ঢাকা
খ্রিস্টাব্দ

এবার ২৮ বস্তা টাকা পাগলা মসজিদের দান বাক্সে

দৈনিক লাল সবুজ বাংলাদেশ

নিজস্ব সংবাদদাতা | দৈনিক লাল সবুজ বাংলাদেশ
কিশোরগঞ্জ
শনিবার, ১২ এপ্রিল ২০২৫, ১১.৪৬ পূর্বাহ্ন

আপডেট : শনিবার, ১২ এপ্রিল ২০২৫, ১১.৪৬ পূর্বাহ্ন


নিউজটি দেখেছেনঃ 882084 জন

  • নিউজটি দেখেছেনঃ 882084 জন
এবার ২৮ বস্তা টাকা পাগলা মসজিদের দান বাক্সে

চার মাস ১১ দিন পর আবার খোলা হলো কিশোরগঞ্জের পাগলা মসজিদের দান বাক্স। এবার মসজিদের ১১টি সিন্দুক বা দান বাক্স খুলে পাওয়া গেছে ২৮ বস্তা টাকা। আজ শনিবার সকাল সা‌ড়ে ৭টায় দান বাক্সগুলো খোলা হয়। এ সময় মসজিদের সভাপতি, জেলা প্রশাসক ফৌজিয়া খান, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাছান চৌধুরীসহ জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।



নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন সেনাবাহিনী, পুলিশ ও আনসার সদস্যরা। এ সময় মসজিদ ঘিরে কঠোর নিরাপত্তা বলয় তৈরি করা হয়। দান বাক্সের টাকাগুলো বস্তায় ভরে কড়া নিরাপত্তায় মসজিদের দোতলায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই টাকা গণনার কাজ শুরু হয়।


এর আগে, গত ৩০ নভেম্বর খোলা হয়েছিল মসজিদের দান বাক্স। তখন পাওয়া যায় রেকর্ড ৮ কোটি ২১ লাখ ৩৪ হাজার ৩০৪ টাকা। মসজিদের দোতলায় গিয়ে দেখা যায়, মেঝেতে বসা মাদরাসার শিক্ষার্থীদের সামনে বস্তায় ঢেলে দেওয়া হচ্ছে টাকা। আর সেগুলো ভাঁজ করে গুনছে তারা।



গণনার কাজে সহযোগিতা করছেন মসজিদের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও ব্যাংকের লোকজন। অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) জেস‌মিন আক্তা‌রের নেতৃত্বে বেশ কয়েকজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট টাকা গণনার কাজ তদারকি করছেন। গণনার কাজে দুটি মাদরাসার প্রায় আড়াই শ শিক্ষার্থী, ব্যাংকের ৮০ জন কর্মী, মসজিদ কমিটি ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যসহ সাড়ে চার শ লোক টাকা গণনার কাজে নিয়োজিত রয়েছেন।


 

গত ১৭ আগস্ট আরেকবার খোলা হয়েছিল দান বাক্স। তখন পাওয়া যায় সাত কোটি ২২ লাখ ১৩ হাজার ৪৬ টাকা।


এর আগে, গত ২০ এপ্রিল সিন্দুক খুলে পাওয়া গিয়েছিল সাত কোটি ৭৮ লাখ ৬৭ হাজার ৫৩৭ টাকা। তারও আগে গত বছরের ৯ ডিসেম্বর পাওয়া যায় ছয় কোটি ৩২ লাখ ৫১ হাজার ৪২৩ টাকা।

মসজিদ কমিটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সাধারণত তিন মাস পর পর দান বাক্স খোলা হয়। এবার চার মাসের বেশি সময় পর দান বাক্স খোলা হয়েছে। এ কারণে টাকার পরিমাণ অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়েছে।


রূপালী ব্যাংকের সহকারী মহাব্যবস্থাপক (এজিএম) রফিকুল ইসলাম জানান, দেশি টাকা ছাড়াও বিদেশি মুদ্রা ও সোনা-রুপার অলংকারও উল্লেখযোগ্য পরিমাণে পাওয়া গেছে। এগুলো গণনা করতে সন্ধ্যা, এমনকি রাতও হয়ে যেতে পারে।


