ঢাকা
খ্রিস্টাব্দ

হাইড্রোজেন হতে পারে আগামীর জ্বালানি

দৈনিক লাল সবুজ বাংলাদেশ


আপডেট : বুধবার, ০৯ অক্টোবর ২০২৪, ১১.১১ পূর্বাহ্ন


নিউজটি দেখেছেনঃ 1865587 জন

  • নিউজটি দেখেছেনঃ 1865587 জন
হাইড্রোজেন হতে পারে আগামীর জ্বালানি
ছবি : সংগৃহীত

জীবাশ্ম জ্বালানি ফুরিয়ে আসছে। তা ছাড়া এটি পরিবেশের জন্যও ক্ষতিকর। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বিশ্বব্যাপী মানুষ উদ্বিগ্ন। পরিবেশ রক্ষায় কার্বন নিঃসরণ কমিয়ে আনতে হবে। এ জন্য জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার কমিয়ে আনার পাশাপাশি নবায়নযোগ্য জ্বালানির উৎসের বহুমুখী করার দিকে জোর দিতে হবে। সৌরবিদ্যুৎ, বায়ুশক্তির পাশাপাশি হাইড্রোজেন, অ্যামোনিয়ার মতো অপ্রচলিত জ্বালানির দিকেও নজর দিতে হবে। বিশেষ করে হাইড্রোজেন হতে পারে আগামীর জ্বালানি, যা কার্বন দূষণ থেকে বিশ্বকে মুক্তি দিতে পারে।

গতকাল সোমবার জাপানের রাজধানী টোকিওতে অনুষ্ঠিত তিন দিনের আন্তর্জাতিক জ্বালানি সম্মেলনের প্রথম দিন এসব কথা বলেছেন অংশগ্রহণকারীরা। সামিটে বিশ্বের ৩০ দেশের জ্বালানি বিশেষজ্ঞ, শিক্ষক, শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ী ও নীতিনির্ধারকরা অংশ নিয়েছেন। আগামীকাল বুধবার আন্তর্জাতিক সম্মেলন শেষ হবে। প্রদর্শনীতে অংশ নিয়েছে দেড় শতাধিক প্রতিষ্ঠান।


টোকিও শহরের বিগ সাইটে ষষ্ঠবারের মতো আয়োজিত এই আসরে ভবিষ্যৎ জ্বালানি এবং পরিবেশের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে এলএনজি গ্যাস, হাইড্রোজেন, অ্যামোনিয়া ও নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বৃদ্ধির ওপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে।


গতকাল সামিটের প্রথম দিন বিভিন্ন সেমিনারে অংশগ্রহণকারীরা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলার জন্য কার্বন নিঃসরণ কমানোর ওপর জোর দিচ্ছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ। জাপান ২০৫০ সালের মধ্যে কার্বন নিঃসরণ শূন্য করতে চায়। এ উদ্যোগ বাস্তবায়নে দেশটির খরচ হতে পারে ১ ট্রিলিয়ন ডলার। পাশাপাশি জাপান প্রযুক্তি ও আর্থিক সহযোগিতার মাধ্যমে এশিয়াকেও এ কাজে নেতৃত্ব দিতে চায়। এরই মধ্যে এশিয়া জিরো এমিশন কমিউনিটির (এজেডইসি) সদস্য ইন্দোনেশিয়া, ভিয়েতনাম, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, ফিলিপাইন, সিঙ্গাপুর, কম্বোডিয়া, ব্রুনাই, মিয়ানমার ও লাওসের সঙ্গে জাপান নানা রকম সহযোগিতায় যুক্ত হয়েছে।


উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আন্তর্জাতিক শক্তি সংস্থার সাবেক নির্বাহী পরিচালক নোবুও তানাকা টেকসই শক্তি লক্ষ্য অর্জনের জন্য আন্তর্জাতিক সহযোগিতার প্রয়োজনের ওপর জোর দেন। কার্বন দূষণ কমাতে যুক্তরাষ্ট্র পরিবেশবান্ধব জ্বালানি প্রসারে বিপুল ভর্তুকি দিচ্ছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নও সবুজ জ্বালানির জন্য নতুন নতুন উদ্যোগ নিচ্ছে। ভারত ও চীন নবায়নযোগ্য জ্বালানির উৎপাদন বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে।


ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) জ্বালানিবিষয়ক কমিশনার কাদরি সিমসন বলেন, রাশিয়ার গ্যাসের ওপর নির্ভরতা কমাতে নবায়নযোগ্য জ্বালানির ওপর বিশেষ জোর দিয়েছে ইউরোপ। গত বছর ইইউ গ্যাসের চেয়ে বায়ু শক্তি থেকে বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদন করেছে। বিশ্বব্যাপী জ্বালানি নিরাপত্তা কাঠামো গঠনে জাপান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। বিশেষ করে এলএনজির ক্ষেত্রে জাপান বিশ্বে নেতৃত্ব দিচ্ছে।


জাপানের অর্থনীতি, বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের কার্বন নিরপেক্ষতাবিষয়ক আন্তর্জাতিক নীতির মহাপরিচালক শিনিচি কিহারা উপস্থাপনায় বলেন, নবায়নযোগ্য জ্বালানির প্রসারে জাপান নানামুখী উদ্যোগ নিয়েছে। তারা ২০৫০ সালের মধ্যে কার্বন নিঃসরণ শূন্যতে নামিয়ে আনার পরিকল্পনা নিয়েছে। এরই অংশ হিসেবে ২০২৮ সাল থেকে জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহারের ওপর কর আরোপ করা হবে।


তিনি বলেন, বায়ুশক্তি থেকে ২০৩০ সালের মধ্যে জাপান ১০ গিগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে চায়। পাশাপাশি হাইড্রোজেনসহ দূষণমুক্ত জ্বালানির ব্যবহার বৃদ্ধির ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে। কিহারা আরও বলেন, জাপান শুধু নিজেকেই দূষণমুক্ত করতে চায় না, পাশাপাশি এশিয়াকেও নেতৃত্ব দিতে চায়। এ জন্য এজেডইসিভুক্ত ১০ দেশের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছে জাপান।  দূষণ কমাতে এই দেশগুলোকে পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি ও আর্থিক সহযোগিতা করা হচ্ছে।


বহুজাতিক কোম্পানি জেরার পরিকল্পনা বিভাগের প্রধান জুনইয়া তাওয়া বলেন, এলএনজির পাশাপাশি নবায়নযোগ্য জ্বালানি হিসেবে সৌরবিদ্যুৎ, হাইড্রোজেন এবং অ্যামোনিয়ার ব্যবহার বৃদ্ধিতে তারা বিশ্বের নানা দেশে বিনিয়োগ করছেন।

টোকিও গ্যাসের  প্রধান নির্বাহী  শিনিচি সাসায়ামা বলেন, তারা কার্বন দূষণ কমাতে নানা উদ্যোগ নিচ্ছেন। প্রাকৃতিক গ্যাসের ব্যবহার কমিয়ে হাইড্রোজেনসহ অন্যান্য নবায়নযোগ্য জ্বালানি সরবরাহের উদ্যোগ নিয়েছেন।



তিন দিনব্যপী এই সম্মেলনে বিভিন্ন কারিগরি সেমিনার, ব্যবসায়িক আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে। আন্তর্জাতিক এই প্রদর্শনীতে শেভরন, জেরা, এক্সন মবিল, হিটাচি, পেট্রোনাস, টোটাল এনার্জিস, বিপি সিঙ্গাপুর, ইনপেক্স, এডনক, কারাকেনটেক, এনজি, জাপান এনআরজি, উড ম্যাকেঞ্জি, ভরটেক্সসহ বিভিন্ন কোম্পানি অংশ নিয়েছে। প্রদর্শনীতে কোম্পানিগুলো নিজ নিজ পরিবেশবান্ধব যন্ত্রপাতি ও প্রযুক্তি নিয়ে মেলায় হাজির হয়েছে। বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধি ও উদ্যোক্তাদের এসব উদ্ভাবনী প্রযুক্তি সম্পর্কে হাতে-কলমে জ্ঞান নিতে দেখা গেছে।


নিউজটি পোস্ট করেছেনঃ এলএসবিডি/হেনা

কমেন্ট বক্স
দৈনিক লাল সবুজ বাংলাদেশ



আপডেট : বুধবার, ০৯ অক্টোবর ২০২৪, ১১.১১ পূর্বাহ্ন