পরিকল্পনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ঘোষণা দিয়ে হলে ফিরলেন কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) রাতে গণমাধ্যমকে এই তথ্য জানান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত নাঈম
তিনি বলেন, ‘ঢাকা বিশ্বিবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কিভাবে সংকোচিত, শঙ্কিত, বিব্রত ও ভয়ের মধ্যে রয়েছে তা আপনারা আজকে দেখেছেন। আমরা ট্রেনিংপ্রাপ্ত সন্ত্রাস না। শিক্ষার্থীদের ওপর যারা হামলা চালিয়েছে তারা ট্রেনিংপ্রাপ্ত অস্ত্র সন্ত্রাসী।
সেই ট্রেনিংপ্রাপ্ত অস্ত্র সন্ত্রাসী দিয়ে আমাদের সাধারণ শিক্ষার্থী, যারা টেবিলে লাইব্রেরিতে পড়াশোনা করে তাদের ওপর হামলা চালানো হয়। এ কারণে সাধারণ শিক্ষার্থীরা ভীত। তারা ক্যাম্পাসে সন্ত্রাস ও ভীতির রাজত্ব তৈরি করেছে। এই ভয়ের পরিবেশ নিরসনে আমাদের যারা শিক্ষক রয়েছেন এবং ভিসির দায়িত্বের সমালোচনা করি।
উনি আমাদের অভয় ও নির্ভয় দিয়ে কোনো বিবৃতি দেননি। এমনকি আমাদের প্রক্টর স্যারও আমাদের অভয় দিয়ে কোনো বিবৃতি দেননি। যাতে করে আমরা নির্ভয় হতে পারি। তাদের শ্মশান সমান নিস্তব্দতা আমাদের আরো ভীত-সন্ত্রস্ত করে রেখেছে।
তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের যৌক্তিক আন্দোলনের যৌক্তিকতা নিয়ে আর কোনো মহলের কোনো প্রশ্ন নেই। কিন্তু এই যৌক্তিক আন্দোলনে ছাত্রলীগ যেভাবে মধ্যযুগীয় বর্বর নির্যাতন চালিয়েছে টোকাই, বহিরাগত ও যুবলীগকে নিয়ে আমরা এতে ভীত-সন্ত্রস্ত। আমরা নিরাপত্তা চাই।’
হাসনাত নাঈম অভিযোগ করেন, ‘আজকে আমাদের যে বিক্ষোভ মিছিল কর্মসূচি ছিল এটি আমরা সফলভাবে সম্পন্ন করেছি। কিন্তু এই বিক্ষোভ মিছিলে আমাদের নানাভাবে হয়রানি করা হয়েছে।
বিভিন্ন জায়গা থেকে বাস দিয়ে টোকাই এনে ক্যাম্পাসে জড়ো করা হয়েছে। সেটির আমরা প্রতিবাদ জানাই। আমরা এর সুষ্ঠু বিচার চাই।’
পরবর্তী কর্মসূচি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আগামীকালও আমাদের কর্মসূচি থাকবে। কিন্তু আগামীকাল আশুরা থাকায় আমরা আলোচনা করে রাতে এই বিষয়ে জানাব।’
এ বিষয়ে ডিএমপির যুগ্ম পুলিশ কমিশনার মেহেদি হাসান বলেন, ‘বহিরাগত বা কেউ যাতে ফৌজদারি অপরাধ না করতে পারে এ জন্য আমরা ক্যাম্পাসে এসেছি। আপনারা দেখেছেন আমাদের উপস্থিতিতে কোনো আইনবিরোধী বা ফৌজদারি অপরাধ সংঘটিত হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যখন যেভাবে সহযোগিতা চাইবে আমরা সেভাবে সহযোগিতা দিতে প্রস্তুত আছি।’
গতকাল যে পিস্তল হাতে এক যুবকের ছবি দেখা যায় তার বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে কি না, সে বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এটি আমাদের পুলিশের বিভিন্ন ইউনিট আছে তারা সেটি দেখবে।’
তিনি আরো বলেন, ‘পুরো ঢাকায় পুলিশ জননিরাপত্তা দেওয়ার আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছে। আমরা জননিরাপত্তা বিধানের জন্য কাজ করে যাচ্ছি।’
পুলিশের পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের কোনো আশ্বাস দেওয়া হয়েছে কি না এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা কোনো পক্ষ নই, আমরা রাষ্ট্রের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে যাতে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি না ঘটে এ জন্য আমরা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের চাহিদা মোতাবেক এখানে এসেছি। আমাদের যতক্ষণ প্রয়োজন ততক্ষণ থাকব।’