News Link: https://dailylalsobujbd.com/news/160
ফরিদপুরে পাট নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন চাষিরা। পাটের ন্যায্যমূল্য পাচ্ছেন না তারা। এ বছর উৎপাদন খরচের চেয়ে কম দামে পাট বিক্রি করতে হচ্ছে। গুনতে হচ্ছে লোকসান। এদিকে ভরা মৌসুমেও হাট-বাজারগুলোতে তেমন পাট নেই।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এ বছর জেলা সদরসহ নয়টি উপজেলায় ৮৬ হাজার ৫শ’ ২৪ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে। যার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ২ লাখ ১৬ হাজার ৬১ মেট্রিক টন।
জানা গেছে, বিভিন্ন হাট-বাজার ও পাটের আড়তগুলোতে ভালো মানের এক মণ পাট সর্বোচ্চ ২ হাজার ৮০০ থেকে ৩ হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ বছর প্রখর খরার কারণে পাট গাছ বড় ও মোটা হতে পারেনি। এতে পাটের আশ কম হওয়ায় ফলনও অনেক কম হয়েছে। এছাড়া সার, বীজ, তেল, কীটনাশক ও মজুরির খরচ বেড়েছে কিন্তু এই দামে পাট বিক্রি করে লোকসানের মুখে পড়েছেন চাষিরা।
জেলার বিভিন্ন পাটের হাট-বাজার ঘুরে দেখা যায়, পাট বেচাকেনায় মন্দাভাব। অথচ এ মৌসুমের সময় পাট বাজার থাকতো রমরমা। পাট বিক্রি করতে কেউ ভ্যানে করে, আবার কেউ মাথায় করে বাজারে এনেছেন। তবে তাদের সংখ্যা কম। এ অঞ্চলে পাটের গুণগত মান ভালো হওয়ার পরও ন্যায্যমূল্য না পাওয়ায় হতাশ চাষিরা।
বোয়ালমারী উপজেলার সাতৈর বাজারে পাট বিক্রি করতে আসা স্থানীয় কৃষক আব্দুল আলিম জানান, প্রতি বছরের মতো এবারও লোকসানের শঙ্কা নিয়েই নিজেদের সবটুকু জমিতে পাট বুনেছেন তারা। এবার পুরো বর্ষাকাল ছিল অনাবৃষ্টি। সে সময় ডিজেল পুড়িয়ে ক্ষেতে সেচ দিতে হয়েছে। যার কারণে খরচ বেড়েছে। ফলন মোটামুটি হলেও বাজারে পাটের দাম নেই।
সালথা উপজেলার পাট চাষি আকতার হোসেন বলেন, এ বছর পাট কাটার পর আশপাশের খাল-বিল ও নালায় পানি না থাকায় জাগ দিতে বেশ কষ্ট করতে হয়েছে। মাথায় করে, ভ্যানে করে দূরে নিয়ে পাট জাগ দিতে হয়েছে। পাট গাছের আঁটি ও জাগ দেওয়ার পর শ্রমিক দিয়ে আঁশ ছাড়ানো ও শুকনোর জন্য যে টাকা খরচ হয়েছে, সেটা ধান বা মৌসুমের অন্য যেকোনো ফসলের জন্য করলে তারা অনেক লাভবান হতেন।
সহস্রাইল বাজারে পাট বিক্রি করতে আসা সাধন বিশ্বাস বলেন, এবার খরচ বেশি হয়েছে। ফলন তেমন ভালো হয়নি। এখন বাজারে যে দরে পাট বিক্রি হচ্ছে, এতে লোকসান হচ্ছে। লাভ তো দূরে থাক খরচই উঠছে না। দাম না বাড়লে চরম আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে হবে।