প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, দেশের প্রত্যেক জেলা ও উপজেলায় বাণিজ্য মেলা আয়োজন করা উচিত, যাতে তরুণ-তরুণীদের মধ্যে উদ্যোক্তা হওয়ার প্রতিযোগিতা সৃষ্টি হয়। তিনি দাবি করেন, এই ধরনের উদ্যোগ দেশের ব্যবসায়িক পরিবেশের উন্নতি ঘটাবে এবং নতুন উদ্যোক্তা তৈরি করবে।
বুধবার (১ জানুয়ারি) ঢাকার পূর্বাচলে বাংলাদেশ চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে মাসব্যাপী ২৯তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন। মেলা আয়োজনের মাধ্যমে তরুণদের ব্যবসায়িক দক্ষতা ও উদ্ভাবনশীলতা বৃদ্ধি পাবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
দেশব্যাপী উদ্যোক্তা সৃষ্টির লক্ষ্য:
অধ্যাপক ইউনূস জানান, উদ্যোক্তা সৃষ্টির জন্য সারা দেশের জেলা ও উপজেলায় প্রতিযোগিতা হবে এবং সেখান থেকে বাছাই করা উদ্যোক্তারা ঢাকা মেলায় অংশগ্রহণ করবেন। তিনি বলেন, "এখানে তরুণরা একে অপরকে দেখে শিখবে, বুঝবে এবং নতুন ধারণা নেবে।"
সরকারের সহায়তায় তরুণদের উৎসাহিত করা হবে:
উদ্যোক্তা হওয়ার ক্ষেত্রে টাকার অভাব কোনো বাধা নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, "বুদ্ধি থাকলে টাকা উপার্জন করা যায়।" এছাড়া, উপজেলা পর্যায় থেকে বাছাইকৃত তরুণদের সমস্ত খরচ সরকার বহন করবে, কারণ তারা দেশকে নেতৃত্ব দেবে।
যুব সমাজের শক্তি উন্মোচন ও বিশ্ব মঞ্চে উদ্ভাবন:
বাংলাদেশের তরুণ সমাজের শক্তি প্রসঙ্গে ড. ইউনূস বলেন, "আমরা একটি ১৭ কোটি মানুষের দেশ, যেখানে অধিকাংশ জনগণ তরুণ। এই শক্তিকে কাজে লাগিয়ে আমাদের দেশ উন্নতির পথে এগিয়ে যাবে।"
ঢাকা মেলায় তরুণদের জন্য বিশেষ সুবিধা:
বাণিজ্য মেলায় তরুণদের জন্য আলাদা প্যাভিলিয়ন স্থাপনের পরামর্শ দিয়েছেন অধ্যাপক ইউনূস। তরুণদের জন্য ২৫ বছর বয়সের নিচে অংশগ্রহণের শর্ত রাখা যেতে পারে, যাতে তারা নিজেদের মধ্যে শিখতে এবং শিখাতে পারে।
তরুণী উদ্যোক্তাদের ব্যবসার প্রশংসা:
তরুণী উদ্যোক্তাদের জন্য বিশেষ প্রশংসা করে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, "অনেক তরুণী ঘরে বসে ব্যবসা করছেন, যেমন শাড়ি বিক্রি, রান্না করে খাবার সরবরাহ ইত্যাদি।" তাদের উদ্যমকে স্বীকৃতি দেয়ার প্রয়োজনীয়তার উপর তিনি গুরুত্বারোপ করেন।
বিশ্বব্যাপী রপ্তানির সম্ভাবনা:
এছাড়া, রপ্তানি পণ্যের মান উন্নয়ন এবং সেবা প্রদানের সক্ষমতা বাড়ানোর জন্য সরকারের উদ্যোগের কথা উল্লেখ করেন।
ফার্নিচার পণ্যকে বর্ষপণ্য ঘোষণা:
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ফার্নিচার পণ্যকে বর্ষপণ্য হিসেবে ঘোষণা করা হয়। পাশাপাশি, বর্ষ উদ্যোক্তা ঘোষণা করার বিষয়ে তাঁর পরিকল্পনার কথা জানান ড. ইউনূস।
এবারও আয়োজন হবে তরুণদের রপ্তানি বাণিজ্যে উৎসাহিত করতে:
এই মেলায় তরুণদের জন্য একটি বিশেষ ইয়ুথ প্যাভিলিয়ন তৈরি করা হয়েছে, যেখানে তারা রপ্তানি বাণিজ্য সম্পর্কে জানতে পারবে এবং নিজেদের ব্যবসা বিশ্বমঞ্চে তুলে ধরতে পারবে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দেন আরও অনেকে:
অনুষ্ঠানে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব আব্দুর রহিম খান, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) ভাইস-চেয়ারম্যান মো. আনোয়ার হোসেনসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।