নেপালের অন্তর্বর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে সুশীলা কার্কির দায়িত্ব গ্রহণে অভিনন্দন জানিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘এক্স’-এ দেওয়া এক বার্তায় তিনি বলেন, “মাননীয় সুশীলা কার্কিকে নেপালের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণে জানাই আমার আন্তরিক অভিনন্দন। নেপালের মানুষের শান্তি, সমৃদ্ধি ও উন্নতির জন্য আমরা সবসময় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”
নেপালে চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের মাধ্যমে একটি শান্তিপূর্ণ সমাধানের পথ উন্মোচিত হয়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা ওলির পদত্যাগের পর রাজনৈতিক অঙ্গনে নানা মতবিরোধ দেখা দেয়। নতুন নির্বাচনের তারিখ ও নেতৃত্ব নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়। তবে সাবেক প্রধান বিচারপতি সুশীলা কার্কির নেতৃত্বে একটি গ্রহণযোগ্য সমাধানে পৌঁছায় দেশটির রাজনৈতিক মহল।
শুক্রবার দিনভর বৈঠকের পর রাতেই প্রেসিডেন্ট রাম চন্দ্র পাওদেলের কাছে শপথ নেন সুশীলা কার্কি। এর মধ্য দিয়ে নেপাল প্রথমবারের মতো একজন নারীকে অন্তর্বর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পেল। উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, সুশীলা কার্কিই ছিলেন নেপালের ইতিহাসে প্রথম নারী প্রধান বিচারপতি।
নেপালে দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির বিরুদ্ধে চলমান জনআন্দোলন সম্প্রতি সহিংস রূপ নেয়, যার ফলে দেশটি রাজনৈতিক অস্থিরতার মুখে পড়ে। তবে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের মাধ্যমে পরিস্থিতির উন্নতি হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন বিভিন্ন মহল।
ভারত সরকারের পক্ষ থেকেও এই রাজনৈতিক উত্তরণের প্রশংসা করা হয়েছে। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, “নিকট প্রতিবেশি, বন্ধুপ্রতিম গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র এবং উন্নয়নে দীর্ঘদিনের অংশীদার হিসেবে ভারত নেপালের শান্তি ও সমৃদ্ধির লক্ষ্যে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করবে।”
নতুন প্রধানমন্ত্রী সুশীলা কার্কির নেতৃত্বে এক ধরনের জাতীয় ঐক্য গড়ে উঠেছে বলে মনে করছেন অনেকে। তরুণ বিক্ষোভকারী থেকে শুরু করে বিভিন্ন রাজনৈতিক গোষ্ঠী, সবার কাছ থেকেই তিনি সমর্থন পেয়েছেন। দায়িত্ব গ্রহণের পর তার সুপারিশে প্রেসিডেন্ট দেশের পার্লামেন্ট ভেঙে দেন এবং ঘোষণা করা হয় আগামী ৫ মার্চ সাধারণ নির্বাচনের তারিখ।
নেপালের এই ঐতিহাসিক মুহূর্তে দক্ষিণ এশিয়ায় নারী নেতৃত্বের এক নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপিত হলো।
তথ্যসূত্র: এনডিটিভি