ঘূর্ণিঝড় রিমালের তাণ্ডবে সুন্দরবনের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। অনেক বন্য প্রাণী ভেসে গেছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ঝড়ের কবলে পড়ে ৩৯টি হরিণের মরদেহ উদ্ধার করেছে বনরক্ষীরা। এ ছাড়া রিমেলের তাণ্ডবে বনের অভ্যন্তরে টহল ফাঁড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
লবণ পানি ঢুকে নষ্ট হয়েছে অন্তত ৮০টি মিষ্টি পানির পুকুর।
মঙ্গলবার (২৮ মে) দুপুরে খুলনা অঞ্চলের বন সংরক্ষক (সিএফ) মিহির কুমার দো এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
মিহির কুমার দো বলেন, রবিবার বিকেল থেকে একটানা ২০ ঘণ্টা ঘূর্ণিঝড় রিমালের তাণ্ডব ও জলোচ্ছ্বাসে সুন্দরবনের প্রাণপ্রকৃতির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। গাছপালার ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির পাশাপাশি বন বিভাগের বিভিন্ন বন অফিসসহ টহল বোট, টিনের চালা, জানালা-দরজা, সোলার প্যানেল ও অবকাঠামোর ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
এ সময় জলোচ্ছ্বাসের কবলে পড়ে কটকা অভয়াণ্যে অফিস ঘাটের জেটি ও পুকুর বঙ্গোপসাগর গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। দুবলা, কটকা, কোচিখালি, বগিসহ বিভিন্ন বন অফিসসহ ২৫টি টহল ফাঁড়ির রান্নাঘরসহ অবকাঠামোর টিনের চালা উড়ে গেছে।
সুন্দরনে অভ্যন্তরে মিঠা পানির পুকুরগুলোও জলোচ্ছ্বাসে লোনা পানিতে তলিয়ে গেছে। সুন্দরবনের ৮০টি মিঠা পানির উৎস পুকুরে ৮ থেকে ১০ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে লোনা পানিতে তলিয়ে যাওযায় বনকর্মীদের পাশাপাশি বাঘ, হরিণসহ বন্য প্রাণীরাও সুপেয় পানির সংকটে পড়েছে।
সুন্দরবনের বন্য প্রাণীরা অধিক উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে ভেসে গিয়ে মারা যাওয়ারও খবর মিলেছে। মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ৩৯টি মৃত হরিণ, একটি মৃত বন্য শূকর ও আহত ১৭টি হরিণ উদ্ধার করেছে বন বিভাগ।
আরো বন্য প্রাণী মারা যেতে পারে উল্লেখ করে বন কর্মকর্তা মিহির কুমার দো বলেন, সেসব মৃত প্রাণীর খোঁজে বনরক্ষীরা তৎপর রয়েছেন।
ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পূর্ব সুন্দরবনের একমাত্র করমজল বন্য প্রাণী প্রজনন ও পর্যটন কেন্দ্রের নানা অবকাঠামো। সেখানে দায়িত্বরত কর্মকর্তা হাওলাদার আজাদ কবির জানান, ঘূর্ণিঝড় রিমালের তাণ্ডবে এখানকার পর্যটক চলাচলের কাঠের পোল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ভেঙে তছনছ হয়েছে অসংখ্য গাছপালা। তবে পুরো সুন্দরবনের গাছপালাসহ কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা নিশ্চিত করে এখনই বলা সম্ভব নয়।