রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলা নির্বাচনে উপজেলার একটি কেন্দ্রে প্রকাশ্যে ভোট দেওয়ার একটি ভিডিও সামাজিকমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ভোট কেন্দ্রের ভেতরে মোবাইল ফোন নিয়ে প্রবেশ করে ভিডিও ধারণের অভিযোগে এক যুবককে আটক করেছে পুলিশ।
এ ঘটনার জেরে বুধবার সন্ধ্যায় রাজশাহীর জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ ও রাজশাহীর পুলিশ সুপার মো. সাইফুর রহমান উপজেলা পরিষদের সামনে যৌথভাবে ব্রিফিং করেছেন।
ভোট কেন্দ্রে জালভোট দেওয়ার ঘটনাটির তদন্ত শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন রাজশাহী জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার। তারা বলেছেন, এটি জালভোটের ঘটনা নয়। হামিম নামের যুবক নিজের ভোট দেওয়ার সময় ভিডিও করে সামাজিকমাধ্যমে ছেড়েছেন। তবে এমন কাজ নির্বাচনি আইনে অপরাধ। তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
পুলিশ ও প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, বুধবার দুপুর ২টার দিকে এমডি হামিম হোসেন এসপি নামের ফেসবুক আইডি থেকে প্রকাশ্যে ভোট দেওয়ার একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে নেটদুনিয়ায়। ঘটনাটি প্রশাসন ও পুলিশের নজরে আসে। তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় আইডিটিকে শনাক্ত করে হামিম নামের এক যুবককে গোদাগাড়ী উপজেলার গোগ্রাম ইউনিয়নের নিমতলা এলাকা থেকে আটক করা হয়। গোদাগাড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে নিয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের ব্রিফিং শেষে তাকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
এদিকে ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা গেছে, ওই যুবক খোলা ব্যালট পেপার নিয়ে চেয়ারম্যান প্রার্থী বেলাল উদ্দিন সোহেলের দোয়াত কলমে সিল মারছেন। পাশাপাশি ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী সালমান ফয়সাল ফিরোজের টিয়াপাখি এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান কৃষ্ণা দেবির ফুটবল প্রতীকে সিল মারছেন।
জানা গেছে, আটক যুবকের বাড়ি গোদাগাড়ীর গোগ্রাম ইউনিয়নের নিমতলা গ্রামে। জিজ্ঞাসাবাদে সে বলেছে চেয়ারম্যান প্রার্থী বেলাল সোহেলকে ভোট দিয়েছেন এটা নিশ্চিত করতেই তিনি মোবাইল লুকিয়ে মোবাইল ফোন নিয়ে বুথের ভেতরে ঢুকেছিল। ভিডিও করে ফেসবুকে ছেড়েছেন।
গোদাগাড়ী থানার ওসি আব্দুল মতিন জানান, উপজেলার গোগ্রাম ইউনিয়নের নিমতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের দুই নম্বর বুথে সিল দিয়ে ভিডিও করার ঘটনা ঘটেছে। পরে এমডি হামিম তার নিজে ফেসবুক আইডি থেকে পোস্ট করেছেন। বুথের ভেতরে মোবাইল ফোন নেওয়া নিষিদ্ধ। ভোট প্রদানের দৃশ্য ভিডিও করাও অপরাধ। এক্ষেত্রে হামিম নির্বাচনি আইন লঙ্ঘন করে অপরাধ করেছেন। হামিম কেন এমনটা করেছেন তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। পোলিং বুথের দায়িত্বে নিয়োজিত কর্মকর্তাদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। হামিমের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
এদিকে প্রকাশ্যে ভোট দেওয়ার অভিযোগে উপজেলার দেওপাড়া ইউনিয়নের সব কেন্দ্রের ভোট বাতিল করে নতুন করে ভোট গ্রহণের দাবি করেছেন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী রবিউল আলম। তিনি রিটার্নিং অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।