জামায়াতে ইসলামী জুলাই আন্দোলনে শহীদ ও আহত-পঙ্গুত্ববরণকারীদের জাতীয় সম্পদ হিসেবেই মূল্যায়ন করে বলে উল্লেখ করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। তিনি বলেন, ‘জামায়াতে ইসলামী শহীদদের নিয়ে অন্যদের মতো করে না এবং করবে না। শহীদদের নিয়ে যারা রাজনীতি করে করুক। জামায়াতে ইসলামী শহীদ ও জীবন্ত শহীদ পরিবারের সদস্য।’
সোমবার জুলাই আন্দোলনে আহত, পঙ্গু, শহীদ পরিবারের সদস্য ও বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সম্মানে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আয়োজনে অনুষ্ঠিত ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
এসময় তিনি শহীদ পরিবারের বেদনা তুলে ধরে বলেন, ‘যে মা-বাবা সন্তান হারিয়েছেন, যে বোন স্বামী হারিয়েছেন, যে সন্তান পিতা-মাতা হারিয়েছে, তারা গত বছর রমজানে একত্রে সেহরি ও ইফতার করেছেন। এবছর সেই স্মৃতি মনে করে সেহরি ও ইফতার তৃপ্তিতে করতে পারে না। এই বেদনা সহ্য করার নয়।’ এসময় তিনি এবারের ঈদ শহীদ পরিবারের সদস্য ও আহত-পঙ্গুত্ব বরণকারীদের সঙ্গে পালনের ঘোষণা দেন।
জামায়াতের আমির বলেন, ‘শহীদদের নিয়ে প্রকাশিত শহীদ স্মরণিকা ঈদের পরপরই প্রত্যেক শহীদ পরিবারে পৌঁছানো হবে।’ বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমির মো. নূরুল ইসলাম বুলবুলের সভাপতিত্বে রাজধানীর লেডিস ক্লাব মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত ইফতার মাহফিলে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য মোবারক হোসেন বলেন, ‘যাদের রক্তের বিনিময়ে এই দেশ স্বাধীন হয়েছে, তাদেরকে নিয়ে এখনও পর্যন্ত কারও ভাবনা চোখে পড়েনি। একমাত্র জামায়াতে ইসলামী আমিরে জামায়াতের নির্দেশে প্রত্যেক শহীদ পরিবারকে ২ লাখ টাকা করে এবং আহতদের খুঁজে-খুঁজে চিকিৎসা ও পুনবার্সনের উদ্যোগ নিয়েছে। এর সাক্ষী উপস্থিত শহীদ পরিবারের সদস্য ও আহত-পঙ্গুত্ব বরণকারী ভাই-বোন।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমিরে জামায়াত বলেছেন, ১৯৫২, ১৯৬৯, ১৯৭১, ১৯৯০ সহ আমাদের সব আন্দোলন সংগ্রামের ইতিহাস বিকৃত হয়েছে।
২০২৪ এর ইতিহাস বিকৃত করা যাবে না। এজন্য শহীদদের স্মরণে ১০ খণ্ডে ২৫০০ পৃষ্ঠার মোড়ক উন্মোচন করা হয়েছে। এই বইতে শহীদদের পরিচয়, গণঅভ্যুত্থানে ভূমিকা ও শহীদ হওয়ার ঘটনা এবং স্থান সংরক্ষণ করা হয়েছে। এই গণঅভ্যুত্থানের ইতিহাস মুছে যেতে দেবে না জামায়াতে ইসলামী।’ তিনি উপস্থিত শহীদ পরিবারের সদস্য ও আহত-পঙ্গুত্ব বরণকারীদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘নতুন বাংলাদেশ আপনাদের। আপনারাই গণঅভ্যুত্থানের অর্জন ধরে রাখতে হবে।’
সভায় আরও বক্তব্য রাখেন বুয়েটের অধ্যাপক প্রকৌশলী ফখরুল ইসলাম, সাবেক সমাজ কল্যাণমন্ত্রী বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সাবেক সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মুজাহিদের ছেলে আলী আহম্মদ তহকীক প্রমুখ।বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরার সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমির আব্দুস সবুর ফকির প্রমুখ।