সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদের ব্যক্তিগত মালিকানাধীন সাভানা ইকো রিসোর্ট ও ন্যাচারাল পার্কে সরকারি অর্থ ব্যয় করে পানির লাইন ও পয়ঃনিষ্কাশনে ড্রেনেজ নির্মাণসহ নানা অনিয়মের অভিযোগে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সোমবার (২০ জানুয়ারি) দুদক গোপালগঞ্জ কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. মশিউর রহমানের নেতৃত্বে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়।
এদিন ২০ শয্যার হাসপাতাল নির্মাণে অনিয়ম হওয়ায় স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরেও অভিযান চালানো হয়।
মশিউর রহমান বলেন, বেনজীরের মালিকানায় নির্মিত সাভানা ইকো রিসোর্ট ও ন্যাচারাল পার্কে সরকারি কয়েক লাখ টাকা ব্যয় করে পানির লাইন এবং পয়ঃ ও পানি নিষ্কাশনে তিন হাজার ১০৬ মিটার দৈর্ঘ্য চার ইঞ্চি প্লাস্টিক পানির পাইপ দিয়ে ড্রেনেজ নির্মাণ করা হয়েছে।
এতে ব্যয় হয়েছে ৪১ লাখ আট হাজার টাকা। এ ছাড়া বিভিন্ন গ্রামে টিউবওয়েল ও ল্যাট্রিন বিতরণ, পাবলিক টয়লেট নির্মাণ, পানির লাইন সরবরাহে বেশ অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। টিউবয়েল বিতরণে সরকার নির্ধারিত মূল্যের থেকে বেশ কয়েক গুণ টাকা উত্তোলনের অভিযোগের সত্যতা মিলেছে। তিনি আরো বলেন, কাশিয়ানী উপজেলার নিজামকান্দী ইউনিয়নে জেলার সিভিল সার্জনের অজ্ঞাতসারে ২০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতাল নির্মাণকাজ ২০১৯ সালে শুরু হয়।
অর্ধেক কাজ শেষ হয়নি। এ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ১৬ কোটি ১৮ লাখ ৭২ হাজার টাকা। যার মধ্যে বিল পরিশোধ করা হয়েছে আট কোটি ১২ লাখ ৯৭ হাজার টাকা। ২০১৮ সালের ৩ ডিসেম্বর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কেটিএমসি জয়েন্ট ভেঞ্চারকে কার্যাদেশ দেওয়া হলেও ইতোমধ্যে তিনবার সময় বৃদ্ধি করা হয়েছে।
ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানিয়ে তদন্তসহ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়ে তিনি বলেন, ঠিকাদার আলম ও ইঞ্জিনিয়াররা পরস্পর যোগসাজশে কাজ সমাপ্ত না করে মূল্য বৃদ্ধির দোহাই দিয়ে বারবার ব্যয় বৃদ্ধি করান। এতে সরকারের বিপুল আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। সিভিল সার্জন অফিস বা স্বাস্থ্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের না জানিয়ে স্বাস্থ্য প্রকৌশলের অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলী ও ঠিকাদাররা সরকারের বিপুল অর্থ আত্মসাৎ ও ক্ষতি করছেন।
গোপালগঞ্জ জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ফয়েজ আহমেদ বলেন, মোট পাইপ লাইন করা হয়েছে তিন হাজার ১৬০ মিটার। এর মধ্যে বেশ কিছু সংযোগ দেওয়া হয়েছে এলাকার বিভিন্ন পরিবারে মধ্যে।
আর ২৫০ মিটার লাইন করা হয়েছে সাভানা ইকো পার্কের মধ্যে। পাইপ লাইলের প্রতি মিটারের মূল্য ধরা ছিল এক হাজার ৩০০ টাকা। সেই হিসেবে সাভানা পার্কের মধ্যে ৩২ লাখ পাঁচ হাজার টাকার কাজ হয়েছে।