চট্টগ্রামে চলতি বছরে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে ৮৮ শতাংশের শরীরে শনাক্ত হয়েছে ডেন-২ ভাইরাসের উপস্থিতি, আর ১১ শতাংশের মধ্যে রয়েছে ডেন-৩। গত বছরের ডেঙ্গু রোগীদের জিনোম সিকুয়েন্স বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ৫০ শতাংশ রোগী ‘বিপদজনক কসমোপলিটন’ প্রকরণের শিকার— যা রোগের তীব্রতা ও জটিলতা বৃদ্ধির জন্য দায়ী।
আইসিডিডিআরবি, চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড বায়োটেকনোলজি বিভাগের সহযোগিতায় এসপেরিয়া হেলথ রিসার্চ ফাউন্ডেশনের তত্ত্বাবধানে চলমান এই গবেষণার ফলাফল সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে।
গবেষকেরা ধারণা করছেন, কসমোপলিটান প্রকরণের কারণেই চট্টগ্রামে ডেঙ্গু রোগীদের হাসপাতালে ভর্তির হার ও মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। গত বছর ৬৯ শতাংশ রোগী ডেন-২ তে আক্রান্ত ছিল, যেখানে এই বছর তা বেড়ে ৮৮ শতাংশে পৌঁছেছে।
চট্টগ্রামের পাঁচটি এলাকা— বাকলিয়া, চকবাজার, কোতয়ালি, ডবলমুরিং ও বায়েজিদ বোস্তামী—কে ডেঙ্গুর হটস্পট হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে, যেখানে ৬০ শতাংশ রোগীর আবাসস্থল। গ্রামীণ এলাকাগুলো থেকেও সীতাকুন্ড, হাটহাজারী, পটিয়া, বোয়ালখালী ও কর্ণফুলী থেকে বেশি রোগী শনাক্ত হয়েছে।
গবেষকরা মনে করছেন, বাংলাদেশে নতুন এই কসমোপলিটান লিনিয়েজের উৎপত্তি পর্যটক ও রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশকারীদের মাধ্যমে হয়েছে। তাদের বিশ্লেষণ অনুযায়ী, এই ভাইরাসের অস্তিত্ব ডেঙ্গুর তীব্রতা ও মৃত্যুহার বাড়াচ্ছে।
গবেষণার ফলাফল আন্তর্জাতিক জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে এবং জিনোম সিকুয়েন্সিংয়ের তথ্য বিশ্বের গ্লোবাল ইনিশিয়েটিভ অন শেয়ারিং অল ইনফ্লুয়েঞ্জা ডেটার (জিআইএসএআইডি) ডেটাবেসে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। গবেষকরা মনে করেন, ডেঙ্গুর বিস্তার নিয়ন্ত্রণে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন।