News Link: https://dailylalsobujbd.com/news/218
চট্টগ্রামে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যা মামলায় গ্রেফতার ১১ আসামিকে আরও একটি মামলায় গ্রেফতার দেখানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। এরা হলেন, প্রেমনন্দন দাশ (১৯), রনব দাশ (২৪), বিধান দাশ (২৯), বিকাশ দাশ (২৪), রুমিত দাশ, রাজ কাপুর (৫৫), সামির দাশ (২৫), শিব কুমার দাশ (২৩), ওম দাশ (২৬), অজয় দাশ (৩০) এবং দেবী চরণ (৩৬)। তারা সকলেই নগরের কোতোয়ালী থানার বান্ডেল রোডের সেবক কলোনির বাসিন্দা। সোমবার সকাল ৯টার দিকে চট্টগ্রাম মেট্টোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের হাকিম মো. আবু বকর সিদ্দিক এ আদেশ দেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতের সহকারী সরকারি কৌঁসুলি এড. মো. রায়হানুল ওয়াজেদ চৌধুরী বলেন, চিন্ময় দাসের জামিন নামঞ্জুরকে কেন্দ্র করে আইনজীবী অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার ১১ আসামিকে আদালতে আনা হয়। তারা সবাই পুলিশের ওপর হামলা ও ভাঙচুরের অভিযোগে হওয়া আরেকটি মামলার এজাহারনামীয় আসামি। ওই মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করলে আদালত মঞ্জুর করে তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যার ঘটনায় এ পর্যন্ত মোট ২১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
আদালত সূত্র জানিয়েছে, এদিন নিরাপত্তার স্বার্থে সকাল সকাল ওই ১১ আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়। প্রিজন ভ্যান থেকে নামিয়ে তাদেরকে এজলাসে নেওয়ার সময় কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা লক্ষ করা গেছে। শুনানি শেষে একইভাবে তাদের আবার কারাগারে নেওয়া হয়।
এর আগে, গত ২৬ জানুয়ারি ওই ১১ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ওইদিন রাত সোয়া ৯টায় তাদের আদালতে হাজির করা হলে আদালত তাদেরকে আলিফ হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
গত ২৫ নভেম্বর চট্টগ্রামে ফেরার পথে শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে বহিস্কৃত ইসকন নেতা চিন্ময় ব্রক্ষ্মচারীকে তুলে নিয়ে যায় গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। পরদিন তাকে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) কাছে হস্তান্তর করা হয়। কোতোয়ালী থানায় হওয়া একটি রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে তোলা হলে জামিন নামঞ্জুর করেন আদালত। পরে তাকে কারাগারে পাঠানোর জন্য প্রিজনভ্যানে তোলা হয়। তখন চিন্ময়ের অনুসারীরা প্রিজন ভ্যান আটকে দেন। তারা এ সময় প্রায় তিন ঘণ্টা বিক্ষোভ করেন। একপর্যায়ে পুলিশ, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) লাঠিপেটা করে ও সাউন্ড গ্রেনেড ছুঁড়ে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এ সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের অনুসারীদের সংঘর্ষ হয়। পরে চট্টগ্রাম আদালত ভবনে প্রবেশপথের বিপরীতে রঙ্গম সিনেমা হলের গলিতে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়।
এ ঘটনায় তার বাবা বাদী হয়ে ৩১ জনের নাম উল্লেখ করে নগরের কোতোয়ালী থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। একইদিন আলিফের ভাই খানে আলম বাদী হয়ে ১১৬ জনকে এজাহারনামীয় করে বিস্ফোরণ আইনে আরেকটি মামলা দায়ের করেন। এর বাইরে আদালত এলাকায় সংঘর্ষ, ভাঙচুর ও পুলিশের কাজে বাধা দেওয়ার ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে তিনটি মামলা করে। এসব মামলায় আসামি করা হয় ৭৬ জনের নামসহ অজ্ঞাত ১ হাজার ৪০০ জনকে।