News Link: https://dailylalsobujbd.com/news/2zF
১৯৯১ সালের ২৯ এপ্রিলের ভয়াল ঘূর্ণিঝড় ‘মেরি এন’-এর স্মরণে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হয় এক বিশেষ আলোকচিত্র প্রদর্শনী। এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, "ঘূর্ণিঝড়ের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে রক্ষা পেতে আমাদের দীর্ঘমেয়াদি প্রস্তুতি নিতে হবে। টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ এবং পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় ব্যাপক বৃক্ষরোপণ এখন সময়ের দাবি।" তিনি ঘোষণা দেন, নগরীর ৪১টি ওয়ার্ডে মোট ১০ লাখ গাছের চারা রোপণ করা হবে, যা পরিবেশ রক্ষা ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় সহায়ক ভূমিকা রাখবে।
ডা. শাহাদাত তার বক্তব্যে বলেন, “৯১ সালের সেই ঘূর্ণিঝড় এখনো আমাদের মনে গেঁথে আছে। আমি নিজে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নির্দেশে চিকিৎসা সেবা দিতে উপকূলীয় এলাকায় কাজ করেছি। হাজারো মানুষ ঘরবাড়ি হারিয়ে খোলা আকাশের নিচে ছিলো, খাদ্যের অভাবে হাহাকার করছিলো। আমরা বাঁশখালী, আনোয়ারা, গটেঙ্গা সহ বহু জায়গায় গিয়ে মানুষের করুণ পরিস্থিতি দেখেছি। সেই অভিজ্ঞতা আজও আমাকে নাড়া দেয়।” তিনি আরোও বলেন, “শুধু দুর্যোগ আসার পর তা মোকাবিলা করলেই হবে না, বরং আগেভাগেই প্রস্তুতি নিতে হবে। এজন্য নগরে আমরা বৃক্ষরোপণ কার্যক্রম জোরদার করব।”
চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সদস্য সচিব জাহিদুল করিম কচির সভাপতিত্বে আয়োজিত এই প্রদর্শনীতে মোট ৫০টি ছবি প্রদর্শিত হয়। প্রতিটি ছবিতেই উঠে এসেছে সেই দিনের বিভীষিকা ও মানবিক বিপর্যয়ের চিত্র।
প্রদর্শনীতে বিশেষ আকর্ষণ ছিল আলোকচিত্রী শিশির বড়ুয়ার ‘কাকঁডার ভোজ’ শিরোনামের একটি ছবি। ছবিটি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “মাত্র ৪৫ মিনিটে একটি মৃতদেহকে কিভাবে লাল কাকঁড়ার দল সম্পূর্ণভাবে নিঃশেষ করে দেয়, আমি তা ক্যামেরাবন্দি করেছি। সেই বীভৎস দৃশ্য আজও ভোলার নয়।” তিনি এসব দুর্লভ ছবিকে রাষ্ট্রীয়ভাবে সংরক্ষণের দাবি জানান।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মোহাম্মদ শাহনওয়াজ, সাধারণ সম্পাদক সালেহ নোমান, প্রদর্শনী উপকমিটির আহ্বায়ক গোলাম মাওলা মুরাদ, শিশির বড়ুয়া, রূপম চক্রবর্তী, হাসান মুকুল, জাহাঙ্গীর আলম, শাহাদাত চৌধুরী, এম এ হোসাইন ও সাইফি আনোয়ার আজিম প্রমুখ।
প্রদর্শনীটি শুধু ১৯৯১ সালের একটি ইতিহাসকে স্মরণ করিয়ে দেয়নি, বরং আগামীর জন্য প্রস্তুতির বার্তাও দিয়েছে।