ঢাকা
খ্রিস্টাব্দ

নতুন জাতের ‘জিএইউ ধান-৩’ উদ্ভাবন

দৈনিক লাল সবুজ বাংলাদেশ

স্টাফ রিপোর্টার | দৈনিক লাল সবুজ বাংলাদেশ
ঢাকা
রবিবার, ০১ জুন ২০২৫, ১.০১ পূর্বাহ্ন

আপডেট : রবিবার, ০১ জুন ২০২৫, ১.০১ পূর্বাহ্ন


নিউজটি দেখেছেনঃ 608359 জন

  • নিউজটি দেখেছেনঃ 608359 জন
নতুন জাতের ‘জিএইউ ধান-৩’ উদ্ভাবন

গাজীপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৌলিতত্ত্ব ও উদ্ভিদ প্রজনন বিভাগের প্রজননবিদ অধ্যাপক ড. নাসরীন আক্তার আইভীর নেতৃত্বে গবেষণার মাধ্যমে একটি নতুন ধানের জাত উদ্ভাবিত হয়েছে। এ ধানের নাম দেওয়া হয়েছে ‘জিএইউ ধান-৩’।


বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তনের পর এটি প্রথম নতুন জাত হিসেবে নিবন্ধিত হয়েছে।


গাজীপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রিমিয়াম কোয়ালিটির নতুন এ জাতটি সুগন্ধিযুক্ত এবং জিঙ্ক সমৃদ্ধ, যা পুষ্টি ও মানের দিক থেকে এক ব্যতিক্রমী সংযোজন। এ উদ্ভাবনের মাধ্যমে গাজীপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভাবিত জাতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৯০টি, যা দেশের কৃষিতে নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করেছে।


দীর্ঘ ৪ বছরের গবেষণা ও ফলন পরীক্ষা শেষে ২০২১ ও ২০২২ সালে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে মাঠপর্যায়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়। পরে বীজ প্রত্যয়ন এজেন্সির প্রস্তাবিত ফলন পরীক্ষায় সন্তোষজনক ফলাফলের ভিত্তিতে জাতীয় বীজ বোর্ড ২০২৫ সালের ২০ এপ্রিল ‘জিএইউ ধান-৩’কে ছাড়পত্র দেয়।


এ ধানে আধুনিক উফশী ধানের সকল বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান। এতে রয়েছে অধিক জিঙ্ক ও লৌহ, যা মানুষের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি শরীরে হিমোগ্লোবিন তৈরি ও শক্তি উৎপাদনে সহায়ক। দানা চিকন, লম্বা ও সুবাসযুক্ত। জিএইউ ধান-৩ তুলনামূলক কম সময়ে পরিপক্ব হয়—আমন মৌসুমে প্রায় ৩ মাস এবং বোরো মৌসুমে সাড়ে ৩ মাস। ফলে অল্প সময়ে বেশি ফলন পেয়ে কৃষকরা লাভবান হবেন।


এ ধানের গাছের আকার বড়, কান্ড মোটা ও কুশির সংখ্যা বেশি, ফলে প্রচুর খড় উৎপন্ন হয় যা গবাদি পশুর খাদ্য চাহিদা পূরণে সহায়ক। সাধারণ জাতের তুলনায় গড়ে ১৫ শতাংশ বেশি ফলন দিয়ে থাকে, যা বাংলাদেশের মতো ধাননির্ভর দেশে এর উপযোগিতা বাড়িয়েছে। ফলন হেক্টরপ্রতি ৫ দশমিক ৫–৬ টন।


এতে অ্যামাইলেজ নামক এনজাইমের পরিমাণ ২৬ শতাংশ, যা শর্করা জাতীয় খাবার হজমে সাহায্য করে এবং সহজে শক্তি উৎপাদন করে। এছাড়া এতে উল্ল্যেখযোগ্য পরিমাণ জিঙ্ক থাকায় শিশু ও গর্ভবতী নারীদের জন্য বিশেষভাবে উপকারী। রান্নার সময় সুবাস ছড়িয়ে ভোক্তাদের কাছে এর চাহিদা বাড়াবে।


জলবায়ু সহনশীলতা ও রোগ-পোকা প্রতিরোধ ক্ষমতা থাকায় এটি দেশের বৈচিত্র্যময় পরিবেশে চাষের জন্য উপযোগী ও লাভজনক।


উদ্ভাবক ড. নাসরীন আক্তার আইভী বলেন, বিশ্বে খাদ্যের পরিমাণের পাশাপাশি গুণগত মানও গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশের অপুষ্টি ও খনিজ ঘাটতি দূর করতে জিঙ্ক সমৃদ্ধ ধান উদ্ভাবন এক সময়োপযোগী পদক্ষেপ। জিএইউ ধান-৩ কেবল একটি নতুন জাত নয়, এটি পুষ্টি, উৎপাদন ও কৃষকের আর্থিক উন্নয়নের মাঝে এক শক্ত সেতুবন্ধন। রপ্তানিযোগ্য এ জাতের মাধ্যমে দেশে পুষ্টিনির্ভর কৃষি বিপ্লবের সূচনা হয়েছে।


গাজীপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. জিকেএম মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, জিএইউ ধান-৩ আমাদের কৃষি গবেষণার গৌরবময় প্রতীক। ভবিষ্যতের খাদ্যনিরাপত্তা ও পুষ্টির জন্য এটি অপরিসীম অবদান রাখবে।


নিউজটি পোস্ট করেছেনঃ এলএসবিডি/হেনা

কমেন্ট বক্স
বাংলাদেশ | জাতীয়
দৈনিক লাল সবুজ বাংলাদেশ

স্টাফ রিপোর্টার | দৈনিক লাল সবুজ বাংলাদেশ
ঢাকা
রবিবার, ০১ জুন ২০২৫, ১.০১ পূর্বাহ্ন
আপডেট : রবিবার, ০১ জুন ২০২৫, ১.০১ পূর্বাহ্ন