ঢাকা
খ্রিস্টাব্দ

সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে রাস্তায় শিক্ষার্থীরা

দৈনিক লাল সবুজ বাংলাদেশ


আপডেট : বুধবার, ০৯ অক্টোবর ২০২৪, ১১.১১ পূর্বাহ্ন


নিউজটি দেখেছেনঃ 1817875 জন

  • নিউজটি দেখেছেনঃ 1817875 জন
সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে রাস্তায় শিক্ষার্থীরা
ছবি : সংগৃহীত

রাজধানীর বাংলামোটর মোড়। যে মোড়ে যানজট লেগেই থাকে। এই মোড়ের পাশেই রয়েছে একটি যাত্রী ছাউনি। ছাউনি থাকলেও যাত্রীরা সেখানে যেতেন না। কারণ বাস চালকরা মোড়টির ওপরেই যাত্রী ওঠানামা করাতেন। এতেই অভ্যস্ত ছিলেন যাত্রীরাও। কিন্তু সেই চিত্রের পরিবর্তন ঘটিয়েছে একদল শিক্ষার্থী। যারা রাস্তায় শৃঙ্খলা ফেরাতে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলোতে অবস্থান নিয়ে ‘ট্রাফিক পুলিশের’ ভূমিকা পালন করছেন। শিক্ষার্থীদের এমন ভূমিকায় উচ্ছ্বসিত সবাই। 

 

রাস্তায় ট্রাফিকের কাজ করছে রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি এক সদস্য। ছবিটি বাংলামোটর মোড় থেকে তোলা 


ছাত্র-জনতার গণ-আন্দোলনে এক দফা দাবির মুখে গত সোমবার প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। সেদিন থেকেই রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলোতে ট্রাফিক পুলিশের উপস্থিতি নেই। ফলে রাজধানীর ট্রাফিক ব্যবস্থা ভেঙে পড়ে। তাই ওই রাতেই কিছু স্থানে রাস্তার শৃঙ্খলা ফেরাতে শিক্ষার্থীরা দাঁড়িয়ে যায়। গতকাল মঙ্গলবার যার বিস্তৃতি ঘটে। গতকাল ভোরবেলা থেকেই শিক্ষার্থীরা স্বতঃফূর্তভাবে বিভিন্ন মোড়ে দাঁড়িয়ে যায়। শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি সাধারন মানুষকেও একই কাজ করতে দেখা গেছে। শিক্ষার্থীরা রাস্তায় শৃঙ্খলা ফেরানোর কাজ অব্যাহত রেখেছেন। বুধবার (৭ আগস্ট) রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ মোড় ঘুরে এমনটি দেখা গেছে।


রাজধানীর বাংলামোটর মোড়ে যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে কাজ করছেন ১৮ জন স্বেচ্ছাসেবক। যাদের মধ্যে রেড ক্রিসেন্ট সদস্য রয়েছে ৪ জন। বাকীরা বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের শিক্ষার্থী। সকাল থেকেই যারা রোদ উপেক্ষা করে ট্রাফিক ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রনে কাজ করছে। তাদের এই কার্যক্রম দেখে অনেকেই পানি ও শুকনো খাবার দিয়ে যাচ্ছেন। আবার কিছু প্রতিষ্ঠান ক্যাপ ও ছাতা দিয়ে সহযোগিতা করছেন। মানুষের এমন সাড়া পেয়ে শিক্ষার্থীরা উৎসাহ সহকারে তাদের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।


তেমনি একজন শিক্ষার্থী মো. জহরুল ইসলাম। সোনারগাঁও বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকের এই শিক্ষার্থী দুপুর ১টা থেকে বাংলামোটর মোড়ে ট্রাফিকের কাজ করছেন। তার সঙ্গে কথা হয় এই প্রতিবেদকের। তিনি বলেন, ‘রাষ্ট্র সংস্কারের জন্য আমাদের এই আন্দোলন। দেশ যেভাবে স্বাধীনতার নতুন স্বাদ পেয়েছে তেমনিভাবে সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে আমাদের এই প্রচেষ্টা। আমরা মোড়গুলোতে গণপরিবহন দাঁড়াতে দিচ্ছি না। নির্দিষ্ট যাত্রী ছাউনিতে যাত্রী ও বাসগুলোকে দাঁড়াতে আমরা বাধ্য করছি। যাতে মোড়গুলোতে যানজট সৃষ্টি না হয়। যতদিন পর্যন্ত নতুন সরকার না আসবে ততদিন পর্যন্ত আমাদের এই কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।

 

ট্রাফিকের দায়িত্ব পালন করা শিক্ষার্থীর ক্যাপ দিচ্ছেন কয়েকজন। 

জহরুল ইসলামের মতো রেট ক্রিসেন্ট সোসাইটির ৪ জন সদস্যও সেচ্ছাসেবকের কাজ করছেন। তাদেরই একজন মো. জাহিম সরদার। ‍যিনি সকাল থেকেই ট্রাফিকের কাজ করছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা চাই রাস্তায় শৃঙ্খলা ফিরে আসুক। আমরা দেখি মোড়গুলোতে গণপরিবহনগুলো পাল্লা দিয়ে যাত্রী ওঠানামা করিয়ে থাকে। এতে অনেক সময় যাত্রীরা দুর্ঘটনার মধ্যে পড়েন। যাত্রীরা যাতে নিরাপদে গাড়ীতে উঠতে ও নামতে পারেন সেই কাজটি করার চেষ্টা আমরা করছি। আমরা নিশ্চিত করতে চাই যাত্রী ছাউনি ব্যতিত কোথাও গণপরিবহন দাঁড়াতে পারবে না। এই কাজটি নিশ্চিত হলে রাস্তার যানজট কিছুটা হলেও কমে যাবে।’


শিক্ষার্থীদের এমন কাজে উচ্ছ্বসিত সাধারন মানুষ। বিশেষ করে চালকরা বেশি খুশি। অন্যান্য সময় রাস্তায় বের হলেই ট্রাফিক পুলিশ বিভিন্ন ঝামেলা করতো। গত দুইদিন ধরে সেই ধরনের জটিলতায় পড়তে হয়নি। তাই শিক্ষার্থীদের কাজে আমরা অনেক খুশি।


মো. ইকরামুল ইসলাম নামের এক বাইক চালক  বলেন, ‘আগে বিভিন্ন মোড়ে ট্রাফিক পুলিশকে টাকা দিতে হতো। টাকা না দিলে বিভিন্ন হয়রানি করা হয়। কিন্তু শিক্ষার্থীরা গত কয়েক দিন যাবৎ যেভাবে কাজ করছে তা আমাদের মুগ্ধ করছে। আমরা চাই ট্রাফিক পুলিশ রাস্তায় ফিরে যেন শিক্ষার্থীদের মতই কাজ করে।’  


নিউজটি পোস্ট করেছেনঃ এলএসবিডি/হেনা

কমেন্ট বক্স
দৈনিক লাল সবুজ বাংলাদেশ



আপডেট : বুধবার, ০৯ অক্টোবর ২০২৪, ১১.১১ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ সংবাদ