রাজধানীর কাকরাইলে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আগুন দিয়েছে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা। এসময় কার্যালয়টি ভাঙচুর করা হয়। দলটির সঙ্গে কয়েকদিন ধরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রআন্দোলনের উত্তেজনার মধ্যেই এ ঘটনা ঘটল। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীদের সঙ্গে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার এক পর্যায়ে কার্যালয়টিতে আগুন দেয় ছাত্র-জনতা।
এসময় উত্তেজিত ছাত্ররা আওয়ামী লীগের দোসর জাতীয় পার্টির রাজনীতি নিষিদ্ধ করার দাবিতে নানান স্লোগান দিতে থাকেন। তারা কার্যালয়ের দেওয়ালে লাগানো জাতীয় পার্টির সাইনবোর্ড ভেঙে ফেলেন। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ছাত্রদের দখলে রয়েছে কার্যালয়টি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সন্ধ্যা ছয়টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ছাত্র বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের একটি মিছিল জাপা কাকরাইল কার্যালয়ের সামনে দিয়ে যেতে থাকলে কার্যালয়ের সামনে উপস্থিত থাকা কয়েকজন নেতাকর্মী মিছিলে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। এরপরই শুরু হয় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া। একপর্যায়ে ঢাবি থেকে বিপুলসংখ্যক ছাত্র ঘটনাস্থলে এসে উপস্থিত হয়ে কার্যালয়ে আগুন ধরিয়ে দেন। এসময় জাপা নেতাকর্মীরা প্রতিহত করার চেষ্টা করলে লাঠিসোটা নিয়ে ছাত্ররা তাদের ধাওয়া দিলে কাকরাইল ছেড়ে চলে যান নেতাকর্মীরা।
এসময় বিপুলসংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন করা হলেও ছাত্রদের নির্বৃত্ত করতে ব্যর্থ হন তারা। এক পর্যায়ে পুলিশ নিরব ভূমিকায় দাঁড়িয়ে থাকে।
এদিকে খবর পেয়ে সাড়ে সাতটার দিকে ফায়ার সার্ভিসের একাধিক গাড়ি আগুন নেভাতে আসে। এসময় ফায়ার সার্ভিসের গাড়িকেও উত্তেজিত ছাত্ররা কার্যালয়ে সামনে ঢুকতে দেয়নি। যদিও রাত ৮টার দিকে আবারও ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি আসার পর আগুন নেভাতে আর বাধা দেননি ছাত্ররা।
জাতীয় পার্টির মহাসচিব মো. মুজিবুল হক গণমাধ্যমকে বলেন, তাঁরা আগামী শনিবার কেন্দ্রীয় কার্যালয় প্রাঙ্গণে সমাবেশ করতে পুলিশের কাছে অনুমতি চেয়েছেন। আজ জাতীয় পার্টির নেতা-কর্মীরা কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে উপস্থিত ছিলেন। সন্ধ্যার পরে শাহবাগ থেকে একটি মশাল নিয়ে একদল লোক কার্যালয়ে হামলা করে। তিনি বলেন, কর্মীদের প্রতিরোধে হামলাকারীরা মার খেয়ে পালিয়ে যায়। আধা ঘণ্টা পর সংঘবদ্ধ হয়ে ফিরে তারা কার্যালয় আগুন দেয়। আগুন নেভাতে ফায়ার সার্ভিস এসেছিল। তাদের আগুন নেভাতে দেওয়া হয়নি। এভাবে যদি একটি রাজনৈতিক দলের কার্যালয়ে হামলা হয়, তাহলে দেশে কীসের গণতন্ত্র, কীসের রাজনীতি।
এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে পুরো কাকরাইল ও পল্টন এলাকা ভীতিকর পরিবেশ সৃষ্টি হয়। বন্ধ করে দেওয়া হয় পল্টন-বিজয়নগর সড়ক।