তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি ও মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবিতে ‘জাগো বাহে তিস্তা বাঁচাই’ স্লোগানে ৪৮ ঘণ্টার কর্মসূচির ডাক দিয়েছে ‘তিস্তা নদীরক্ষা আন্দোলন’ নামে একটি সংগঠন। পানিশূন্য নদীর বুকে তিস্তা বিধৌত উত্তরের পাঁচ জেলার লাখো মানুষের ওই কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ার কথা। আলোচিত এই কর্মসূচি পালনের ঠিক দুদিন আগে আকস্মিকভাবে ধূ ধূ বালুচরে দেখা গেছে উজানের ঢল।
শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) রাত ৯টার দিকে লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী শুনীল কুমার বলেন, নদীর পানি কিছুটা বেড়েছে। তবে এতে কোনো ক্ষতি হবে না। তাছাড়া পানি নিয়ন্ত্রণ করতে জলকপাট বন্ধ রাখা রয়েছে।
দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজ এলাকায় দেখা যায়, উজান থেকে আসা পানিতে বন্ধ থাকা জলকপাটগুলো দিয়ে উপচে পড়ছে পানি। এর মধ্যে ১ নম্বর জলকপাটটি খুলেও রাখা হয়েছে। এ অবস্থায় ব্যারাজের খানিকটা দূরে মূল নদীতে শনিবার সকালেও যেখানে ছিল ধূ ধূ বালুচর, সেখানে বিকেল থেকে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। আকস্মিকভাবে পানি প্রবাহের খবরে অনেকেই ভিড় করেছেন নদীপাড়ে। ব্যারাজের পূর্ব দিকে শুকনো নদীতে যেখানে নদীরক্ষা আন্দোলনের মঞ্চ তৈরি হচ্ছে, সেখানেও এখন ছুঁই ছুঁই করছে পানি। তিস্তা তীরবর্তী বাসিন্দারা জানান, বিগত দিন থেকেই পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত এ ধরনের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের এ কার্যক্রমের ফলে অনেক ফসলে জমি নষ্ট হয়ে যায়।
মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে যখন বাংলাদেশের ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা আন্দোলন করছেন, ঠিক তখনই তিস্তায় পানি ছেড়ে দিয়েছে ভারত সরকার। তারা মনে করেছে, তিস্তায় পানি ছাড়লে এই আন্দোলনটি বন্ধ হয়ে যাবে। কিন্তু দেশের মানুষ কখনোই হারতে শিখেনি। আগামী ১৭ এবং ১৮ ফেব্রুয়ারি জনতার সমাবেশ অবশ্যই সফল করবে তিস্তা তীরবর্তী বাসিন্দারা। সমাবেশে অংশ নেওয়া রমজান আলী বলেন, ‘রংপুর অঞ্চলে এই সমাবেশ ঘিরে সব দলমত নির্বিশেষে অংশ নিতে যাচ্ছে জনগণ। আর এতেই ভারতের মাথা নষ্ট হয়ে গেছে। তবে আমরা সমাবেশ সফল করে মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করব -ইনশাআল্লাহ।
উল্লেখ্য, আগামী ১৭ ও ১৮ ফেব্রুয়ারি লালমনিরহাট, নীলফামারী, রংপুর, কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধা জেলায় তিস্তা তীরবর্তী ১১টি স্থানে লাখো মানুষ ৪৮ ঘণ্টা অবস্থান করবে। এ সময়ের মধ্যে তিস্তার অবস্থা বিশ্ববাসীকে জানাতে রাতে জ্বালানো হবে হাজার হাজার মশাল। এছাড়াও নানা কর্মসূচি রয়েছে। আর কর্মসূচিতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে। কর্মসূচিতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত থাকবেন বলে জানিয়েছেন বিএনপির রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও তিস্তা নদীরক্ষা আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক অধ্যক্ষ আসাদুল হাবিব দুলু।