বেসামরিক বিমান পরিবহণ ও পর্যটন এবং ভূমি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকা প্রয়াত উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফের মরদেহ মিরপুরের শহিদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে দাফন করা হবে। আগামীকাল সোমবার সকালে তার মরদেহ দাফন করা হবে বলে জানিয়েছেন বেসামরিক বিমান পরিবহণ ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান তুহিন। তিনি জানান, হাসান আরিফের মেয়ে কানাডা থেকে ফিরবেন আজ রোববার। মেয়ে ফিরলে তাকে দাফন করা হবে। এর আগে গত শুক্রবার দুপুরে উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে রাজধানীর ল্যাবএইড হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তার বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর।
হাসান আরিফের প্রথম নামাজে জানাজা গত শুক্রবার বাদ এশা ধানমন্ডি সাত নম্বর রোডের বায়তুল আমান মসজিদে অনুষ্ঠিত হয়। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এ জানাজায় অংশ নেন। গতকাল শনিবার বেলা ১১টায় হাইকোর্ট প্রাঙ্গণে দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজায় বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন, ড. কামাল হোসেন, ব?্যারিস্টার এম আমীর উল ইসলাম, দুদক চেয়ারম্যান, প্রধান নির্বাচন কমিশনার, জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল, সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি ও সিনিয়র অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন, ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজলসহ অন্যান্য আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন। পরে মরদেহে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে প্রধান বিচারপতিসহ অন্যান্যরা শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। পুস্পস্তবক অর্পণ শেষে তৃতীয় নামাজে জানাজার উদ্দেশে তার লাশ সচিবালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়।
এ সময় স্মৃতিচারণ করে ড. কামাল বলেন, তিনি সৎ ও নিষ্ঠাবান ছিলেন। দল-মত নির্বিশেষে তিনি সবার পাশে ছিলেন, আইনি সহায়তা দিয়েছেন। আমরা তাকে হারিয়ে শোকাহত। এরপর সচিবালয়ে তৃতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে গত শুক্রবার বিকাল ৩টা ১০ মিনিটে রাজধানীর ল্যাবএইড হাসপাতালে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন এ এফ হাসান আরিফ। তিনি অন্তর্র্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে ভূমি মন্ত্রণালয় এবং বেসামরিক বিমান পরিবহণ ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত ছিলেন। এছাড়া তিনি ২০০৮ সালের জানুয়ারি থেকে ২০০৯ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত তৎকালীন অন্তর্র্বতী সরকারের আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০০১ সালের অক্টোবর থেকে ২০০৫ সালের এপ্রিল পর্যন্ত বাংলাদেশের অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি।
এ এফ হাসান আরিফ ১৯৪১ সালের ১০ জুলাই কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৬৭ সালে কলকাতা হাইকোর্টে আইনজীবী হিসেবে পেশাগত জীবন শুরু করেন তিনি। ১৯৭০ সালে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান হাইকোর্টের আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন এবং সে সময় থেকে নিরবচ্ছিন্নভাবে দেশের সর্বোচ্চ আদালতের আইনজীবী হিসেবে আইনপেশা পরিচালনা করে আসছিলেন। হাসান আরিফের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস, উপদেষ্টা পরিষদের সব সদস্য এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা।