ঢাকা
খ্রিস্টাব্দ

ফেনীর উত্তরাঞ্চলে নদীর বাঁধ ভেঙ্গে ৩০ গ্রাম প্লাবিত, যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন ফুলগাজী-পরশুরাম

দৈনিক লাল সবুজ বাংলাদেশ

হাসান মাহমুদ | জেলা সংবাদদাতা
ফেনী
বুধবার, ০৯ জুলাই ২০২৫, ৯.৪১ অপরাহ্ন

আপডেট : বুধবার, ০৯ জুলাই ২০২৫, ৯.৪১ অপরাহ্ন


নিউজটি দেখেছেনঃ 464508 জন

  • নিউজটি দেখেছেনঃ 464508 জন
ফেনীর উত্তরাঞ্চলে নদীর বাঁধ ভেঙ্গে ৩০ গ্রাম প্লাবিত, যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন ফুলগাজী-পরশুরাম
- ছবি সংবাদদাতা প্রেরিত।


ফেনী উত্তরাঞ্চলে তিন নদীর বাঁধ ভেঙ্গে ৩০ গ্রাম প্লাবিত যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে জেলা সদর ফেনীর সাথে। অতিভারি বৃষ্টিপাত ও ভারতের উজানের ঢলে মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনিয়া নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ১৪টি স্থান ভেঙে গেছে। এতে ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলার অন্তত ৩০টির বেশি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার মানুষদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিতে দুই উপজেলায় মোট ১৩১টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। রাতে ফেনী জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার বন্যা কবলিত কিছুবএলাকা পরিদর্শনে যান।জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দুর্গতদের জন্য শুকনো খাবার ও রান্না করা খাবারের জন্য সাড়ে ৬ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।


ফেনীর পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তথ‍্য মতে, পরশুরামের মুহুরী নদীর পানি বিপৎসীমা ১২.৫৫ মিটার। মঙ্গলবার রাত ১০টায় সবশেষ ১৩ দশমিক ৯২ মিটার উচ্চতায় পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয়। অর্থাৎ বিপদসীমার ১ দশমিক ৩৭ মিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছিল।


মঙ্গলবার সকাল ৭টায় নদীটির পানি প্রবাহ ছিল ৭ মিটার উচ্চতায়। রাত ১০টা পর্যন্ত গত ১৫ ঘণ্টায় মুহুরী নদীর পানি বেড়েছে ৬ দশমিক ৯২ মিটার। অর্থাৎ ২২ ফুট ১০ ইঞ্চি বেড়েছে।


আবহাওয়া অফিসের তথ্য মতে, গত সোমবার রাত ১২টা থেকে মঙ্গলবার রাত ১২টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে সর্বোচ্চ ফেনীতে ৪৪১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়। যা চলতি বর্ষা মৌসুমের সর্ব্বোচ রেকর্ড।


পরশুরাম ও ফুলগাজী উপজেলা প্রশাসনের তথ্য মতে, মুহুরী নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের পরশুরাম উপজেলার জঙ্গলঘোনায় দুটি, অলকায় তিনটি, শালধর এলাকায় একটি, ফুলগাজী উপজেলার উত্তর শ্রীপুর এলাকায় একটি স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। সিলোনিয়া নদীর পরশুরামের গদানগর এলাকায় একটি ও ফুলগাজীর দেড়পড়া এলাকার দুটি স্থানে ভেঙেছে।


এছাড়া কহুয়া নদীর পরশুরাম উপজেলার সাতকুচিয়ায় দুটি, বেড়াবাড়িয়ায় একটি ও ফুলগাজী উপজেলার দৌলতপুর এলাকায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের একটি স্থানে ভাঙনের ঘটনা ঘটেছে। এতে হাজার হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েন।


এদিকে, ফেনীর বিদ‍্যুত বিতরণ বিভাগ ও ফেনীর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির তথ‍্য মতে, শহরে ও পরশুরাম এবং ফুলগাজীর অনেক বাসা, বাড়ি ও ব‍্যবসা প্রতিষ্ঠানের বৈদ্যুতিক মিটার এবং সাব স্টেশন পানিতে তলিয়ে গেছে। ফলে দুর্ঘটনা এড়াতে অনেক জায়গায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখা হয়েছে। অবস্থার অবনতি হলে এর পরিধি বাড়তে পারে। পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকবে।


ফেনী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আক্তার হোসেন বলেন, নদীর পানি এখনো বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে রাত ১২টার পর মুহুরী নদীর পানি কিছুটা কমেছে। উজানে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের পাহাড়ি অঞ্চলে বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে পানি প্রবাহ বাড়বে। আরও নতুন বাঁধ ভাঙনের আশঙ্কা রয়েছে।


ফেনীর জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম বলেন, ফুলগাজী উপজেলায় ৩২টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও ৬৭টি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং পরশুরাম উপজেলায় ৩২টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে প্রস্তুত করা হয়েছে। এরইমধ্যে প্রায় দেড় শতাধিক মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে এসেছেন। দুর্গতদের জন্য শুকনো খাবার ও রান্না করা খাবারের জন্য সাড়ে ৬ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি সার্বক্ষণিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে।


নিউজটি পোস্ট করেছেনঃ এলএসবিডি/এনকেডি

কমেন্ট বক্স
বাংলাদেশ | সারাদেশ
দৈনিক লাল সবুজ বাংলাদেশ

হাসান মাহমুদ | জেলা সংবাদদাতা
ফেনী
বুধবার, ০৯ জুলাই ২০২৫, ৯.৪১ অপরাহ্ন
আপডেট : বুধবার, ০৯ জুলাই ২০২৫, ৯.৪১ অপরাহ্ন
সর্বশেষ সংবাদ