ঢাকা
খ্রিস্টাব্দ

ভুলে হাদিসের প্রভাষক হতে চাওয়া সুধা রানীর কী হবে?

দৈনিক লাল সবুজ বাংলাদেশ


আপডেট : বুধবার, ০৯ অক্টোবর ২০২৪, ১১.১১ পূর্বাহ্ন


নিউজটি দেখেছেনঃ 1870224 জন

  • নিউজটি দেখেছেনঃ 1870224 জন
ভুলে হাদিসের প্রভাষক হতে চাওয়া সুধা রানীর কী হবে?
ছবি : সংগৃহীত

ইংরেজি অক্ষরে লেখা ‘হিস্ট্রি’ বিষয় পছন্দ দিতে গিয়ে ভুলে ‘হাদিস’ দিয়ে ফেলেন লালমনিরহাটের কালীগঞ্জের বাসিন্দা সুধা রানী। ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় আবেদনের সময় এমন ভুল করেছেন বলে জানান তার স্বামী গোবিন্দ চন্দ্র। এখন স্ত্রীর এ সমস্যা সমাধানের উপায় খুঁজছেন তিনি।


তবে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ) বলছে, সুধা রানী যে ভুল করেছেন, তা শুধরানোর কোনো সুযোগ নেই। তাকে পরবর্তী নিবন্ধন পরীক্ষায় আবার সঠিকভাবে আবেদন করে অংশ নিতে হবে।


জানা গেছে, গত ১৫ মে ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধনের প্রিলিমিনারি পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়। এতে প্রভাষক পদে উত্তীর্ণ হন সুধা রানী। তার বিষয় আসে ‘হাদিস’। হিন্দু ধর্মের অনুসারী হয়েও তাকে কেন হাদিস বিষয়ে উত্তীর্ণ দেখানো হচ্ছে, তা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শুরু হয় আলোচনা সমালোচনা।


এমন ভুলের জন্য অনেকে এনটিআরসিএকে দায়ী করেন। তবে শুরু থেকেই এনটিআরসিএ জানিয়ে আসছে, প্রার্থী আবেদনের সময় যে বিষয় পছন্দক্রমে দিয়েছেন, সেই বিষয়েই তাকে উত্তীর্ণ দেখানো হয়েছে। ভুল হলে সেই দায় প্রার্থীর।


বিষয়টি ব্যাপক আলোচিত হলে সুধা রানীর আবেদন ফরমে দেওয়া মোবাইল ফোন নম্বরে এ নিয়ে জানতে বৃহস্পতিবার (১৬ মে) রাতে যোগাযোগ করা হলে সুধা রানীর স্বামী গোবিন্দ্র চন্দ্র ফোন রিসিভ করেন। তিনি জানান, বিষয়টি নিয়ে তারা খুব ঝামেলায় পড়েছেন। আবেদন করার সময় তারাই ভুল করেছেন। এনটিআরসিএ এতে দায়ী নয়।


এদিকে, শনিবার (১৮ মে) দুপুরে সুধা রানীর স্বামী গোবিন্দ্র চন্দ্র এ প্রতিবেদককে ফোন করেন। কীভাবে এ সমস্যা সমাধান করা যাবে, তা নিয়ে সহযোগিতার আকুতি জানান।


গোবিন্দ্র চন্দ্র বলেন, ‘ইংরেজিতে হিস্ট্রি এবং হাদিস দুটোই এইচ অক্ষর দিয়ে শুরু। যখন আমরা হিস্ট্রি দিতে গিয়েছিলাম, তখন ভুল করে হাদিস দেওয়া হয়ে গেছে। আবেদনের প্রিন্ট কপি বের করে সেটা দেখতে পাই। তবুও পরীক্ষা দিয়েছিলেন আমার স্ত্রী। ভাবছিলাম পরীক্ষায় পাস করলে তখন এনটিআরসিএতে আবেদন করে ঠিক করে নেবো। এখন শুনছি এটা আর ঠিক করা যাবে না। আমাদের কেউ একটু সহায়তা করলে ভালো উপকৃত হতাম।’


সুধা রানীর স্বামীর এমন আকুতির পর গণমাধ্যমের পক্ষ থেকে এনটিআরসিএ কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। এনটিআরসিএর পরীক্ষা মূল্যায়ন ও প্রত্যয়ন বিভাগের পরিচালক উপসচিব মো. আবদুর রহমান এ নিয়ে কাজ করেন। তিনি  বলেন, ‘এটা এখন আর শুধরানোর কোনো উপায় নেই। তিনি (সুধা রানী) যদি এখন হাদিস বিষয়ে লিখিত পরীক্ষায় অংশও নেন এবং পাস করেন তবুও তিনি চূড়ান্ত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারবেন না। মৌখিক পরীক্ষার সময় তাকে বাদ পড়তে হবে। সবমিলিয়ে এখন আর কোনো সুযোগই নেই।’


তাকে পরবর্তী নিবন্ধন পরীক্ষায় সতর্কতার সঙ্গে আবেদন করে আবার পরীক্ষায় অংশ নিতে হবে বলেও জানান এনটিআরসিএর এ কর্মকর্তা।


সুধা রানীর স্থায়ী ঠিকানা লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার বোথলা চন্দ্রপুর। তার স্বামীর নাম গোবিন্দ্র চন্দ্র। তিনি রংপুরের একটি কেন্দ্রে পরীক্ষা দেন। সুধা রানী ২০০৯ সালে দিনাজপুর বোর্ড থেকে এসএসসি ও ২০১১ সালে এইচএসসি পাস করেছেন। দুই পরীক্ষাতেই তার বিভাগ ছিল মানবিক।


এরপর ২০১৫ সালে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাস বিভাগে স্নাতক এবং ২০১৬ সালে একই বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর পাস করেছেন।


গত ১৫ মে ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষার ফল প্রকাশ করে এনটিআরসিএ। এতে স্কুল ও কলেজ পর্যায় মিলিয়ে পাস করেছেন ৪ লাখ ৭৯ হাজার ৯৮১ জন। অংশগ্রহণকারী পরীক্ষার্থীদের মধ্যে গড় পাসের হার ৩৫ দশমিক ৮০ শতাংশ। আগামী জুলাইয়ে উত্তীর্ণদের লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হতে পারে।


নিউজটি পোস্ট করেছেনঃ এলএসবিডি/হেনা

কমেন্ট বক্স
দৈনিক লাল সবুজ বাংলাদেশ



আপডেট : বুধবার, ০৯ অক্টোবর ২০২৪, ১১.১১ পূর্বাহ্ন