মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে। শুক্রবার ভোরে ইরানের রাজধানী তেহরানে ইসরায়েল চালিয়েছে একাধিক শক্তিশালী হামলা, যার মূল লক্ষ্য ছিল ইরানের পারমাণবিক ও সামরিক স্থাপনা। ইরানের স্থানীয় সময় ভোর ৪টার দিকে বিস্ফোরণের শব্দে কেঁপে ওঠে তেহরান শহর।
এই হামলায় নিহত হয়েছেন ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ডের (IRGC) প্রধান কমান্ডার হোসেইন সালামি। এছাড়াও, ইরানের দুই শীর্ষ পারমাণবিক বিজ্ঞানী ফেরেয়দুন আব্বাসি ও মোহাম্মদ মেহেদী তেহরানচি নিহত হন। মি. আব্বাসি ছিলেন ইরানের পারমাণবিক শক্তি সংস্থা AEOI-এর সাবেক প্রধান এবং একাধিকবার আক্রমণের লক্ষ্য হয়েছিলেন। মি. তেহরানচি ছিলেন ইসলামিক আজাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি।
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী হামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, "এই হামলা ছিল আত্মরক্ষামূলক এবং ইরানের পারমাণবিক হুমকি নিরসনই ছিল লক্ষ্য।" তিনি দেশে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন এবং পাল্টা ইরানি প্রতিক্রিয়ার আশঙ্কা করছেন।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু জানান, "এই অভিযান ইরানের পরমাণু সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচির কেন্দ্রে আঘাত হেনেছে এবং এ ধরনের আক্রমণ অনির্দিষ্টকাল পর্যন্ত চলতে পারে।"
যুক্তরাষ্ট্র হামলায় জড়িত নয় বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে হোয়াইট হাউজ। পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বলেন, "এই হামলা একতরফাভাবে ইসরায়েল চালিয়েছে। মার্কিন সেনাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই এখন আমাদের প্রধান অগ্রাধিকার।"
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, “আমরা চাই না ইসরায়েল এখনই হামলা করুক, কারণ এখনো একটি কূটনৈতিক চুক্তির সম্ভাবনা রয়েছে।” তবে তিনি স্বীকার করেন যে, পরিস্থিতি "খুব সন্নিকটে" চলে এসেছে।
তেহরানের প্রধান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সব ফ্লাইট স্থগিত করা হয়েছে। ইরানি রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন জানিয়েছে, আবাসিক এলাকাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং শিশুদের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এই হামলা শুধু মধ্যপ্রাচ্য নয়, বৈশ্বিক নিরাপত্তা পরিস্থিতিকেও আরও অস্থির করে তুলতে পারে।