দেশের প্রখ্যাত ফৌজদারি আইন বিশেষজ্ঞ, সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী এবং জামায়াতে ইসলামীর সাবেক সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।

রবিবার (৪ মে) বিকেল সাড়ে ৪টায় রাজধানীর ধানমন্ডির ইবনে সিনা হাসপাতালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তার সহকর্মী অ্যাডভোকেট শিশির মনির ও অ্যাডভোকেট মুজাহিদুল ইসলাম শাহীন মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

ব্যারিস্টার রাজ্জাক দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থতায় ভুগছিলেন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ বিকেলে তিনি মারা যান। তার বয়স হয়েছিল ৮০ বছর।

প্রসঙ্গত, ২০১৩ সালের ১৮ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে জামায়াত নেতাদের মানবতাবিরোধী মামলায় আইনজীবী হিসেবে যুক্ত থাকার পর তিনি যুক্তরাজ্যে পাড়ি জমান। সেখানে অবস্থানকালে ২০১৯ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি তিনি জামায়াতে ইসলামী থেকে পদত্যাগ করেন। পরবর্তীতে ‘আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টি’-এর প্রধান উপদেষ্টা হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন, তবে ২০২৩ সালের ১৭ আগস্ট তিনি সেই পদ থেকেও পদত্যাগ করেন।

দীর্ঘ ১১ বছর যুক্তরাজ্যে অবস্থানের পর গত ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪ সালে তিনি দেশে ফিরে আসেন এবং পুনরায় সুপ্রিম কোর্টে আইন পেশায় যুক্ত হন। ৬ জানুয়ারি তাকে সংবর্ধনা জানায় সুপ্রিম কোর্টের জুনিয়র আইনজীবীরা।

ব্যারিস্টার রাজ্জাক জন্মগ্রহণ করেন ১৯৪৪ সালে সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলার মাথিউরা ইউনিয়নের শেখলাল গ্রামে। বিএ (অনার্স) ও এমএ ডিগ্রির পর ১৯৮০ সালে যুক্তরাজ্যের লিংকনস ইন থেকে ব্যারিস্টার ডিগ্রি অর্জন করেন। লন্ডনে কিছুদিন আইন পেশায় নিয়োজিত থেকে ১৯৮৬ সালে দেশে ফিরে আসেন এবং হাইকোর্ট ও পরে আপিল বিভাগে আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন।

মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন মামলা ও এ টি এম আজহারুল ইসলামের প্রধান আইনজীবীর দায়িত্বে ছিলেন।

তিনি স্ত্রী, দুই পুত্র এবং এক কন্যাসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। তার দুই ছেলে ব্যারিস্টার এহসান আবদুল্লাহ সিদ্দিকী ও ব্যারিস্টার ইমরান আবদুল্লাহ সিদ্দিকী সুপ্রিম কোর্টে আইন পেশায় যুক্ত আছেন।

ব্যারিস্টার রাজ্জাকের মৃত্যুতে দেশের আইন অঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।