News Link: https://dailylalsobujbd.com/news/KP
গোলান মরুভূমিতে রকেট হামলায় প্রাণহানির জেরে লেবাননের হিজবুল্লাহ গোষ্ঠীর সঙ্গে ইসরায়েলের সর্বাত্মক যুদ্ধের আশঙ্কা তীব্র হয়েছে। ইতোমধ্যে ইরানপন্থি গোষ্ঠীটি যুদ্ধের প্রস্তুতি নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। এমন উত্তেজনাকর পরিস্থিতিতেও লেবাননের সমুদ্র সৈকতে মানুষের ভিড় রয়েছে। খবর গার্ডিয়ানের।
শনিবারের ওই রকেট হামলায় ইসরায়েলে ১২ জন নিহত হয়েছে। ইসরায়েলের পক্ষ থেকে এই হামলার জন্য হিজবুল্লাহকে দায়ী করা হয়েছে। তবে গোষ্ঠীটি এই হামলার দায় অস্বীকার করেছে। এর জবাবে রবিবার সীমিত আকারে লেবাননের ভূখণ্ডে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।
লেবাননের তায়রে সমুদ্র সৈকতে মাহা ম্রাদ ইসরায়েলের দিকে আঙ্গুল তুলে বলেছেন, এক ঘণ্টা ধরে আমরা সাঁতার কাটছি। তারা (ইসরায়েল) ক্ষেপণাস্ত্র বা কিছু নিক্ষেপ করেছে। কিন্তু আমরা আতঙ্কিত নই। আমাদের মনে হচ্ছে, একটি হামলা হয়েছে। তবে আমরা সাঁতার চালিয়ে যাচ্ছিলাম।
এই সৈকত থেকে ২০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত লেবাননের একটি গ্রামে বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এটি ছিল ইসরায়েল ও হিজবুল্লার মধ্যে চলমান ১০ মাসের পাল্টাপাল্টি আক্রমণের সর্বশেষ ঘটনা।
এখন গ্রীষ্মকাল। লেবাননের পর্যটন মওসুমের সেরা সময়। ইসরায়েলের সঙ্গে উত্তেজনার চরমে। তবে যুদ্ধবিধ্বস্ত ও উৎসবপ্রিয় দেশের সৈকতে বিপরীত চিত্র।
বিচ ক্লাব ক্লাউড ৫৯-এর মালিক ডালিয়া ফারান জানান, অনেক মানুষ দক্ষিণ অঞ্চল এড়িয়ে চলছেন। তবে পুরোপুরি নয়। কিছু মানুষ এখন সপ্তাহে একবার আসার পরিবর্তে দুই সপ্তাহ পর বা এক মাসে একবার আসছেন।
ফারান আরও বলেছেন, কয়েক কিলোমিটার দূরে ধ্বংসপ্রাপ্ত, পরিত্যক্ত সীমান্ত গ্রামগুলোর কাছাকাছি সৈকতে উপভোগ করা অদ্ভুত। এমনটি করতে শুরুতে কিছু সময় লাগে। কিন্তু কিছু ভালো খাবার খেয়ে, বিয়ার বা জুস পান করার পর সাঁতার কাটতে যাচ্ছে মানুষ। এতে সমুদ্র মানুষের চিন্তা ও উদ্বেগ কিছুটা দূর হচ্ছে।
ফারান বলেন, গাজায় চলমান হত্যাযজ্ঞ আমাদের খুব পীড়া দেয়। খুব কাছাকাছি গণহত্যা ঘটছে। মনস্তাত্ত্বিকভাবে, এটি আনন্দ-উল্লাস করার সময় নয়।
সৈকতে পানীয় পান ও বিচ টেনিস খেলায় মগ্ন মানুষদের ইঙ্গিত করে ম্রাদ বলেন, হিজবুল্লাহ এই জীবনযাপনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। আমি তাদের (হিজবুল্লাহ) জীবনযাপন ও মনোভাবের সঙ্গে তাল মিলাতে পারি না। তবে আমি বিশ্বাস করি তারা আমাদের রক্ষা করবে, এই ভূমি রক্ষা করবে, কারণ তারা বিদেশি নয়। তারা নিজেদের বাড়ি, নিজদের ভূমি, নিজেদের দেশ রক্ষা করছে।
অক্টোবরের পর থেকে ৭ হাজারের বেশি ইসরায়েলি রকেট ও ক্ষেপণাস্ত্র লেবাননে আঘাত হেনেছে। কিন্তু বৈরুতের জনজীবন সচল রয়েছে। দেশটির পর্যটন সংস্থা জানায়, লেবাননের প্রবাসীরা গ্রীষ্মকালে দেশে ফিরে আসা বন্ধ করেনি। সৈকত শহরগুলোতে প্রফুল্লতা রয়েছে।
যানজটে আটকে থাকা গাড়িগুলো থেকে যুদ্ধবিরোধী বিলবোর্ড চোখে পড়ে। ধারণা করা হয়, উপসাগরীয় ব্যবসায়ীরা এসবে অর্থায়ন করেছেন। বিলবোর্ডে শোকাহত পরিবার ও লেখা রয়েছে: যথেষ্ট হয়েছে। আমরা ক্লান্ত। লেবানন যুদ্ধ চায় না।
এর আড়ালে নীরবে যুদ্ধের প্রস্তুতিও চলমান রয়েছে। বৈরুতের রফিক হারিরি বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতাল থেকে ওয়াহিদা ঘালায়িনি গাজার সংবাদ প্রতিবেদনগুলো গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন এবং মাঝে মাঝে ফোন দিয়ে ছবি তোলেন।
তিনি বলেন, আমরা তাদের হাসপাতালের জরুরি কক্ষগুলো দেখছি আমাদের প্রস্তুতির জন্য। এমন পরিস্থিতি খুব সহজ নয়। তাই আমরা সেই প্রশিক্ষণ দিয়েছি।