প্রাণীগুলোর জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে মানবিক পদ্ধতি ব্যবহারের আহ্বান জানিয়েছেন সচেতন ব্যক্তিরা। কৃষি খাতে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলায় এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটির কর্তৃপক্ষ।
বন ও প্রকৃতি সংরক্ষণ সংস্থার চিউ কুও-হাও-এর মতে, প্রায় ২ লাখ সরীসৃপ প্রাণী ইগুয়ানা দ্বীপের দক্ষিণ এবং কেন্দ্রীয় অঞ্চলে বসবাস করে, এ অঞ্চল কৃষিকাজের ওপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল।
বিশেষভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত শিকারী দল গত বছর প্রায় ৭০ হাজার ইগুয়ানা হত্যা করেছে। প্রতিটি প্রাণী হত্যার জন্য ১৫ ডলার পর্যন্ত পুরষ্কার দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় সরকার জনগণকে ইগুয়ানার বাসা চিহ্নিত করতে সাহায্য করতে বলেছে এবং তারা প্রাণী হত্যা করার জন্য মাছ ধরার তীরকে সবচেয়ে মানবিক পদ্ধতি হিসেবে সুপারিশ করেছে।
দক্ষিণ কাউন্টি পিংতুংয়ের কৃষি বিভাগের লি চি-ইয়া বলেন, ‘অনেক মানুষ এগুলোকে সুন্দর ছোট পোষা প্রাণী হিসেবে কিনেছিল।
কিন্তু তারা বুঝতে পারেনি এগুলো কতটা বড় হবে এবং দীর্ঘায়ু হবে। এরপর তারা এগুলোকে বনে ছেড়ে দেয়। ফলে তাইওয়ানের পরিবেশে যথেষ্ট দ্রুত বৃদ্ধি পেয়েছে।’ লি চি-য়া আরো বলেন, ‘এটি তাদের দ্রুত বংশবৃদ্ধি করতে সাহায্য করেছে।
আমাদের জন্য তাদের শিকার করা এবং প্রকৃতির ভারসাম্য পুনরুদ্ধার করা অপরিহার্য হয়ে উঠেছে।’ সবুজ ইগুয়ানাদের তাইওয়ানে কোনো প্রাকৃতিক শিকরি নেই এবং তারা এমন এলাকায় চলে গেছে যেখানে প্রবেশ করা কঠিন, বেশিরভাগই বন এবং শহরের ধারে।
পুরুষ ইগুয়ানা ২ ফুট (৬.৬ ফুট) পর্যন্ত লম্বা হতে পারে, ৫ কিলোগ্রাম (১১ পাউন্ড) ওজনের হতে পারে এবং ২০ বছর পর্যন্ত বাঁচতে পারে। অন্যদিকে স্ত্রী ইগুয়ানা একসঙ্গে ৮০টি পর্যন্ত ডিম পাড়তে পারে।
প্রধানত মধ্য আমেরিকা এবং ক্যারিবীয় অঞ্চলে বসবাসকারী ইগুয়ানার ধারালো লেজ, চোয়াল এবং ক্ষুরের মতো দাঁত থাকা সত্ত্বেও তারা আক্রমণাত্মক নয়।
সরীসৃপগুলো বেশিরভাগ ফল, পাতা এবং গাছপালা খেয়ে বেঁচে থাকে। পোষা প্রাণী হিসেবে জনপ্রিয় হলেও, বন্দি অবস্থায় তাদের সুস্থ রাখা কঠিন এবং এক বছরের মধ্যে মারা যায়।
তাইওয়ানের সরীসৃপ সংরক্ষণ সমিতির মহাসচিব হসু ওয়েই-চিহ বলেন, তাদের সংগঠন চায় কৃষকদের কীভাবে নিরাপদে থাকবেন, তাদের সম্পত্তি রক্ষা করবেন এবং ইগুয়ানাদের মানবিকভাবে আচরণ করবেন তা শেখাতে। তিনি আরো বলেন, ‘এই প্রকল্পটি যাতে সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয় তা নিশ্চিত করতে আমরা এখানে এসেছি।’
পিংতুংয়ের একজন সবজি চাষী সাই পো-ওয়েন বলেন, প্রশিক্ষণের সুফল মিলছে। তিনি বলেন, ‘আমরা আগে তাদের আক্রমণ করতাম, কিন্তু তাতে কোনো লাভ হয়নি। এখন আমরা আরো কার্যকর, নিরাপদ পদ্ধতি শিখছি।’