জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি দ্রুত শেষ করতে নির্বাচন কমিশনকে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নির্দেশনার পর দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনা ও প্রতিক্রিয়া জোরদার হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টার এই ঘোষণাকে "ইতিবাচক পদক্ষেপ" হিসেবে উল্লেখ করে তাকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভায় তিনি বলেন, নির্বাচন নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে যে অনিশ্চয়তা ও শঙ্কা বিরাজ করছিল, এই ঘোষণা তা দূর করতে পারে। একইসঙ্গে তিনি আশা প্রকাশ করেন, নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য দ্রুত প্রস্তুতি সম্পন্ন করবে এবং একটি অংশগ্রহণমূলক গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া নিশ্চিত করবে।
এদিকে, ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানান, ডিসেম্বরের মধ্যে ভোট আয়োজনের জন্য মাঠ পর্যায় থেকে শুরু করে প্রশাসনের সর্বোচ্চ স্তর পর্যন্ত প্রস্তুতির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ৮ লাখ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে মোতায়েনের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে, যাদের মধ্যে ডিসেম্বরের আগেই প্রশিক্ষণ শেষ করতে হবে। একই সঙ্গে ঝুঁকিপূর্ণ ১৬ হাজার ভোটকেন্দ্রে বিশেষ নজর, সিসিটিভি ক্যামেরা, বডি ক্যামেরা, এবং ম্যাজিস্ট্রেটদের প্রশিক্ষণের ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে।
প্রধান উপদেষ্টার এই ঘোষণার পর রাজনৈতিক দলগুলোর পাশাপাশি সাধারণ মানুষের মধ্যেও নির্বাচন ঘিরে নতুন করে আগ্রহ ও প্রত্যাশা তৈরি হয়েছে। তবে নির্বাচন ঘিরে সহিংসতা বা অনিয়ম যেন না ঘটে, সে জন্য সাতদিনব্যাপী নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও মনিটরিং পরিকল্পনা নেওয়ার কথাও জানানো হয়েছে। অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের সম্ভাব্য ৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ প্রসঙ্গে উদ্বেগ প্রকাশ করে মির্জা ফখরুল বলেন, এটি দেশের পোশাক খাতে ভয়াবহ প্রভাব ফেলতে পারে, এবং সরকারকে এখনই প্রয়োজনীয় কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক পদক্ষেপ নিতে হবে।
সবমিলিয়ে নির্বাচনের প্রস্তুতি, আন্তর্জাতিক চাপ ও অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক পরিবেশ একসঙ্গে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন গতিবেগ তৈরি করেছে—যেখানে সরকারের পাশাপাশি বিরোধীদলগুলোর দৃষ্টিভঙ্গি ও অংশগ্রহণ নিশ্চিত করাই হতে যাচ্ছে আসন্ন নির্বাচনের জন্য মূল চ্যালেঞ্জ।