে জানা যায়, বাদীর ভুক্তভোগী বোনকে কিছুদিন আগে প্রধান আসামি রিকার নেতৃত্বে পাচারকারীরা নার্সিং প্রশিক্ষণের কথা বলে ঢাকায় নিয়ে এক চীনা নাগরিকের সঙ্গে বিয়েতে বাধ্য করে। এ সময় চীনা নাগরিকের সঙ্গে আপত্তিকর ছবি তুলতেও বাধ্য করা হয়। এ অবস্থায় যে কোনো সময় তার বোনকে চীনে পাচার করা হতে পারে বলে মামলায় উল্লেখ করেন বাদী।


এদিকে ফেসবুকে রিকা চাকমার একের পর এক কুরুচিপূর্ণ ভিডিও, পুরো চাকমা জাতিকে হেয় করে প্রকাশ্য চ্যালেঞ্জ জানানোসহ তার বিপুল অর্থের অহংকার দেখে রীতিমতো অবাক আত্মীয়স্বজন ও এলাকার মানুষ।


জানা যায়, রিকা চাকমা মাধ্যমিক পর্যন্ত পড়ালেখা করে চার বছর আগে বাড়ি ছেড়ে চলে যান।


স্থানীয় ইউপি সদস্য সুমনানন্দ দেওয়ান বলেন, রিকাকে শিশু থেকে দেখে এসেছি। এখন মেয়েটির একের পর এক বির্তর্কিত কর্মকাণ্ডে আমরা বিব্রতকর অবস্থায় আছি। তার রাতারাতি এত টাকা কিভাবে কোথা থেকে এলো আমরা কিছুই জানি না। প্রলোভনে পড়ে অনেক মেয়ে পরিবার, স্বামী সন্তান ফেলে রিকার কাছে চলে যাচ্ছে।


রিকার বাবা চন্দ্রজিৎ চাকমা বলেন, আমার মেয়ে প্রেম করে কক্সবাজারের এক মারমা ছেলেকে বিয়ে করে। ছেলেটির পুলিশের চাকরি ছিল। পরে আর মেয়ের সঙ্গে যোগাযোগ নেই। শুনেছি চীনে গেছে।


এদিকে ২৫ এপ্রিল ফেসবুকে ঢাকার মিরপুর-১ এলাকার একটি রেস্টুরেন্টে বসে লাইভ করেন রিকা চাকমা। চাকমা ভাষায় তার ফেসবুক লাইভে চীনে নারী পাচারের কথা স্বীকার করেন তিনি।


এ সময় দাম্ভিকতার সঙ্গে তিনি বলেন, চীনে নারী পাচার নিয়ে তাকে কেউ কোনো কিছুই করতে পারবে না।


মনি চাকমা (৩০) নামে এক যুবক জানান, তার স্ত্রী ইতি চাকমা (২৪) বর্তমানে ঢাকায় পাচার চক্রের সদস্য রিকা চাকমার কাছে আছেন। এর আগে ২১ এপ্রিল সন্ধ্যায় পুলিশের সহায়তায় ঢাকার বসুন্ধরায় একটি মার্কেট থেকে রিকার সঙ্গে থাকা স্ত্রীকে উদ্ধার করেন তিনি। পরদিন ২২ এপ্রিল সকাল ৭টার দিকে রাঙামাটি যাওয়ার জন্য গাবতলী বাস কাউন্টারে গেলে তার স্ত্রী আবার পালিয়ে যান। রিকা তাকে ফোনে হুমকি দিয়েছেন বলেও জানান মনি।


রাঙামাটির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মারুফ আহামেদ জানিয়েছেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে পাহাড়ি নারীদের চীনে পাচারের বিষয়টি পুলিশ গুরুত্বসহকারে নিয়েছে। ইতোমধ্যে পাচার চক্রের সদস্যদের ধরতে কাজ শুরু করেছে পুলিশ।


নিউজটি পোস্ট করেছেনঃ এলএসবিডি/হেনা

কমেন্ট বক্স
দৈনিক লাল সবুজ বাংলাদেশ



আপডেট : বুধবার, ০৯ অক্টোবর ২০২৪, ১১.১১ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ সংবাদ