চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার জোরারগঞ্জ থানার অন্তর্গত খিলমুরালী ইউনিয়নে কিশোর গ্যাংয়ের তাণ্ডবে চরম আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। দিনের বেলা লোকজন চলাফেরা করলেও সন্ধ্যার পরই নেমে আসে নীরবতা। এলাকাবাসীর অভিযোগ, একটি সংঘবদ্ধ সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হঠাৎ করে যেকোনো ব্যক্তিকে অপহরণ করে নির্যাতন চালায় এবং মোটা অঙ্কের চাঁদা দাবি করে। নিরাপত্তার অভাবে এবং প্রতিশোধের ভয়ে অধিকাংশ ভুক্তভোগী থানায় মুখ খুলতে সাহস পান না।
এই পরিস্থিতিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি বড় সাফল্য আসে সম্প্রতি। গত ৯ আগস্ট রাত ২টার দিকে র্যাব-৭, চট্টগ্রাম ও র্যাব-১৫, কক্সবাজার এর যৌথ আভিযানিক দল কক্সবাজার সদর থানার লাবনী পয়েন্ট এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানে ২৩টি মামলা, যার মধ্যে রয়েছে হত্যা, অস্ত্র, চাঁদাবাজি, দস্যুতা, ডাকাতি ও বিস্ফোরক আইনের মামলাসহ এজাহারনামীয় পলাতক আসামি এবং কিশোর গ্যাং লিডার মো. হকসাব (২৭) -কে ২টি আগ্নেয়াস্ত্রসহ গ্রেফতার করা হয়।
একই অভিযানে আরও গ্রেফতার হন মেহেদীনগর গ্রামের ইউসুফ ওরফে ডাক্তার (২৬), খিলমুরালীর মো. আবু সাইদ (২৭) এবং পূর্ব হিঙ্গুলীর কদমতলা এলাকার এমরান হোসেন (২৭)। গ্রেফতারকৃতদের পরবর্তীতে র্যাব-৭, ফেনী ক্যাম্পে হস্তান্তর করা হয়।
র্যাব এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, হকসাবের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তার গোপন হেফাজত থেকে দুটি ওয়ান শুটার গান এবং চারটি কার্তুজ উদ্ধার করা হয়। তার বিরুদ্ধে অস্ত্র, মাদকসহ মোট ২৪টি মামলা রয়েছে এবং এর মধ্যে একটি মামলায় তিনি এক বছরের সাজাপ্রাপ্ত আসামি।
জোরারগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আবদুল হালিম বলেন, “আমরা থানা এলাকাকে সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজিমুক্ত করতে নিয়মিত বিশেষ অভিযান পরিচালনা করছি। জনসাধারণ সহযোগিতা করলে এই অভিযান আরও কার্যকর ও সফল হবে।” তিনি আরও জানান, গ্রেফতারকৃতদের আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে, এই চাঞ্চল্যকর গ্রেফতারের ঘটনায় এলাকাবাসীর মধ্যে কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে। তারা আশা করছেন, এ ধরনের ধারাবাহিক অভিযানের মাধ্যমে অবশেষে খিলমুরালী ও আশপাশের এলাকায় শান্তি ও নিরাপত্তা ফিরে আসবে।