ঢাকা
খ্রিস্টাব্দ

মোনালিসা বিশ্বখ্যাত হওয়ার নেপথ্যে

দৈনিক লাল সবুজ বাংলাদেশ

অনলাইন ডেস্ক | দৈনিক লাল সবুজ বাংলাদেশ
ঢাকা
সোমবার, ০৬ জানুয়ারি ২০২৫, ১০.২৯ পূর্বাহ্ন

আপডেট : সোমবার, ০৬ জানুয়ারি ২০২৫, ১০.২৯ পূর্বাহ্ন


নিউজটি দেখেছেনঃ 1158317 জন

  • নিউজটি দেখেছেনঃ 1158317 জন
মোনালিসা বিশ্বখ্যাত হওয়ার নেপথ্যে

ঠোঁটের কোণে বিষাদ মেশানো মৃদু হাসি। মায়াময় দুটি চোখ। অনাড়ম্বর সাজপোশাক। লিওনার্দো দা ভিঞ্চি তাঁর অনন্য সৃষ্টি ‘মোনালিসা’কে এভাবেই ফুটিয়ে তুলেছেন তুলির আঁচড়ে।


 

৫০০ বছরের বেশি সময় আগে আঁকা এই চিত্রকর্ম থেকে আজও চোখ ফেরানোর উপায় নেই। রেনেসাঁ যুগের চিত্রশিল্পী লিওনার্দো দা ভিঞ্চির আঁকা এই ছবিই সম্ভবত বিশ্বের সবচেয়ে আলোচিত চিত্রকর্ম।


যুগে যুগে আরো অনেক শিল্পীই এমন ছবি এঁকেছেন, যা শিল্পগুণের দিক থেকে ‘মাস্টারপিস’। কিন্তু সেসব চিত্রকর্মের চেয়ে মোনালিসার ছবি অনেক বেশি বিখ্যাত এবং পরিচিত। মোনালিসার বিখ্যাত হওয়ার কারণ নিয়ে যুগ যুগ ধরে কম আলোচনা হয়নি।

বিশ্লেষকরা বলছেন, কেবল শিল্পগুণই নয়, ছবিটির সঙ্গে জড়িয়ে থাকা রহস্য এবং একাধিক ঘটনা এটিকে বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় চিত্রকর্মগুলোর একটি করার পেছনে ভূমিকা রেখেছে।


কথিত আছে, ১৫০৩ থেকে ১৫১৭ সাল পর্যন্ত বিখ্যাত এই ছবি আঁকেন লিওনার্দো দা ভিঞ্চি। গবেষণাভিত্তিক অলাভজনক সংবাদমাধ্যম দ্য কনভার্সেশনে প্রকাশিত একটি প্রবন্ধে বলা হয়েছে, মোনালিসার ছবিটি আঁকা হয়েছিল একজন সিল্ক ব্যবসায়ীর অনুরোধে।


 

ইতালিতে যেকোনো নারীকে ‘মোনা’ বলে সম্বোধন করা হতো। আর ছবিতে থাকা নারীর নাম লিসা। শব্দ দুটি মিলিয়ে ছবিটির নাম হয় ‘মোনালিসা’। তবে ছবিটি আসলেই তাঁর ছিল কি না, এ নিয়েও আছে বিতর্ক।


ছবিটির সঙ্গে লিওনার্দোর চেহারার অনেক বৈশিষ্ট্যের মিল থাকায় অনেকেই মনে করেন, এটি আসলে শিল্পীর নিজেরই ছবি। আবার অনেকের ধারণা, এটি লিওনার্দোর মা কিংবা তাঁর বান্ধবীর পোর্ট্রেট।

সর্বশেষ ২০১৫ সালে প্রচলিত সব তত্ত্বকে চ্যালেঞ্জ করেন প্যারিসের বিজ্ঞানী পাসকাল কোট। ১০ বছর ধরে গবেষণার পর এই গবেষক দাবি করেন, পোর্ট্রেটের রহস্যময়ী এই নারী অন্য কেউ ছিলেন। তবে লিওনার্দোকে নিয়ে যাঁরা গবেষণা করেছেন তাঁদের অনেকেই নতুন তত্ত্বটিকে তেমন গুরুত্ব দেননি। ইতিহাস, দর্শন ও শিল্প নিয়ে কাজ করা প্ল্যাটফরম দ্য কালেক্টর বলছে, ১৮০৪ সাল থেকে চিত্রকর্মটি ল্যুভর জাদুঘরে আছে।


 

আইন অনুসারেই ছবিটি ফরাসি নাগরিকদের। ফলে এটি বিক্রি করা অত্যন্ত কঠিন। সব মিলিয়ে এর দাম নির্ধারণ করা প্রায় অসম্ভব।


তবে ১৯৬২ সালে যখন একে ইনস্যুরেন্সের অধীনে আনা হয়, তখন এর মূল্য ধরা হয়েছিল ১০ কোটি ডলার, মূল্যস্ফীতির হিসাব ধরেই বর্তমানে যার বাজারমূল্য হতে পারে ৮৩ কোটি ডলারের বেশি।


এদিকে ২০২০ সালে ফরাসি উদ্যোক্তা স্টিফেন ডিস্টিংগুইন বলেছিলেন, মহামারির বিপর্যয়কর প্রভাব থেকে ফ্রান্সকে পুনরুদ্ধারে ‘মোনালিসা’কে বিক্রি করা যেতে পারে। আর ছবিটি যে পরিমাণ রাজস্ব এনেছে তার পরিপ্রেক্ষিতে এর দাম পাঁচ হাজার কোটি ডলার পর্যন্ত উঠতে পারে বলেও সে সময় মন্তব্য করেন তিনি। তবে দাম নিয়ে তাঁর এই মত খারিজ করে দেন শিল্পসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।


 

চিত্রকর্মটি নিয়ে সবচেয়ে আলোচিত বিষয়গুলোর একটি হলো মোনালিসার হাসি। এতে লিওনার্দো এমনভাবে রঙের ব্যবহার করেছেন, যাতে করে ছবির নারীর হাসিতে এক ধরনের রহস্যময়তা ফুটে উঠেছে। সাধারণভাবে তাকালে যেখানে মনে হয় চিত্রকর্মের নারীটি হাসছেন, আবার হাসির দিকে একনজরে তাকিয়ে থাকলে সেই হাসি যেন ক্রমেই মিলিয়ে যায়।


রঙের আঁচড়ে দৃষ্টির এই বিভ্রম তৈরি ছাড়াও মোনালিসার ছবি এমনভাবে আঁকা হয়েছে যে চিত্রকর্মটির যেদিকেই দাঁড়ানো হোক না কেন, মনে হয় ছবিটির চোখ সেদিকেই তাকিয়ে রয়েছে।


এর আগেও এই পদ্ধতিতে একাধিক ছবি আঁকা হলেও মোনালিসার জনপ্রিয়তার সঙ্গে সঙ্গে এই পদ্ধতির নামই হয়ে গেছে ‘মোনালিসা ইফেক্ট’।


নিউজটি পোস্ট করেছেনঃ এলএসবিডি/হেনা

কমেন্ট বক্স
বাংলাদেশ | আরও
দৈনিক লাল সবুজ বাংলাদেশ

অনলাইন ডেস্ক | দৈনিক লাল সবুজ বাংলাদেশ
ঢাকা
সোমবার, ০৬ জানুয়ারি ২০২৫, ১০.২৯ পূর্বাহ্ন
আপডেট : সোমবার, ০৬ জানুয়ারি ২০২৫, ১০.২৯ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ সংবাদ