ভারতের ঝাড়খণ্ড রাজ্যে আসন্ন নির্বাচনের আগে, বিজেপি নেতারা বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের প্রসঙ্গ তুলে আনছেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সম্প্রতি এক জনসভায় মন্তব্য করেছেন, রাজ্যে এই অনুপ্রবেশকারীদের সংখ্যা ক্রমাগত বাড়ছে।
এর আগে, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রাজনাথ সিং ও অমিত শাহসহ বিজেপির শীর্ষ নেতারা এই বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন, দাবি করে যে, বাংলাদেশের অনুপ্রবেশকারীরা আদিবাসীদের সংখ্যাকে সংকুচিত করছে। তারা এমন আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন যে, আদিবাসী জনগণ অদূর ভবিষ্যতে সংখ্যালঘু হয়ে পড়বে।
অমিত শাহ বাংলাদেশের সরকারকে ‘উইপোকা’ অভিহিত করেছেন এবং তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি দিয়েছেন। বাংলাদেশ সরকার অবশ্য এ ধরনের মন্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে এবং প্রতিবাদ জানিয়েছে।
মোদির বক্তব্যের মূল বিষয়বস্তু
মোদি তার বক্তব্যে বলেন, বর্তমান সরকার ঝাড়খণ্ডের পরিচয় ও আদিবাসী সংস্কৃতিকে পরিবর্তন করতে চাচ্ছে। তিনি প্রশ্ন তুলেন, জনবিন্যাসের এই পরিবর্তন কি সত্যি? তিনি বলেন, "ঝাড়খণ্ডে আদিবাসী এবং হিন্দুদের সংখ্যা কমছে, কিন্তু অনুপ্রবেশকারীদের সংখ্যা বাড়ছে।"
বিজেপির অভিযুক্ত আচরণ
ঝাড়খণ্ডের ক্ষমতাসীন জোটের নেতারা দাবি করেছেন, বিজেপি বারবার বাংলাদেশি অনুপ্রবেশের বিষয়টি তুলে এনে আদিবাসীদের মধ্যে বিভাজনের চেষ্টা করছে। তারা প্রশ্ন করেছেন, ২৪ বছরের রাজ্যের ইতিহাসে, যেখানে ১৬ বছর বিজেপি ক্ষমতায় ছিল, তখন কেন এই বিষয়টি সামনে আনা হয়নি?
অ্যাক্টিভিস্ট দয়ামণি বার্লা বলেন, "এখন যদি অনুপ্রবেশ ঘটে থাকে, তাহলে কেন বিজেপি সরকার তা আটকাতে পারেনি?" তিনি আরও বলেন, আদিবাসীদের জমি দখল হচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকারের ঘনিষ্ঠ শিল্পপতিদের দ্বারা, কিন্তু বিজেপি সেই বিষয়টি লুকিয়ে রাখছে।
রাজনৈতিক উদ্দেশ্য?
বিশ্লেষকরা মনে করেন, বিজেপি এই সময়ে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশের বিষয়টি সামনে এনে আসলে হিন্দু ভোটব্যাংক মেরুকরণের চেষ্টা করছে। বাংলাদেশের মুসলমানদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলার মাধ্যমে, তারা নিজেদের রাজনৈতিক লক্ষ্য সাধনে সচেষ্ট।
বিজেপি দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বাংলাদেশি ‘অনুপ্রবেশকারী’ শব্দটি ব্যবহার করে মুসলমানদের লক্ষ্যমাত্রা বানাচ্ছে, যা রাজনৈতিক প্রচারের একটি অংশ।