গত জুলাই ও আগস্টে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে গণহত্যার অভিযোগ উঠেছে, যার বিচার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। নতুন প্রসিকিউশন টিম ও তদন্ত সংস্থা গঠন করা হয়েছে এবং বিচারের জন্য আইন সংশোধন ও ভবন মেরামতের কাজ চলছে। আগামী সপ্তাহের মধ্যে ট্রাইব্যুনালের বিচারক নিয়োগ দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।
২০১০ সালে একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার জন্য প্রথম আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল প্রতিষ্ঠা হয়। ২০১৫ সালে দুইটি ট্রাইব্যুনাল একীভূত করে নতুন একটি ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়, যা এখন একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচার করছে।
জুলাই-আগস্টের আন্দোলনের পর আওয়ামী লীগের সরকারের পতনের পর সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তাঁর দলসহ বিভিন্ন ব্যক্তির বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ দায়ের শুরু হয়। এসব অভিযোগের বিচারের জন্য সরকার ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠন ও আইন সংশোধনের উদ্যোগ নিচ্ছে।
সূত্র অনুযায়ী, নতুন ট্রাইব্যুনাল তিন সদস্যের হবে, যার মধ্যে চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব নেবেন হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদার। অন্য দুই সদস্য হাইকোর্টের আরও একজন বিচারপতি এবং একজন আইনজীবী বা অধস্তন আদালতের বিচারক। মামলার সংখ্যা ও গুরুত্ব বিবেচনায় ট্রাইব্যুনালের সংখ্যা পরবর্তীতে বৃদ্ধি করা হতে পারে।
এছাড়া, বিভিন্ন আদালতে দায়ের হওয়া মামলা ট্রাইব্যুনালের অধীনে আনা হবে, এবং 'ক্রাইম সিন বেসড' পদ্ধতিতে বিচার পরিচালিত হবে। ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম জানান, এই বিচার প্রক্রিয়া আন্তর্জাতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ এবং রাষ্ট্র অপরাধীদের বিচার করতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।
বর্তমানে ২০১১ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে গুম হওয়া ১২ জনের অভিযোগ ট্রাইব্যুনালে দাখিল হয়েছে, এবং গত জুলাই থেকে আগস্টে গণহত্যার ঘটনায় ৫২টি অভিযোগ দায়ের হয়েছে।
এই বিচার প্রক্রিয়ার দিকে সারা বিশ্ব নজর রাখছে, এবং এর ফলাফল দেশের রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রেক্ষাপটে গভীর প্রভাব ফেলবে।