গাইবান্ধার হাট-বাজারগুলোতে শীতকালীন শাক-সবজির সরবরাহ বৃদ্ধি পাওয়ায় দাম অর্ধেকে নেমে এসেছে। এতে ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ের মুখে ফুটেছে স্বস্তির হাসি। খুচরা ব্যবসায়ী লাল মিয়া জানান, প্রচুর পরিমাণ শাক-সবজি বাজারে আসায় দাম কমেছে। ফলস্বরূপ বিক্রি বেড়েছে এবং লাভও ভালো হচ্ছে।
কৃষকের সাফল্যের গল্প:
গাইবান্ধার কৃষক আব্দুল কাফি সরকার বলেন, “এবার শীতে শিম, বেগুন ও আলু আবাদ করেছি। ইতোমধ্যে ফসল সংগ্রহ শুরু হয়েছে। উৎপাদন বৃদ্ধি পাওয়ায় বাজারে দাম কম থাকলেও লাভ হচ্ছে।”
জেলা কৃষি বিভাগের উপ-পরিচালক খোরশেদ আলম জানান, চলতি রবি মৌসুমে কৃষকদের মাঝে প্রণোদনা হিসেবে বীজ ও সার বিতরণ অব্যাহত রয়েছে। অধিক ফলন নিশ্চিত করতে কৃষকদের সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হচ্ছে।
বাজারের বর্তমান চিত্র:
সরেজমিনে দেখা গেছে, গাইবান্ধার পুরাতন বাজারসহ বিভিন্ন হাটে শীতকালীন সবজি বিক্রির ধুম লেগেছে। মানভেদে ফুলকপি ১০ টাকা, বাঁধাকপি ১৫ টাকা, বেগুন ১৫ টাকা, মূলা ১০ টাকা, শিম ২০ টাকা, আলু ৪৫ টাকা, শসা ৪০ টাকা, গাজর ৬০ টাকা, টমেটো ৮০ টাকা, পেঁপে ৩০ টাকা, পেঁয়াজ ৫০ টাকা, কাঁচামরিচ ৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
সবজি কিনতে আসা নজরুল ইসলাম বলেন, “গত সপ্তাহে ফুলকপির দাম ছিল ৪০ টাকা, এখন বিক্রি হচ্ছে ১০ টাকায়। আলু ছিল ৭৫ টাকা, এখন তা ৪৫ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। দামের এই পতনে ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে চলে এসেছে সবজি।”
অতীতের ক্ষতি কাটিয়ে উঠছে কৃষকরা:
জেলা কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, চলতি মৌসুমে গাইবান্ধার সাত উপজেলায় ৬ হাজার ৯৪৭ হেক্টর জমিতে শাক-সবজি এবং ১২ হাজার ৩৬ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। আলুর লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হলে উৎপাদন হবে প্রায় ২ লাখ ৫৪ হাজার মেট্রিকটন, যা জেলার বার্ষিক চাহিদার চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ।
গেল খরিপ মৌসুমে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে ফসলের কিছুটা ক্ষতি হয়েছিল। সেই ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে কৃষকরা শীতকালীন সবজি চাষে মনোযোগী হয়েছেন। মূলা, লাউ, শিম, কপি, বেগুন, গাজর, পালং শাক ও লাল শাকসহ বিভিন্ন সবজির চাষাবাদ শুরু করেছেন তারা।
ভোক্তাদের স্বস্তি:
সবজির দামে অর্ধেকের বেশি পতনে ভোক্তাদের মাঝে ফিরে এসেছে স্বস্তি। ক্রেতারা জানান, বর্তমানে সবজির দাম ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে থাকায় তারা প্রয়োজনীয় পরিমাণ কিনতে পারছেন।
উৎপাদন ও সরবরাহ বৃদ্ধির সুফল:
বাজারে শীতকালীন সবজির সরবরাহ বৃদ্ধি এবং কৃষি বিভাগের সহযোগিতার ফলে ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ে লাভবান হচ্ছেন। শাক-সবজির এই বাম্পার ফলন কৃষি নির্ভর গাইবান্ধার অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে আশা করা হচ্ছে।