চট্টগ্রাম মহানগরে ফের প্রকাশ্যে ঝটিকা মিছিল করলো নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগ। শনিবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে নগরের ডবলমুরিং থানার পাঠানটুলি সড়কের নাজিরপোল মিড পয়েন্ট হাসপাতালের সামনে দিয়ে মিছিলটি কদমতলির দিকে যায়। দুদিন আগেই চট্টগ্রাম নগরের জিইসি মোড়ে ঝটিকা মিছিল করেছেন নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। ওই ঘটনায় পাঁচজনকে গ্রেফতারের পাশাপাশি বরখাস্ত করা হয় কর্তব্যরত এক উপপরিদর্শককেও। চট্টগ্রাম নগর পুলিশ (সিএমপি) কমিশনারের কড়া বার্তা ছিল, ভবিষ্যতে এ ধরনের মিছিল তারা (ছাত্রলীগ) করতে পারবে না। এর একদিনের মাথায় আবার মিছিল করেছে সংগঠনটি।
তবে পুলিশ বলছে, তন্ন তন্ন করে খুঁজেও মিছিল করার কোনো হদিস পাওয়া যায়নি। এমনকি তাদেরকে মিছিল করতে দেখেছে এমন কোনো সাক্ষীও পায়নি। আপাতদৃষ্টিতে ভিডিওটি ফেক হিসেবেই ধরে নিচ্ছেন পুলিশ কর্মকর্তারা। গুগল ম্যাপ ঘেঁটে ভিডিওর সাথে ক্রসচেক করে পুলিশের মনে হয়েছে মিছিলটি পুরোনো। ইচ্ছাকৃতভাবে আওয়ামী লীগ গুজব ছড়াচ্ছে।
তবে ভিডিও দেখে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মিছিলটি শনিবার সকালেই হয়েছে। এতে নেতৃত্ব দিয়েছেন ডবলমুরিং থানা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাকিব হায়দার। সকাল ৭টা ২০ মিনিটের দিকে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের নিয়ে তিনি মিছিলটি করেন।
শনিবার বিকেলে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ফেসবুক পেজে পোস্ট করা মিছিলের ৫২ সেকেন্ডের একটি ভিডিও পোস্ট করা হয়েছে। ভিডিওর ক্যাপশনে লেখা হয়েছে, অবৈধ ইউনূসের বিরুদ্ধে ডবলমুরিং থানা ছাত্রলীগ আয়োজিত চট্টগ্রাম নগরীর পাঠানটুলী রোডে মিছিল।
ভিডিওতে দেখা গেছে, আনুমানিক ১৫ জন ছাত্রলীগের নেতাকর্মী পাঠানটুলি সড়কে হেঁটে মিছিলটি করেন। তারা ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’, ‘শেখ হাসিনা আসবে, বাংলাদেশ হাসবে’, ‘তুমি কে আমি কে, বাঙালি বাঙালি’ ইত্যাদি স্লোগান দিচ্ছিলেন। এ সময় বেশিরভাগ কর্মীর মুখে মাস্ক আবার অনেকের মাথায় হেলমেটও দেখা গেছে। মিছিলে নেতৃত্ব দেওয়া রাকিব হায়দার লাল রঙের একটি সোয়েটার পড়ে ছিলেন।
এ বিষয়ে ডবলমুরিং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী রফিকুল ইসলাম বলেন, মিছিলের একটি ভিডিও দেখেছি। দেখার পর ওই এলাকায় আমি টিম পাঠিয়েছিলাম। তারা তন্ন তন্ন করে খুঁজেও মিছিলের কোনো প্রমাণ পায়নি। স্থানীয়দের সাথেও কথা বলে মিছিল স্বচক্ষে দেখেছে এমন সাক্ষীও পাওয়া যায়নি।
এক প্রশ্নের জবাবে ওসি বলেন, আমার আভিযানিক দল আরও কাজ করছে। সিসিটিভি ফুটেজ চেক করছে। আমরা ম্যাপও দেখেছি, সড়কের সাথে ভিডিওর মিল পাচ্ছি না। সারারাত আমাদের লোকজন, আমরা বাইরে ছিলাম। এরপরেও কোন ফাঁকে এসে ব্যানার ছাড়া ১০-১২ জন মিছিল করেছে। এখনো আমরা ভিডিওটিকে ফেইক হিসেবে ধরে নিচ্ছি। এটি আগেরও হতে পারে।