জানা গেছে, ২০২৩ সালে চারবার খোলা হয়েছিল পাগলা মসজিদের দান বাক্স। চারবারে মোট ২১ কোটি ৮৭ লাখ ৮৫ হাজার ১৮১ টাকা পাওয়া যায়। ২০২৪ সাল থেকে আজ নিয়ে তিনবার খোলা হলো সিন্দুক। আগের দুবারে পাওয়া যায় ১৪ কোটি ১১ লাখ ১৮ হাজার ৯৬০ টাকা। নভেম্বরে পাওয়া গিয়েছিল আট কোটি ২১ লাখ ৩৪ হাজার ৩০৪ টাকা।


স্থানীয়রা জানান, মুসলমানসহ বিভিন্ন সম্প্রদায়ের লোকজন এ মসজিদে দান করেন। এখানে দান করলে মনোবাসনা পূরণ হয়— এমন বিশ্বাস থেকে তারা ছুটে আসেন পাগলা মসজিদে। দান করেন মোটা অঙ্কের টাকা। টাকার সঙ্গে সোনা-রুপার অলংকারসহ থাকে বিদেশি মুদ্রাও। প্রতিদিন বিপুলসংখ্যক গবাদি পশু, হাঁস-মুরগি, ফলফলাদি, মোমবাতি ও ধর্মীয় বই দান করে লোকজন।


তবে আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়ায় দান বাক্সে পাওয়া চিঠিপত্র। এসব চিঠিতে লোকজন তাদের জীবনে প্রাপ্তির আনন্দ, না-পাওয়ার বিরহ-বেদনা, আয়-উন্নতির ফরিয়াদ, চাকরির প্রত্যাশা, পরীক্ষায় ভালো ফলের আশা ও রোগব্যাধি থেকে মুক্তি পেতে আকুতি প্রকাশ করে।


জানা গেছে, মসজিদের দানের টাকা ব্যাংকে গচ্ছিত থাকে। আর ওই টাকার লভ্যাংশ থেকে ক্যান্সারসহ জটিল রোগে আক্রান্তদের আর্থিকভাবে অনুদান দিয়ে থাকে মসজিদ কমিটি। যে কমিটির সভাপতির দায়িত্বে রয়েছেন জেলা প্রশাসক।


মসজিদের সভাপতি ও জেলা প্রশাসক ফৌজিয়া খান জানান, দানের টাকায় মসজিদের নিয়মিত খরচ চালিয়ে ব্যাংকে জমানো হচ্ছে। ব‌্যাং‌কে জমা আছে ৮০ কো‌টি ৭৫ লাখ টাকা। এ টাকা দিয়ে মসজিদের বড়সড় উন্নয়ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হবে। মসজিদ ঘিরে এখানে ছয়তলাবিশিষ্ট একটি ইসলামী কমপ্লেক্স নির্মিত হবে।


যেখানে একসঙ্গে ৫০ হাজার মুসল্লি একসঙ্গে নামাজ পড়তে পারবেন। এর মধ্যে পাঁচ হাজার নারীর জন্য আলাদাভাবে নামাজের ব্যবস্থা থাকবে। সেখানে সমৃদ্ধ লাইব্রেরিসহ থাকবে আরো বিভিন্ন আয়োজন। এ জন্য পরামর্শক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তাঁরা যাচাই-বাছাই করে ডিজাইন ও নকশা চূড়ান্ত করে দিলেই দরপত্র আহ্বানের মাধ্যমে কাজ শুরু হবে।


নিউজটি পোস্ট করেছেনঃ এলএসবিডি/হেনা

কমেন্ট বক্স
বাংলাদেশ | জাতীয়
দৈনিক লাল সবুজ বাংলাদেশ

নিজস্ব সংবাদদাতা | দৈনিক লাল সবুজ বাংলাদেশ
কিশোরগঞ্জ
শনিবার, ১২ এপ্রিল ২০২৫, ১১.৪৬ পূর্বাহ্ন
আপডেট : শনিবার, ১২ এপ্রিল ২০২৫, ১১.৪৬ পূর্বাহ্ন