চট্টগ্রামের মিরসরাই পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডে জামায়াতে ইসলামী আয়োজিত কর্মী সমাবেশে হামলার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় সাংবাদিকসহ ১০ জন আহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে কয়েকজনকে স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) সন্ধ্যায় এস রহমান স্কুল এলাকায় জামায়াতের কর্মী সমাবেশ চলাকালে হামলার ঘটনা ঘটে। আহতদের মধ্যে দৈনিক ভোরের দর্পণের মিরসরাই প্রতিনিধি আশরাফ উদ্দিন, নুরুল আলম, শহিদুল ইসলাম, সাইফুল ইসলাম, কফিল উদ্দিন সহ আরও ৬ জামায়াত কর্মী রয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, জামায়াতের কর্মী সমাবেশে কয়েকজন স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মী এসে মাইক ছিনতাই করে অনুষ্ঠান শুরুর আগেই অভিযোগ তোলেন যে অনুমতি নেওয়া হয়নি। তার সঙ্গে জামায়াত নেতাকর্মীদের বাক-বিতণ্ডা শুরু হয়, পরে বিএনপির আরেক গ্রুপ এসে হামলা চালায়। হামলায় জামায়াতের নেতাকর্মী ও সংবাদ সংগ্রহের সময় সাংবাদিক আশরাফ উদ্দিনের উপর চওড়াও হয় হামলাকারীরা।
মিরসরাই জামায়াতের নেতারা অভিযোগ করেছেন, যুবদলের নেতাকর্মীরা লাঠি, হকিস্টিক নিয়ে এসে তাদের উপর আক্রমণ চালায় এবং অনুষ্ঠানস্থলে ভাঙচুর করে। হামলার শিকারদের মধ্যে জামায়াতের দুইটি মোটরসাইকেলসহ, চেয়ার-টেবিলও ভাঙচুর করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন।
মিরসরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক জোবায়ের হোসেন তারেক জানিয়েছেন, শুক্রবার সন্ধ্যায় সংঘর্ষের ঘটনায় কয়েকজন আহত হয়ে হাসপাতালে আসে, তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। তবে, গুরুতর আহত নুরুল আলমকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলেও জানান তিনি।
হামলা এবং পরিস্থিতি সম্পর্কে পুলিশ বিভাগের মন্তব্য:
মিরসরাই থানার পুলিশ পরিদর্শক দীপ্তেশ রায় জানান, ঘটনায় আহতরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন, তবে আরও তদন্তের জন্য লিখিত অভিযোগ আসলে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
গণমাধ্যমকে দেয়া জামায়াত ও বিএনপি নেতৃবৃন্দের পৃথক বক্তব্য :
এ ঘটনায় মিরসরাই উপজেলা জামায়াতের আমির নুরুল কবির দাবি করেছেন, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে জামায়াতের কর্মী সমাবেশে হামলা চালানো হয়েছে। তারা এই হামলার জন্য আইনি পদক্ষেপও নেবেন বলে জানিয়েছেন।
এদিকে, মিরসরাই উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব গাজী নিজাম উদ্দিন এই ঘটনার জন্য বিএনপিকে দায়ী না করে ব্যক্তিগত আক্রোশ থেকেই হামলা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন।
শনিবার (৩০ নভেম্বর) মিরসরাই থানার পুলিশ পরিদর্শক দীপ্তেশ রায় আরো জানান, এখন পর্যন্ত থানায় কোন অভিযোগ পাওয়া যায়নি। একটি মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এই হামলা এবং সংঘর্ষের ঘটনায় কাউকে এখনো আটক করা হয়নি বলেও জানান তিনি। ঘটনা তদন্তে কাজ করছে পুলিশ, মামলা হলে আরো প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা জোরদার করা হবে।