দেশের ব্যবসা পরিবেশ নিয়ে নতুন একটি উদ্বেগজনক খবর এসেছে। গত দুই মাসে (আগস্ট ও সেপ্টেম্বর) সিটি গ্রুপ, বিএসআরএম, ইউএস-বাংলাসহ বেশ কয়েকটি দেশি ও বিদেশি প্রতিষ্ঠান প্রায় দেড় শতাধিক কোম্পানি বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর ফলে লক্ষ লক্ষ মানুষ কর্মসংস্থানের ঝুঁকিতে পড়ছে এবং দেশের অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
কোম্পানিগুলোর তথ্য অনুযায়ী, এসব প্রতিষ্ঠান স্থায়ীভাবে বন্ধ হচ্ছে। ইতিমধ্যেই ১৬০টি কোম্পানি বন্ধের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। তালিকায় রয়েছে ছোট প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে বড় কোম্পানিও। জাতীয় নিবন্ধন দফতরের (আরজেএসসি) তথ্যে জানা গেছে, গত পাঁচ মাসে ১২৮টি কোম্পানি বন্ধ হয়েছে, যার মধ্যে আগস্টেই ৪৬টি কোম্পানি বন্ধ হয়েছে। রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং বন্যার কারণে শিল্প, পর্যটন, কৃষি ও সেবা খাতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
বন্ধ হওয়ার তালিকায় উল্লেখযোগ্য কোম্পানিগুলি
সিটি গ্রুপ ৩০টি কোম্পানি বন্ধ করতে যাচ্ছে, যার মধ্যে রয়েছে সিটি হেয়ার অয়েল, সিটি বিস্কুট, এবং আরও অনেক। ইউএস-বাংলা গ্রুপও পাঁচটি কোম্পানি বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এছাড়া বিএসআরএম গ্রুপের রিসাইক্লিং ইন্ডাস্ট্রিজ এবং আরও কিছু কোম্পানি অবসায়নের প্রক্রিয়ায় রয়েছে। বিভিন্ন খাতের কোম্পানিগুলোও এই তালিকায় রয়েছে, যেমন স্বাস্থ্য সেবা, নির্মাণ, ও খাদ্য উৎপাদন।
ব্যবসায়ীদের মতামত
এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি মীর নাসির হোসেন বলেন, "দেশের অর্থনীতি সংকটের মধ্যে রয়েছে। বেশ কিছু কোম্পানি সমস্যা কাটাতে পারলেও অনেকেই এখনও টিকে থাকতে পারছে না।"
অন্যদিকে ঢাকা চেম্বারের সাবেক সভাপতি আবুল কাশেম খান জানান, কোম্পানি বন্ধ করা এবং নতুন কোম্পানি খোলা ব্যবসার নিয়মিত অংশ। তিনি আশাবাদী যে, বাংলাদেশ একটি সম্ভাবনাময় দেশ এবং অচিরেই বিনিয়োগ বৃদ্ধি পাবে।
পরিস্থিতির কারণ
বিশ্লেষকদের মতে, মূল্যস্ফীতির চাপ, উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি, সুদের উচ্চ হার, শ্রম অসন্তোষ, এবং কাঁচামালের সংকটসহ নানা কারণে ব্যবসায়ীরা চাপে রয়েছেন। তবে তারা আশাবাদী যে, এই অবস্থা দীর্ঘস্থায়ী হবে না।