আবাসন বৃত্তিসহ চার দফা দাবিতে চলমান আন্দোলনে নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে। এবার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) বর্তমান শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি আন্দোলনে একাত্মতা জানিয়েছেন সাবেক শিক্ষার্থীরাও। শুক্রবার (১৬ মে) সকাল থেকে রাজধানীর কাকরাইল মোড়ে ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও ছাত্র-ছাত্রীদের যৌক্তিক আন্দোলনে সংহতি প্রকাশ করছি’ লেখা ব্যানার নিয়ে যোগ দিয়েছেন অর্থনীতি বিভাগের অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যরা।
আন্দোলনের তৃতীয় দিনে ঢাকায় গড়ে উঠেছে একজোট প্রতিবাদের চিত্র। শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং অ্যালামনাই মিলিয়ে শত শত মানুষ সকাল থেকে কাকরাইল মোড়ে অবস্থান নিয়েছেন। সকাল ১০টা থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগ থেকে বাসে করে আন্দোলনকারীরা কাকরাইলে আসতে থাকেন।
‘লং মার্চ টু যমুনা’ পরিণত হচ্ছে গণআন্দোলনে: প্রসঙ্গত, গত ১৩ মে ইউজিসিতে দাবি উত্থাপন করে ব্যর্থ হয়ে ১৪ মে থেকে ‘লং মার্চ টু যমুনা’ কর্মসূচির ডাক দেয় জবি পরিবার। কাকরাইল মোড়ে পুলিশ-শিক্ষার্থী সংঘর্ষের পর থেকেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এলাকাটি। সেই ঘটনার প্রতিবাদে এবং দাবির পূর্ণ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আজ শুক্রবার (১৬ মে) থেকে গণঅনশন শুরু করছেন তারা।
অধ্যাপক রইছ উদ্দিনের হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, “আমরা ভয় পাই না, আন্দোলন চলবেই”। সকাল সাড়ে ১০টায় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মো. রইছ উদ্দিন এসময় বলেন, “সরকারের পক্ষ থেকে এখনো কেউ কথা বলতে আসেনি। আমরা অনড়—এই আন্দোলন কোনোভাবেই থামবে না। আমাকে তুলে নিলেও আন্দোলন চলবে। নেতৃত্বে অন্যরা প্রস্তুত।”
তিনি আরও বলেন, “আমাদের দাবি খুবই যৌক্তিক। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসন সংকট আজ দীর্ঘস্থায়ী সমস্যায় রূপ নিয়েছে। সরকার চাইলে আজই সমাধান সম্ভব।”
দাবিসমূহ সংক্ষেপে:
০১) ৭০% শিক্ষার্থীর জন্য আবাসন বৃত্তি চালু করতে হবে ২০২৫-২৬ অর্থবছর থেকে।
০২) ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত পূর্ণাঙ্গ বাজেট কাটছাঁট না করে অনুমোদন দিতে হবে।
০৩) দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ পরবর্তী একনেক সভায় অগ্রাধিকার প্রকল্প হিসেবে অনুমোদন ও বাস্তবায়ন করতে হবে।
চলমান অবস্থা ও সামনে কী?
জুমার নামাজের পর গণঅনশন শুরুর কথা রয়েছে। এই কর্মসূচিকে ঘিরে আন্দোলনকারীদের মধ্যে ব্যাপক প্রস্তুতি চলছে। ঢাকার কাকরাইল এখন ‘ছাত্র-শিক্ষক ঐক্যের নতুন কেন্দ্রবিন্দু’তে পরিণত হয়েছে।
সরকার এখনও পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি। তবে আন্দোলনকারীদের মতে, দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত এ কর্মসূচি চলতেই থাকবে।