News Link: https://dailylalsobujbd.com/news/1d9
৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে পদত্যাগের পর দেশত্যাগ করেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা। বর্তমানে তিনি ভারতের নাগরিক। সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে শুরু হওয়া বিক্ষোভ দ্রুত সরকার পতনের আন্দোলনে রূপ নেয়, যার ফলস্বরূপ দেশে এক অভূতপূর্ব রাজনৈতিক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। আন্দোলনে দেড় হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়, এবং এর জন্য দেশের জনগণ প্রধানত শেখ হাসিনাকে দায়ী করে। এই প্রেক্ষিতে দেশে শতাধিক হত্যা মামলা তার বিরুদ্ধে দায়ের করা হয়েছে।
শেখ হাসিনার দেশত্যাগের পর আওয়ামী লীগ কার্যত নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছে। নতুন গঠিত অন্তর্বর্তী সরকার, যার প্রধান উপদেষ্টা নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস, সরকার এবং সমর্থকরা শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে বিচারের মুখোমুখী করতে চাচ্ছেন। তবে, আওয়ামী লীগের ভারতের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক এই মুহূর্তে শেখ হাসিনার দেশে ফেরার সম্ভাবনা কমিয়ে দিয়েছে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, বর্তমানে দেশে নেতৃত্বশূন্যতা এবং রাজনৈতিক অস্থিরতা শেখ হাসিনার ফিরে আসার সুযোগ তৈরি করতে পারে। অসলো বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক মোবাশ্বের হাসান জানান, এই অন্তর্বর্তী সরকারের ম্যান্ডেট নেই, এবং শেখ হাসিনা যদি চান, তবে তিনি এই দুর্বলতাকে কাজে লাগিয়ে ফিরতে পারবেন। উইলসন সেন্টারের পরিচালক মাইকেল কুগেলম্যানও এমনটি বিশ্বাস করেন।
সেন্টার ফর গভার্নেন্স স্টাডিজের নির্বাহী পরিচালক জিল্লুর রহমান মন্তব্য করেন যে আওয়ামী লীগ ভবিষ্যতে গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে থাকবে বলার কোনো ভিত্তি নেই। তবে সরকারের পতন হলে সবকিছু সম্ভব হয়ে যাবে। অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল শহীদুল হক মনে করেন, আওয়ামী লীগ প্রশাসনকে নিজেদের মতো করে সাজিয়েছে, তাই বর্তমান সরকার পুরো প্রশাসন পুনর্গঠন করতে পারবে না।
শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় বলেছিলেন, তার মা রাজনীতিতে ফিরবেন না, কিন্তু পরবর্তীতে তিনি তা প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। যদি জয় রাজনীতিতে যোগ দিতে চান, তবে তা হবে একটি চ্যালেঞ্জ, কারণ আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব শেখ হাসিনার হাতে কেন্দ্রীভূত। রাজনৈতিক বিশ্লেষক মীনাক্ষী গাঙ্গুলী মন্তব্য করেন, আওয়ামী লীগের গণতান্ত্রিক চর্চা বৃদ্ধির প্রয়োজন রয়েছে, নইলে বর্তমান সংকট থেকে উত্তরণ সম্ভব নয়।