নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার চরএলাহী ইউনিয়নে বামনী নদীর তীব্র ভাঙন রোধে ব্লক স্থাপন, ক্লোজার (বাঁধ) নির্মাণ এবং পূর্বে নির্মিত বামনী রেগুলেটর চালুর দাবিতে এক বিশাল মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) দুপুরে চরএলাহী ইউনিয়নের চর কচ্ছপিয়া নদীভাঙন এলাকায় এ কর্মসূচি পালিত হয়। এতে চরএলাহী ও পার্শ্ববর্তী চরফকিরা ইউনিয়নের কয়েক হাজার নারী-পুরুষ অংশগ্রহণ করেন। তারা নদীর তীরে দাঁড়িয়ে ব্যানার-প্ল্যাকার্ড হাতে বিক্ষোভ জানান।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, নদীর ভাঙনে গত কয়েক বছরে চরএলাহী ও আশপাশের এলাকার শতাধিক পরিবার বসতভিটা হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে গেছে। বিশেষ করে চাপরাশিরখালের দুই পাড়ে ভাঙন ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। ইতোমধ্যে বহু মাছের ঘের, ফসলী জমি ও বসতঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
মানববন্ধনে বক্তৃতা করেন চরএলাহী ইউনিয়ন যুবদলের সাবেক সভাপতি ইসমাইল তোতা, ইউনিয়ন জামায়াতের আমির মোহাম্মদ আইয়ুব আলী, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহিমসহ আরও অনেকে। তারা বলেন, “বছর কয়েক আগে এলাকাবাসীর দাবির মুখে বামনী নদীর ওপর একটি রেগুলেটর নির্মাণ করা হয়, পাশাপাশি বিকল্প খালও খনন হয়। তবে ক্লোজার নির্মাণ না হওয়ায় সেই রেগুলেটরটি অকার্যকর অবস্থায় পড়ে আছে।”
আবেগঘন কণ্ঠে বক্তব্য রাখেন নদীভাঙনে ঘরহারা আবদুল খালেক। তিনি বলেন, “আমার বাড়ি নদী থেকে আধা কিলোমিটার দূরে ছিল। এখন আমি অন্যের জমিতে ছোট্ট একটা ঘরে ঠাঁই নিয়েছি। এই ভাঙন যদি এভাবেই চলতে থাকে, তবে বর্ষায় সেটাও থাকবে না।”
এদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) নোয়াখালীর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. হালিম সালেহী জানান, বামনী নদীতে ক্লোজার নির্মাণের জন্য একটি সম্ভাব্যতা যাচাই ইতোমধ্যেই শেষ হয়েছে। অল্প সময়ের মধ্যেই বাঁধ নির্মাণ করে আলগীর খালকে বিকল্প খালের সাথে সংযুক্ত করে বামনী রেগুলেটর চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে।
স্থানীয়রা আরও অভিযোগ করেন, নদীপাড়ে অবৈধভাবে বালু পরিবহনকারী ট্র্যাংকার চলাচলের কারণে ভাঙন পরিস্থিতি আরও খারাপ হচ্ছে। তারা এসব ট্র্যাংকার বন্ধের দাবিও জানান।
বামনী নদীর ভাঙন প্রতিরোধে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ না করলে আগামি বর্ষায় ক্ষয়ক্ষতির মাত্রা ভয়াবহ রূপ নিতে পারে। স্থানীয়দের আশঙ্কা, আগামী দিনে তাদের অস্তিত্বই বিলীন হয়ে যেতে পারে নদীর প্রবল স্রোতে। এখন সময় এসেছে প্রতিশ্রুত প্রকল্প বাস্তবায়নের—দ্রুত ও কার্যকরভাবে।