ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের রোডম্যাপ দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রকাশের দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছেন একদল শিক্ষার্থী। গতকাল রোববার বেলা ১১টার দিকে উপ-উপাচার্যের কার্যালয়ে গিয়ে স্মারকলিপিটি জমা দেন তারা।
এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. সাইফুদ্দিন আহমেদ উপস্থিত ছিলেন। স্মারকলিপিতে বলা হয়, অভ্যুত্থানের প্রায় ৮ মাস পেরিয়ে গেলেও ডাকসু নির্বাচনের রূপরেখা আমরা আজও পাইনি। ডাকসুর রূপরেখার দাবিতে আমরা দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছি কিন্তু অত্যন্ত দুঃখজনক হলেও সত্য, ডাকসু নির্বাচন নিয়ে একধরনের ভয়াবহ গড়িমসি লক্ষ্য করছি আমরা।
স্মারকলিপিতে উল্লেখ করেন, ফেব্রুয়ারি এবং মার্চে ডাকসু নির্বাচনের দাবিতে অনেকদিন ধরে ধারাবাহিকভাবে আন্দোলন করেছি। জানুয়ারির মাঝামাঝিতে আমাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে উপাচার্য বলেছিলেন কয়েকদিনের মধ্যে ইন্সটিটিউশনাল ই-মেইলের মাধ্যমে ডাকসুর গঠনতন্ত্র এবং ডাকসু নির্বাচন বিষয়ে শিক্ষার্থীদের মতামত গ্রহণ করবেন। কিন্তু সেটি গ্রহণ করতে প্রশাসনের ২ মাসের বেশি সময় লেগেছে— মার্চের শেষে এসে এই মতামত গ্রহণ করা হয়।
আমরা গত আগস্টে শুনেছিলাম ৩ থেকে ৪ মাসের মধ্যে ডাকসু নির্বাচন আয়োজন করা হবে অথচ ৮ মাস অতিবাহিত হওয়ার পরেও এখনও ডাকসু নির্বাচনের কোনও রোডম্যাপই আমরা পাইনি। যেখানে রাবি এবং জাবিতে ইতোমধ্যেই তাদের ছাত্রসংসদ নির্বাচনের রূপরেখা ঘোষণা করেছে। বাংলাদেশের এই স্বাধীনতাকে চিরস্থায়ী করতে, পতিত স্বৈরাচারের উত্থান রুখে দিতে এবং নব্য স্বৈরাচার প্রতিরোধ করতে, দেশের মানুষের গণ-অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে, স্থায়ীভাবে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ সম্মত ক্যাম্পাস বিনির্মাণ করতে, লেজুরবৃত্তিক ভয়াবহ দলীয় ছাত্র রাজনীতি থেকে ক্যাম্পাস নিরাপদ রাখতে ও শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায় করতে ডাকসুর বিকল্প নেই।
স্মারকলিপি দেওয়া শেষে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী মুসাদ্দিক আলী ইবনে মোহাম্মদ বলেন, ডাকসু নির্বাচন নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে আমরা নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন করে আসছি। জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি, মার্চ মাসজুড়ে বারবার স্মারকলিপি, মিছিল এবং প্রশাসনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছি। জানুয়ারিতে উপাচার্য বলেছিলেন, ই-মেইলের মাধ্যমে মতামত নেওয়া হবে।অথচ মার্চের শেষ নাগাদ গিয়ে তা শুরু হয়। এটি প্রশাসনের চরম গড়িমসি প্রমাণ করে। আরবি বিভাগের শিক্ষার্থী এবি জুবায়ের বলেন, ৫ আগস্টের পর থেকেই আমরা সুস্থ রাজনৈতিক চর্চার প্ল্যাটফর্ম হিসেবে ডাকসুর পুনরুজ্জীবনের দাবি জানিয়ে আসছি। কিন্তু প্রশাসন এখনও কার্যকর কোনও পদক্ষেপ নেয়নি। তাই আবার স্মারকলিপি দিয়েছি। এবার রোডম্যাপ চাই— সময়ক্ষেপণ আর বরদাশত করা হবে না।