পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতসহ বিভিন্ন দেশে করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ছড়িয়ে পড়ায় সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে জোরদার করা হয়েছে স্বাস্থ্যবিধি এবং স্ক্রিনিং কার্যক্রম। রোববার রাতে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আন্তর্জাতিক আগমনী টার্মিনালে ইমিগ্রেশনের প্রবেশপথে থার্মাল স্ক্যানার বসানো হয়েছে, যাতে আগত যাত্রীদের শরীরের তাপমাত্রা পরিমাপ করা যায়। এ ছাড়া টার্মিনালের স্পর্শকাতর এলাকায় মাস্ক ব্যবহারের বিষয়টি বাধ্যতামূলক করা হয়েছে এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য পর্যাপ্ত মাস্ক, গ্লাভস ও অন্যান্য প্রতিরোধী সরঞ্জামের মজুত রাখা হয়েছে।
দেশে মে মাস থেকে করোনা সংক্রমণের হার আবারও বাড়তে শুরু করেছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, এপ্রিল মাসে যেখানে মাত্র ২৩ জন আক্রান্ত হয়েছিলেন, সেখানে মে মাসে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮৬ জনে। সর্বশেষ ৫ জুন একজন রোগী করোনায় মারা গেছেন। বিশেষজ্ঞদের মতে, পরিস্থিতি এখনও আতঙ্কিত হওয়ার মতো নয়, তবে সচেতন থাকার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) তথ্য অনুযায়ী, ভারতে ছড়িয়ে পড়া করোনার নতুন ধরন এনবি.১.৮.১ ইতোমধ্যে বিশ্বের ২২টি দেশে শনাক্ত হয়েছে এবং এর সংক্রমণের হার তুলনামূলকভাবে বেশি। এই প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশেও এই ধরন ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে মনে করছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক অধ্যাপক ডা. হালিমুর রশিদের স্বাক্ষরে দেওয়া নির্দেশনায় বলা হয়, অমিক্রনের উপধরন এলএফ.৭, এক্সএফজি, জেএন-১ এবং এনবি.১.৮.১ এর সংক্রমণ বর্তমানে আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। এজন্য দেশের সব স্থল, নৌ ও বিমানবন্দরে হেলথ স্ক্রিনিং ও নজরদারি জোরদার করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনায় সংক্রমণ প্রতিরোধে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে:
✅ সাবান ও পানি দিয়ে ২৩ সেকেন্ড ধরে হাত ধোয়া
✅ বাইরে গেলে মাস্ক ব্যবহার করা
✅ অসুস্থ ব্যক্তির কাছ থেকে অন্তত ৩ ফুট দূরে থাকা
✅ হাঁচি-কাশির সময় নাক-মুখ ঢেকে রাখা
✅ প্রয়োজন ব্যতীত বিদেশ, বিশেষ করে ভারত ভ্রমণ এড়িয়ে চলা
✅ সন্দেহভাজন রোগীর ক্ষেত্রে করণীয়:
✅ অসুস্থ হলে ঘরে অবস্থান করা
✅ উপসর্গ দেখা দিলে মাস্ক পরিধান এবং চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া
গুরুতর উপসর্গ দেখা দিলে আইইডিসিআরের হটলাইন (০১৪০১-১৯৬২৯৩) নম্বরে যোগাযোগ করা
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পূর্ব প্রস্তুতি, সচেতনতা এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার মাধ্যমে এই নতুন ঢেউ প্রতিরোধ করা সম্ভব। শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নেয়া পদক্ষেপগুলো এই প্রস্তুতির একটি বড় অংশ হিসেবে দেখা হচ্ছে।