বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেছেন, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) চাইলেও বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হবে না। তবে দুর্নীতি বন্ধ করে উৎপাদন খরচ কমিয়ে বিদ্যুতে ভর্তুকি কমানো হবে। বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) অর্থ মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে জ্বালানি উপদেষ্টা এসব কথা বলেন। সরকারের এই কৌশলে আইএমএফও সম্মতি দিয়েছে বলে জানান তিনি।
মুহাম্মদ ফাওজুল কবির বলেন, ‘ভর্তুকির চাপ কমাতে আইএমএফ বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর কথা বলেছিল। আমরা তাদের বলেছি যে উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে সাধারণ মানুষ এমনিতেই চাপে আছে। এই সময় বিদ্যুতের দাম বাড়ালে মানুষের দুর্ভোগ আরও বাড়বে। আইএমএফ আমাদের কথা মেনে নিয়েছে।
জ্বালানি উপদেষ্টা আরো বলেন, ‘আমরা বিদ্যুৎ উৎপাদনের খরচ কমিয়ে ভর্তুকি কমানোর চেষ্টা করছি। বিদ্যুৎ খাতের জন্য ২০১০ সালে যে বিশেষ বিধান করা হয়েছিল, সেটি বাতিল করেছি। বিভিন্ন বিদ্যুৎ কম্পানির বোর্ডে সচিবরা ছিলেন, তাদের সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেখানে যেসব দুর্নীতি হতো, সেগুলো বন্ধ করা হচ্ছে।
এদিকে চলমান ঋণ কর্মসূচির আওতায় বাংলাদেশের জন্য চতুর্থ কিস্তিতে ৬৪ কোটি ৫০ লাখ ডলার ছাড়ের বিষয়টি ৫ ফেব্রুয়ারি আইএমএফের নির্বাহী পর্ষদ বোর্ড সভায় উপস্থাপন করা হবে। বোর্ডে অনুমোদন হলে ১০ ফেব্রুয়ারি তা ছাড় করা হবে বলে জানা গেছে। চতুর্থ কিস্তি ছাড়ের আগে শর্ত বাস্তবায়ন অগ্রগতি পর্যালোচনা ও নতুন ঋণের বিষয়ে দরকষাকষি করতে ৩ ডিসেম্বর থেকে আইএমএফ গবেষণা বিভাগের ডেভেলপমেন্ট ম্যাক্রোইকোনমিকসের প্রধান ক্রিস পাপাজর্জিওর নেতৃত্বে ১৩ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল ঢাকা সফরে আসে। মিশন শেষে আজ বৃহস্পতিবার অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের সভাকক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রতিনিধি দলের প্রধান ক্রিস পাপাজর্জিও বলেন, 'বাংলাদেশের অর্থনীতি চিত্র খুব একটা আশাব্যঞ্জক নয়। দীর্ঘদিনেও নিয়ন্ত্রণে আসছে না মূল্যস্ফীতি, যা আইএমএফের ধারণার চেয়েও অনেক বেশি।বাংলাদেশকে সহায়তা দেওয়ার বিষয়ে ইতিবাচক আইএমএফ। অভ্যন্তরীণ আয় বৃদ্ধি ও ব্যাংক খাতের সংস্কার চলমান রাখতে হবে। বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট পরিবর্তন হলেও বাংলাদেশের আর্থিক খাতের সংস্কারেই গুরুত্ব দিচ্ছে আইএমএফ।'